কী কারণে কেফিয়্যাহ ব্যবহৃত হয়?

ঢাকা টাইমস ডেস্ক
 | প্রকাশিত : ১১ নভেম্বর ২০২৩, ১৮:০৭

বিশ্বের অনেক দেশেই মাথা ঢাকার জন্য বিভিন্ন ধরনের পরিধেয় কাপড় ব্যবহৃত হয়। কিন্তু ফিলিস্তিনের ‘কেফিয়্যাহর’ (কালো ডোরাযুক্ত সাদা রুমাল) মতো জনপ্রিয় আর কোনোটি হতে পারেনি। বিশ্বের কোটি কোটি সাধারণ মানুষের পাশাপাশি কেফিয়্যাহ পরতে দেখা গেছে নেলসন ম্যান্ডেলা, ফিদেল ক্যাস্ট্রো, ম্যারাডোনা, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো থেকে শুরু করে হালের জনপ্রিয় মডেল জিজি হাদিদ এবং বেলা হাদিদকে।

‘কেফিয়্যাহ’ হচ্ছে একটি চারকোনা কাপড়, যা প্রধানত শাম অঞ্চলের মানুষরা মাথায় পরিধান করে। এই অঞ্চলের বাইরে উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোতেও অবশ্য মানুষ মাথা ঢাকার জন্য চারকোনা কাপড় ব্যবহার করে, কিন্তু রং এবং নকশার ভিন্নতার ওপর ভিত্তি করে সেগুলো ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। প্রধানত ফিলিস্তিন, সিরিয়া, জর্ডানসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যবহৃত সাদা-কালো রঙের চেকের নকশার চৌকোনা কাপড়গুলোই ‘কেফিয়্যাহ’ নামে পরিচিত।

‘কেফিয়্যাহ’ শব্দের উৎপত্তি নিয়ে ভিন্নমত আছে। ধারণা করা হয়, ‘কেফিয়্যাহ’র আরবি ‘কুফিয়্যাহ’ শব্দটি এসেছে ফোরাত নদীর তীরে অবস্থিত ইরাকের ‘কুফা’ নগরীর নাম থেকে। শহরের নাম অনুসারে কাপড়ের নামকরণ খুব একটা বিরল না। মসুল থেকে মসলিন, আলেপ্পো থেকে আলেপাইন, বাগদাদ থেকে বালদাচিনের মতোই তাই কুফা থেকে কুফিয়্যাহর উৎপত্তির ব্যাখ্যাটি গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে, শক্তিশালী কোনো প্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও। ঠিক কবে থেকে কুফাবাসী বা লেভান্তবাসী ‘কেফিয়্যাহ’ পরিধান করে আসছে, সে ব্যাপারে অবশ্য নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায় না। আজ থেকে পাঁচ হাজার বছর আগে সুমেরীয় এবং ব্যাবিলনীয় সভ্যতার শাসকরা সম্মানের প্রতীক হিসেবে মাথা ঢাকার জন্য ‘কেফিয়্যাহ’র মতো কাপড় ব্যবহার করতেন বলে জানা যায়। পরে অবশ্য কৃষক এবং বেদুইনরা গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপ থেকে মাথাকে রক্ষার জন্য এই পোশাককে আপন করে নেয়।

সৌদি আরব, কুয়েত, কাতারসহ উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোতে যে শুধু সাদা রঙের চারকোনা কাপড় মাথায় দেওয়া হয়, তাকে বলা হয় ঘুতরা। অন্যদিকে সাদা-লাল চেকেরর মাথার কাপড়, যার ব্যবহার প্রধানত সৌদি আরব এবং জর্ডানে দেখা যায়, তাকে বলা হয় শেমাগ। ঘুতরা এবং শেমাগকেও অনেক সময় তাদের সাধারণ নাম ‘কেফিয়্যাহ’ হিসেবে অভিহিত করা হয়।

ফিলিস্তিনে সাদা-কালো ‘কেফিয়্যাহ’র পাশাপাশি লাল-সাদা ও সবুজ রঙের ‘কেফিয়্যাহ’ পরতে দেখা যায়। ‘কেফিয়্যাহ’ মূলত ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষের মস্তকাবরণ, যা সময়ের সঙ্গে পরিণত হয়েছে প্রতিরোধের প্রতীকে। এভাবেই দিন দিন ‘কেফিয়্যাহ’র জনপ্রিয়তা হ্রাস না পেয়ে বরং সময়ের সঙ্গে আরও বেড়েছে। পশ্চিমা যুবক-যুবতীদেরও এখন ফ্যাশনের অনুষঙ্গ হিসেবে ‘কেফিয়্যাহ’ পরিধান করতে দেখা যায়।

(ঢাকাটাইমস/১১নভেম্বর/এ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

ফিচার এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :