শ্রদ্ধার ফুল নিয়ে সব পথ মিশে গেছে সাভারের স্মৃতিসৌধে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৫:০৯

মহান বিজয় দিবসে হাজারো মানুষ শনিবার সকাল থেকে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে আসছেন। সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা-ভালোবাসার ফুলে ভরে উঠেছে স্মৃতিসৌধের বেদি। পরাধীনতার শেকল উপরে ফেলে জীবন দিয়ে যারা স্বাধীনতা এনেছেন, জাতির সেই বীর সন্তানদের বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে সব পথ যেন মিশে গেছে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে। বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর কৃতজ্ঞতায় জাতি স্মরণ করেছে সব শহীদকে।

১৯৭১ সালের এই দিনে বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী হাতের অস্ত্র ফেলে মাথা নিচু করে স্বাক্ষর করেছিল পরাজয়ের সনদে। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই বিজয়ের দিনে বেদনাও বাজে বাঙালির বুকে।

স্মৃতিসৌধে আসাদের পরনে পতাকার রং লাল-সবুজের পোশাক। বাবা-মায়েরা ছোট ছেলেমেয়েকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন বিজয়ের উৎসবে অংশ নিতে। শ্রদ্ধা-ভালোবাসার ফুলে ভরে উঠেছে স্মৃতিসৌধের বেদি। বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষকে মুঠোফোনে ছবি তুলতে দেখা যায়। শিশুদের মাথায় ছিল পতাকা ও মানচিত্র আঁকা ফিতা, হাতে ছোট আকারের জাতীয় পতাকা।

সকাল ৯টার দিকে দীর্ঘ পতাকা নিয়ে গাজীপুর জেলার রাজেন্দ্রপুরের ইকবাল সিদ্দিকী কলেজের প্রায় চার শতাধিক শিক্ষার্থী স্মৃতিসৌধে আসেন শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে।

এর আগে সকাল সাড়ে ছয়টায় প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর্ব শুরু হয়। তারা কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় তিন বাহিনীর সুসজ্জিত একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর। এরপর শ্রদ্ধা জানান জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলের নেতাদের নিয়ে শহীদবেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। এ সময় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও কূটনীতিকেরা স্মৃতিসৌধ এলাকা ত্যাগ করার পর স্মৃতিসৌধ সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এরপর শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ঢল নামে। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শ্রমজীবী ও পেশাজীবী সংগঠন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

সকাল থেকেই স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেস ক্লাব ও সামাজিক সংগঠনসহ সব বয়সী মানুষকে স্মৃতিসৌধের বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে দেখা গেছে।

এছাড়া আওয়ামী লীগ, বিএনপি, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, গণফোরাম, জাসদ ও বাম দলসহ নানা রাজনৈতিক দল বীর শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

ভোরে থেকেই স্মৃতিসৌধে ভিড় করতে থাকে মানুষ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে এই ভিড়। এসেছিলেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারাও। বিজয় দিবসের আনন্দ ও উচ্ছ্বাসে স্মৃতিসৌধ এলাকাসহ পরিণত হয় উৎসবের নগরীতে।

শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানাতে আসা সাভারের বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুল রশিদ বলেন, আমি আমার সহযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানিয়েছি। আমি স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক হয়ে বেঁচে আছি। কিন্তু আমার সহযোদ্ধারা এই স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে জীবন দিয়েছেন। তারা দেখে যেতে পারেননি স্বাধীনতা। আজ তারা সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধায় সিক্ত। এটাও আমার কাছে বড় পাওয়া।

এদিকে দিনটি উপলক্ষে ঢাকা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বাড়ানো হয়েছে নজরদারি।

(ঢাকাটাইমস/১৬ডিসেম্বর/পিএস/আরআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

সব অনিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধ হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

সব বাধা অতিক্রম করে জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি: প্রধানমন্ত্রী

দেশে ১৩ শতাংশ মানুষ চোখের গ্লুকোমা সমস্যায় ভুগছে

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আইওএমের কার্যকর ভূমিকা চায় বাংলাদেশ

সুন্দরবনের আগুন পুরোপুরি নিভেছে: পরিবেশ মন্ত্রণালয়

জাহাজে হজযাত্রী পরিবহনের বিষয়টি ‘ইনকারেজ’ করছে না সৌদি: ধর্মমন্ত্রী

জিসিসির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের নবদিগন্ত উন্মোচন

আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তি নিয়ে আশাবাদী সরকার

জনগণকে নিরপেক্ষভাবে সেবা দিতে পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ আইজিপির

রাষ্ট্রপতির কাছে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ খচিত নতুন ‘স্মার্ট এনআইডি’ হস্তান্তর

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :