আনসার সদস্য হত্যাকারী শুক্কুর আলীকে গ্রেপ্তার বিষয়ে যা জানালো র‌্যাব

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫:১৭ | প্রকাশিত : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৪:৫২

আনসার সদস্যকে গুলি করে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও পুলিশ সদস্যকে হত্যাচেষ্টার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শুক্কুর আলী ওরফে সোহেলকে সাভার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১০।

গ্রেপ্তারের বিষয়ে সোমবার দুপুরে কারওরান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানিয়েছেন র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, ২০০২ সালের ১২ মার্চ রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শ্যামলী এলাকায় ছিনতাইকারীদের গুলিতে কর্তব্যরত অবস্থায় ফজলুল হক নামের একজন আনসার সদস্য এবং একজন পুলিশ সদস্য গুরুতর জখম হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক আনসার সদস্য ফজলুল হককে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল আকমান হোসেন বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় শুক্কুর আলী ওরফে সোহেলসহ তিন জনের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়। পরে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেন। তবে শুক্কুর আলীসহ আসামিরা জামিনে মুক্ত হয়ে পুনরায় আত্মগোপনে চলে যায়। এ মামলার তদন্ত শেষে ২০০৩ সালের ৩১ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। আদালত ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩ জন আসামিকেই মৃত্যুদণ্ড দেন।

একই মামলায় কনস্টেবল আবদুল জলিল ফরাজীকে হত্যাচেষ্টার দায়ে আসামি শুক্কুর আলীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

মামলার রায়ের পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে র‌্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রবিবার রাতে র‌্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর সাভার এলাকায় অভিযান চালিয়ে শুক্কুর আলীকে গ্রেপ্তার করে।

র‍্যাব জানায়, হত্যাকাণ্ডের দিন দুপুরে শুক্কুর আলী তার অপর দুই সহযোগীকে নিয়ে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে মোহাম্মদপুরের শ্যামলী এলাকায় ‘দূর দূরান্ত’ নামক একটি বাস কাউন্টারের সামনে অবস্থান করে। এরপর শুক্কুর আলী ও তার সহযোগীরা মিলে অজ্ঞাত একজন ভিকটিমের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। তখন এলাকায় কর্তব্যরত পুলিশ কনস্টেবল আকমান হোসেন, কনস্টেবল আব্দুল জলিল ফরাজী ও আনসার সদস্য ফজলুল হক দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে শুক্কুর আলীসহ ৩ জনকে আটকের চেষ্টা করলে শুক্কুর ও তার অপর সহযোগীরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপর এলোপাতাড়ি গুলি করে। এতে আনসার সদস্য ফজলুল হক গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন এবং একজন পুলিশ সদস্য দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখম হন। এসময় অপর পুলিশ সদস্য পাল্টা গুলি করলে শুক্কুর আলী ও তার অন্য সহযোগীরা পালিয়ে যায়।

র‌্যাব জানিয়েছে, শুক্কুর আলী ১০ বছর বয়স থেকেই বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। পরে সে রাজধানীর মোহাম্মদপুরসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই, ডাকাতি, হত্যা, অপহরণ ও মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতো।

গ্রেপ্তারকৃত শুক্কুর আলী চট্টগ্রামসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় গ্রেপ্তার এড়ানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ছদ্মবেশ ধারণ ও নাম পরিবর্তন করে কিছুদিন পর পর অবস্থান পরিবর্তন করতো।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আওর জানিয়েছেন, শুক্কুর আলী ইতিপূর্বে মাদক সংক্রান্ত মামলায় প্রায় ৪ বছর, অস্ত্র মামলায় প্রায় ৫ বছর ও অপহরণসহ বিভিন্ন মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেছে। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, ডাকাতি ও মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধে ১৫টির বেশি মামলা রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১২ফেব্রুয়ারি/এইচএম/এফএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অপরাধ ও দুর্নীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :