নালিতাবাড়ীতে প্রভাবশালীদের অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, হুমকিতে চেল্লাখালী ব্রিজ

শেরপুর প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২৪, ১০:০৫ | প্রকাশিত : ০৪ মার্চ ২০২৪, ০৯:২৪

শেরপুরের সীমান্তবর্তী উপজেলা নালিতাবাড়ীর গারো পাহাড় এলাকার চেল্লাখালী নদীর আশপাশ জুড়ে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমতো বালু উত্তোলন করায় হুমকির মুখে পড়েছে সীমান্ত সড়কের চেল্লাখালী ব্রিজ। নষ্ট হচ্ছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ আর ভাঙনের মুখে পড়েছে ঘর-বাড়ি। প্রভাবশালী বালু খেকোরা দিনের পর দিন এভাবে কর্মযজ্ঞ চালিয়ে গেলেও নীরব রয়েছে প্রশাসন।

তবে উপজেলা প্রশাসনের দাবি অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে প্রায়ই অভিযান পরিচালনা করা হয়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড় এলাকার পাহাড়ি খরস্রোতা নদী চেল্লাখালী। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে এই নদীতে পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে প্রচুর বালু নেমে আসে। আর বর্ষা চলে গেলে স্থানীয় প্রশাসন ইজারার মাধ্যমে বালু উত্তোলনের অনুমতি দেয়। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু ইজারাদার স্থানীয় অবৈধ বালু ব্যবসায়ী কোনো নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে বুরুঙ্গা ব্রিজের আশপাশ এলাকা থেকে এবং নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলন করছে। এতে গভীর খাদ তৈরি হয়ে আশপাশের বিভিন্ন ফসলি জমি ভেঙে পড়েছে।

স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক ওবায়দুল হক বলেন, ইচ্ছেমতো বালু তোলার ফলে হুমকির মুখে পড়েছে চেল্লাখালী নদীর আশপাশের বেশ কিছু ঘরবাড়ি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে সীমান্ত সড়কের বুরুঙ্গা ব্রিজ।

বুরুঙ্গা গ্রামের কৃষক আলতাফ হোসেন বলেন, নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে চেল্লাখালী থেকে বালু তুলছে প্রভাবশালীরা। সরকার থেকে বালু মহালের যে ইজারা দেওয়া হয়েছে তা ব্রিজ থেকে দুই কিলোমিটার দূরে। অথচ তারা প্রভাব খাটিয়ে ব্রিজের আশপাশ থেকেই অসংখ্য শ্যালো মেশিন বসিয়ে বালু তুলছে।

ওই এলাকার মুদি দোকানি কমল মিয়া বলেন, স্থানীয়রা বাধা দিতে গেলে বালু উত্তোলনকারীরা তাদের ওপর চড়াও হয়। সেই সঙ্গে হুমকি-ধামকি, মারপিট মামলা দেওয়া হয়।

স্থানীয় আয়নাল মিয়া বলেন, বুরুঙ্গা ব্রিজের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী বারোমারী বাজারসংলগ্ন বুরুঙ্গা গ্রামের সরকারি খাস জমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন প্রভাবশালী রসূল মাহমুদ নামে এক বালু ব্যবসায়ী। সেখানে একটি বিদ্যুতের খুঁটি, কৃষি আবাদের সেচের ড্রেন একটি মসজিদসহ বেশকিছু বাড়ি-ঘর এখন হুমকির মুখে রয়েছে।

বালু শ্রমিক হাসান শেখ জানান, বুরুঙ্গা, অন্ধারুপাড়া খলচন্দা গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক শ্রমিক এই বালু উত্তোলন পরিবহনের কাজের সঙ্গে জড়িত।

পোড়াগাঁও শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বাদশা মিয়া বলেন, আমরা চাই বৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হোক। এতে আমরা কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবো না।

অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রসূল মাহমুদ দাবি করেন, তিনি বৈধভাবেই বালু উত্তোলন করছেন।

এদিকে মূল ইজারাদার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জোবায়ের হোসেন সোহেলের কাছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সম্পর্কে কোনো সদুত্তর দিতে না পেরে পরে বিস্তারিত জানাবেন বলে ফোন রেখে দেন।

এদিকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে গ্রামবাসীর লিখিত অভিযোগের বিষয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইলিশায় রিছিল বলেন, আমরা বেশ কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করেছি।

তবে আবারও বালু উত্তোলন শুরু হলে এবং অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/০৪মার্চ/প্রতিনিধি/পিএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

সারাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :