রাষ্ট্রপতি নিয়ে আইন উপদেষ্টার বক্তব্যে সরকার একমত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২২ অক্টোবর ২০২৪, ২৩:৫০| আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৪, ২৩:৫৪
অ- অ+

শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র না পাওয়ার বক্তব্যে রাষ্ট্রপতির ‘শপথ ভঙ্গ’ এবং তার ‘পদে থাকার যোগ্যতা নিয়ে ভাবতে হবে’ বলে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের বক্তেব্যের সঙ্গে একমত অন্তর্বর্তী সরকার।

মঙ্গলবার বিকালে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সরকারের অবস্থান তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর।

রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের পর আইন উপদেষ্টার মন্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল যা বলেছেন এটার সঙ্গে সরকার একমত পোষণ করে।’

রাষ্ট্রপতিকে সরানোর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না- এই প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।’

ভবিষ্যতে এমন চিন্তা আছে কি না-জানতে চাইলে জবাব এল, ‘সেটা ভবিষ্যৎ বলে দেবে।’

যদি সরকার রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের উদ্যোগ নেয়, সেটি প্রক্রিয়ায় হবে- এমন প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, ‘যে সিদ্ধান্ত হয়নি সে বিষয় কোন প্রক্রিয়ায় হবে সেটা নিয়ে আলোচনা অবান্তর।’

প্রসঙ্গত দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার রাজনৈতিক ম্যাগাজিন ‘জনতার চোখ’ এর প্রচ্ছদ প্রতিবেদন ‘উনি তো কিছুই বলে গেলেন না...’ পত্রিকাটির সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী লিখেছেন, রাষ্ট্রপতি তাকে বলেছেন, তিনি শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পাননি।

এ নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রচারের মধ্যে সোমবার সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার অফিস কক্ষে সাংবাদিকদের একথা বলেন আসিফ নজরুল।

আইন উপদেষ্টা বলেন, গত ৫ আগস্ট নিজের মুখের ভাষণে সাবেক প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগপত্র দিয়েছেন এবং গ্রহণ করেছেন বলে জানান রাষ্ট্রপতি। এরপর একের পর এক কার্যাবলীর মধ্য দিয়ে এটা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত উনি পুরো জাতির কাছে বিভিন্নভাবে বারবার নিশ্চিত করেছেন এবং সুনিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগপত্র দিয়েছেন এবং গ্রহণ করেছেন। এছাড়া গত ৫ আগস্ট উদ্ভূত পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী উপদেশমূলক এখতিয়ার প্রয়োগ করে রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের কাছ থেকে মতামত বা রেফারেন্স জানতে চান। এর পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবং আপিল বিভাগের অন্য সব বিচারপতি মিলে একটা মতামত প্রদান করেন, যার প্রথম লাইনটি হচ্ছে, দেশের বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন।

ওই রেফারেন্সটিতে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আপিল বিভাগের সব বিচারপতির স্বাক্ষর রয়েছে উল্লেখ করে আসিফ নজরুল বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের মতামতের ভিত্তিতে একটি নোট মন্ত্রণালয় থেকে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে প্রেরণ করা হয়। রাষ্ট্রপতি এই অভিমতটা দেখেছেন এবং গ্রহণ করেছেন। এরপর তিনি নিজে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করেছেন।

তিনি বলেন, আজ যদি প্রায় আড়াই মাস পরে বলেন পদত্যাগপত্র দেয়নি, তাহলে এটা এক ধরনের স্ববিরোধিতা হয়, শপথ লঙ্ঘন হয় এবং এই পদে থাকার যোগ্যতা আছে কি না সে সম্পর্কে প্রশ্ন আসে।

আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা জানি, বাংলাদেশের সংবিধানে বলা হয়েছে আপনার যদি শারীরিক মানসিক সক্ষমতা না থাকে বা আপনি যদি গুরুতর অসদাচরণ করেন তখন রাষ্ট্রপতি হিসেবে থাকতে পারেন কি না, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আমাদের সংবিধানে রয়েছে। একজন সর্বোচ্চ পদে থাকা মানুষ পুরো জাতির সামনে ভাষণ দিয়ে কীভাবে তিনি বলতে পারেন এটা আমাদের বোধগম্য না।

তিনি বলেন, আমাদের বক্তব্য অত্যন্ত পরিষ্কার– উনার বক্তব্য, উনার কর্মকাণ্ডে উনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগপত্র দিয়েছেন এবং গ্রহণ করেছেন। এখন স্ববিরোধী কথাবার্তা বলার কোনো সুযোগ নেই। যদি উনি এই বক্তব্যে অটল থাকেন তাহলে উনার রাষ্ট্রপতির পদে থাকার যোগ্যতা আছে কি না সেটা আমাদের উপদেষ্টামণ্ডলীর সভায় ভেবে দেখতে হবে।

(ঢাকাটাইমস/২২অক্টোবর/এমআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু: প্রধান উপদেষ্টা
রেকর্ড হারে কমলো জাপানের জনসংখ্যা
রংধনু গ্রুপ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ৮৭৮ কোটি টাকা পাচারের মামলা, সম্পত্তি ক্রোক
জামায়াতকে একাত্তরের ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান দুদুর
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা