ইরানে চলছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ভোটার উপস্থিতি খুবই কম
মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম বৃহৎ ও প্রভাবশালী ইসলামি রাষ্ট্র ইরানে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল আটটায় ভোটগ্রহণ শুরু হয় এবং সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত তা চলবে। তবে এ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি খুবই কম।
দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি রাজধানী তেহরানে ভোট দিয়েছেন, তিনিই এ নির্বাচনের প্রথম ভোটটি দেন।
ভোট দেওয়ার পর রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ভাষণে খামেনি বলেন, ‘ভোট দেওয়াকে একটি ধর্মীয় কর্তব্য তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভোট দিন... আজ ইরানের বন্ধু ও দুর্ধর্ষদের চোখ ফলাফলের দিকে। বন্ধুদের খুশি করুন এবং শত্রুদের হতাশ করুন।’
ইরানের নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুসারে, এবারের নির্বাচনে ইরানের সাড়ে ৮ কোটি মানুষের মধ্যে ছয় কোটি ১০ লাখ বৈধ ভোটার রয়েছেন। ভোটগ্রহণের জন্য সারাদেশে ৫৯ হাজার কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। বেশিরভাগ ভোটকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে স্কুল এবং মসজিদগুলোতে।
ইরানের জাতীয় সংসদের নাম মজলিশ-ই সুরা-ই ইসলাম বা সংক্ষেপে মজলিশ। মজলিশের ২৯০টি সংসদীয় আসনের বিপরীতে এবার ১৫ হাজারের বেশি প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে প্রায় শতকরা ১৩ ভাগ নারী প্রার্থী রয়েছেন। ইরানের সংসদ চার বছরের জন্য নির্বাচিত হয়। জাতীয় সংসদে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য পাঁচটি আসন সংরক্ষিত রয়েছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি ইরানের বিশেষজ্ঞ পরিষদের নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ পরিষদের ৮৮টি আসনের বিপরীতে ১৪৪ জন আলেম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এদিকে নির্বাচনে নিরাপত্তা রক্ষার জন্য সারা দেশে এক লাখ নব্বই হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মুখপাত্র ব্রিগেড জেনারেল সাঈদ মোন্তাজের আল-মাহদি।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে হিজাব না পড়ার কারণে দেশটির নৈতিক পুলিশের হেফাজতে প্রাণ হারায় মাহসা আমিনি নামের এক তরুণী। এর জেরে ইরানে ব্যাপক অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছিল। ২০২৩ সালের মাঝামাঝি পযন্ত অর্থাৎ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলেছে এই বিক্ষোভ, যা ১৯৭৯ সালে পর সবচেয়ে বড় গণ আন্দোলন। ব্যাপক দমন-পীড়ণের মাধ্যমে সেই জনবিক্ষোভ দমন করেছে সরকার। তবে বিক্ষোভ দমনে সফল হলেও সরকারের প্রতি জনগণের একটি বড় অংশের ক্ষোভ এখনও বেশ ভালোভাবেই রয়ে গেছে। ফলে ভোটারদের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে উদাসীনতা দেখা।
সূত্র: পার্সটুডে, রয়টার্স
(ঢাকাটাইমস/০১মার্চ/এমআর)