তথ্য সন্ত্রাস বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতাকে ম্লান করে দিচ্ছে : কাদের গনি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৩:৫৫
অ- অ+

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব ও বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, তথ্য সন্ত্রাস ও হলুদ সাংবাদিকতা বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতাকে ম্লান করে দিচ্ছে। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা নিশ্চিত করতে হলুদ সাংবাদিকতা প্রতিরোধের কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য সাংবাদিকদের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে হবে।

সাংবাদিকদের এ নেতা বলেন,বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে৷ হলুদ সাংবাদিকতার কারণে সাংবাদিকরা তাদের মর্যাদা হারাচ্ছেন। যারা ভালো সাংবাদিকতা করে মানুষ তাদের ওপর আস্থা রাখে, বিপদ আসলে পাশে দাঁড়ায়।

শনিবার খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়ন আয়োজিত খুলনা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত বিএফইউজের সদ্য প্রয়াত সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।

মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন খুলনার সভাপতি মো. আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ স্মরণ সভায় ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা, সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, জামায়াতে ইসলামীর খুলনা মহানগর আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন হেলাল, বিএফইউজের সহকারি মহাসচিব এহতেশামুল হক শাওন, রফিউল ইসলাম টুটুল, এইচ এম আলাউদ্দিন, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আকরামুজ্জামান, সাংবাদিক নেতা রাশিদুল ইসলাম, শেখ দিদারুল আলম, এরশাদ আলী, জিয়াউস শাহদাত, ড্যাব সভাপতি ডা. মোস্তফা কামাল, এডভোকেট আবদুল্লাহ হোসেন বাচ্চু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আবুল হাসান হিমালয় ও আবদুর রাজ্জাক রানা।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার বড্ড দুর্দিন চলছে। কিন্তু আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, সাংবাদিকতায় বস্তুনিষ্ঠতা এক অপরিহার্য বিষয় বলতে গেলে সাংবাদিকতার প্রাণ বলতে পারেন । বস্তুনিষ্ঠতা হচ্ছে আমরা কোন দল বা গোষ্ঠীর পক্ষপাতিত্ব না করা । সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলা। মোদ্দা কথা বিষয়টা বাড়িয়ে বা কমিয়ে না বলা বা লেখা। আসলে সাংবাদিকতা এমন এক পেশা যেখানে নিজের মন্তব্য লেখার কোন সুযোগ নেই। আপনি যা জানবেন উপযুক্ত প্রমাণ হাতে নিয়ে তা মানুষ কে জানাবেন। একজন সৎ , আদর্শবান সাংবাদিকের লক্ষণ হল তিনি পক্ষপাতহীন লিখবেন। কিন্তু আমরা সেটা করছি বা করতে পারছি?

এটাও সত্য যে, আমাদের দেশের বাস্তবতায় একজন সাংবাদিক কখনোই বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করার সুযোগ পান না। যদিও বাংলাদেশের সংবিধানে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার কথা বলা আছে তবুও আপনি স্বাধীন নন । যা সত্য তা আপনি লিখতেও পারেন না বলতেও পারেন না । এক জন সাংবাদিক কে বহু ঘাত পরিঘাত পেরিয়ে সাংবাদিকতায় মুনশিয়ানা দেখাতে হয় ।

সাংবাদিকদের এ নেতা বলেন, মানহানি, হলুদ সাংবাদিকতা, তথ্য সন্ত্রাস, অপপ্রচার, চেক বুক সাংবাদিকতা, ভুল তথ্য, ফরমায়েশি নিউজ, দলকানা স্বভাব সাংবাদিক জীবনের কলঙ্ক বয়ে আনতে পারে।

তিনি বলেন, মানহানি একটি গর্হিত কাজ। শুধু সাংবাদিক কেন কারো অধিকার নেই কারো মান হানি করা। কোন সম্মানিত মানুষকে যদি অনুমান বশত অপরাধী বলি সেটা অন্যায়। কোন সাংবাদিকের উচিত নয় কারো মান হানি কর।কিন্তু সেটি আমরা হরহামেশা করেই যাচ্ছি। হলুদ সাংবাদিকতা শব্দটা সব চাইতে উচ্চারণ করে সরকারি দল। হলুদ সাংবাদিকতা হল সংবাদে রং দেয়া অর্থাৎ কল্পনার আশ্রয় নেয়া, বাড়িয়ে বলা, প্রমাণ হাতে না নিয়ে কথা বলা। আমাদের সংবাদ মাধ্যম গুলো এ ভয়ানক কাজটি প্রায় করে যাচ্ছে।

চেক বুক সাংবাদিকতা শব্দটার সাথে আমরা খুব একটা পরিচিত নই । সোজা কথায় টাকার বিনিময়ে রিপোর্ট করা। এখন অনেক সাংবাদিক টাকা কামাবার হাতিয়ার এই সাংবাদিকতা নোংরা কাজটি করছেন।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ভালো সাংবাদিকতার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার পাশাপাশি অপ-সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে থাকতে হবে। সাংবাদিকরা যেন একটি স্বস্তি নিয়ে কাজ করতে পারে সে লক্ষ্যে সাংবাদিক ইউনিয়ন কাজ করছে।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, স্বাধীন সাংবাদিকতা ছাড়া গণতন্ত্র সুরক্ষা পাবে না। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবশ্যই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।

সাংবাদিকদের এ নেতা বলেন, কর্মস্থলেও অধিকার বঞ্চিত হওয়ায় কিংবা নিরাপত্তা না থাকার কারণে সাংবাদিকরা স্বাধীন সাংবাদিকতা করতে পারেন না। তাই সাংবাদিকদের সুরক্ষায় আইন করা জরুরি।তিনি আরো বলেন, সাংবাদিকতা একটি ঝুঁকিপূর্ণ পেশা এখানে কাউকে জোর করে নিয়ে আসা যায় না বরং এই ঝুঁকি মেনে নিয়েই আমাদের সাংবাদিকতা করতে হয়।

সাংবাদিকদের পেশার মর্যাদার কথা তুলে ধরে তিনি আরো বলেন, এই পেশায় যারা জড়িত তাদের দেশের স্বাধীনতা ও মূল্যবোধের কথা তুলে ধরতে হয়। মনে রাখতে হবে চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে গণমাধ্যম যদি দুর্বল হয় তাহলে রাষ্ট্রব্যবস্থা দুর্বল হয়ে যাবে। সুতরাং দেশকে সুদৃঢ় রাখতে হলে রাষ্ট্রের বাকি তিনটি স্তম্ভের পাশাপাশি চতুর্থ হিসেবে সংবাদপত্রকেও দায়িত্ব পালন করতে হয়।

(ঢাকাটাইমস/১২ অক্টোবর/জেবি/এমআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
‘ধামাকা শপিং’-এর চেয়ারম্যান এম আলীকে ধরে থানায় দিল জনতা
তারেক রহমানকে শরণখোলা বিএনপির নেতাদের চিঠি, কাউন্সিলে আঞ্জুমান আরার প্রার্থীতা বাতিলের দাবি
সনাতনী জনগণের মাঝে বিএনপির বার্তা পৌঁছে দিলেন কাজী আলাউদ্দিন
বিচার সংস্কার ও নতুন সংবিধানের মাধ্যমেই দেশ পুনর্গঠন করতে হবে: নাহিদ ইসলাম
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা