এবার হরতাল-অবরোধের পথে বিএনপি!

জাহিদ বিপ্লব, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫:২২ | প্রকাশিত : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:৩১

চলমান সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে এতদিন অহিংস কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপি। হরতাল-অবরোধের মতো কঠিন পথেও হাঁটেনি দলটি। তবে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এবার হার্ড লাইনে যাচ্ছে বিএনপি। হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামতে যাচ্ছে। যার ইঙ্গিত ইতোমধ্যেই দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও দিয়েছেন।

চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে ৩৬টির বেশি রাজনৈতিক দল। প্রায় এক বছর যুগপৎ ধারায় আন্দোলন করছে তারা। দীর্ঘদিন সমাবেশ, পদযাত্রা, রোডমার্চ, মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি, বিক্ষোভ সমাবেশ, সভা-সেমিনারের মতো নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল বিরোধী দলের আন্দোলন।

বছরব্যাপী রাজপথে সক্রিয় থেকে গত ১২ জুলাই সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এরই মধ্যে একদফা দাবিতে মহাসমাবেশ, রাজধানীর প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচিসহ বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করে দলটি। অক্টোবরে আন্দোলনের চূড়ান্ত ফসল ঘরে তুলতে ইতিমধ্যে ছক তৈরি করেছে বিএনপি। এক দফার আন্দোলন শুরুর দিকে হরতাল-অবরোধের দিকে না যাওয়ার কথা বললেও বিএনপি এখন এ ধরনের কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ঢাকা টাইমসকে জানান দলটির একাধিক শীর্ষনেতা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ঢাকা টাইমসকে বলেন, আমরা কখনও হরতাল-অবরোধ দেব না, এটি বলিনি। আন্দোলন সার্থক করতে নেতাকর্মী ও জনগণের চাহিদা অনুযায়ী আমরা যেকোনো ধরনের কর্মসূচি দিতে পারি। তিনি বলেন, আমরা জ্বালাও-পোড়াওয়ে বিশ্বাস করি না। আগুন সন্ত্রাস করে আওয়ামী লীগ, আর দোষ চাপায় বিএনপির ওপর। এবার এ বিষয়ে আমরা সতর্ক আছি।

ইতিমধ্যে বিএনপি তাদের আন্দোলনের গতি বাড়াতে লাগাতার সমাবেশ ও রোডমার্চের ঘোষণা দিয়েছে। নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার আগেই বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকার গঠনে বিএনপি তাদের আন্দোলনের লক্ষ্য অর্জন করতে চায়।

এদিকে আগামী অক্টোবর মাস থেকে চূড়ান্ত আন্দোলনে যাওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে শুরু করেছে দলটি। একেবারে তৃণমূল থেকে সব পর্যায়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতে কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে।

সরকার পতনের এক দফা দাবিতে টানা ১৭ দিনের কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে এই কর্মসূচি। চলবে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত। কর্মসূচির প্রথম দিন ১৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা জেলার জিনজিরা এবং গাজীপুরের টঙ্গীতে সমাবেশ করে দলটি। ২১ সেপ্টেম্বর ভৈরব-সিলেটে রোডমার্চ কর্মসূচি করেছে। ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকার দুই মহানগরে সমাবেশ।

২৩ সেপ্টেম্বর বৃহত্তর বরিশাল-পটুয়াখালী রোডমার্চ। ২৪ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানোর দাবিতে দেশের সব জেলা এবং মহানগরে প্রতিবাদ সমাবেশ। ২৫ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগরের নয়াবাজার এবং আমীনবাজারে সমাবেশ। ২৬ সেপ্টেম্বর খুলনা বিভাগে রোডমার্চ। ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর এবং নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় জনসমাবেশ। ২৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে ঢাকায় মহিলা সমাবেশ। ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকায় শ্রমজীবী কনভেনশন।

১ অক্টোবর ময়মনসিংহ ও কিশোরগঞ্জ জেলায় রোডমার্চ। ২ অক্টোবর ঢাকায় কৃষক সমাবেশ। ৩ অক্টোবর ফরিদপুর বিভাগে রোডমার্চ এবং সমাবেশ। ৪ অক্টোবর ঢাকায় পেশাজীবী কনভেনশন এবং ৫ অক্টোবর কুমিল্লা, ফেনী, মিরসরাই ও চট্টগ্রামে রোডমার্চ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না বলে ঢাকা টাইমসকে জানান। তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন শারীরিক অসুস্থ থাকায় গত দুই মাস দলের স্থায়ী কমিটির সভায় যোগ দিতে পারিনি, শুধু লাস্ট (সবশেষ) সভায় উপস্থিত ছিলাম। তাই এ বিষয়ে কিছু আলোচনা হয়েছে কি না তাও জানি না।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ঢাকা টাইমসকে বলেন, সরকারের পদত্যাগ, খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার দাবি, গণমিছিল, সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিলের মত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসছি। এতে লাখো জনতা উপস্থিত হয়ে আমাদের দাবির প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে। এরপরও যদি সরকার আমাদের দাবি মেনে না নেয়, সেক্ষেত্রে হরতাল-অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি দিয়েই আমাদের দাবি আদায় করতে হবে।

দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ঢাকা টাইমসকে বলেন, এ সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে সামনে যে ধরনের কর্মসূচি দেওয়া দরকার বিএনপি ও সমমনা জোটগুলো তাই দেবে। হরতাল-অবরোধসহ যেকোনো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে এবং সেসব কঠিন কর্মসূচির মুখোমুখি সরকারকে হতে হবে।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক বলেন, কর্মসূচির বিষয়টি দলের হাইকমান্ড দেখবে। তবে জনগণ চায় কঠোর আন্দোলন। আর দলের যেকোনো কঠোর কর্মসূচি পালন করতে আমরা নেতাকর্মীরা প্রস্তুত। এবার আর পিছনে ফেরার সময় নেই। বিজয়ের পতাকা হাতে নিয়েই ঘরে ফিরব ইনশাল্লাহ।

(ঢাকাটাইমস/২৩সেপ্টেম্বর/জেবি/আরআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :