‘ফুটবল রাজনীতি’র কারণে ব্যালন ডি'অর পাননি ভিনিসিউস!

ভিনিসিউস জুনিয়র, নাকি রদ্রি-চলতি বছর কার হাতে উঠছে এই অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছিলই। শুরু থেকেই সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলিয়ান তারকা ভিনিসিউস জুনিয়র। তবে নানা নাটকীয়তা শেষে ব্যালন ডি'অর পুরস্কার ওঠেনি ভিনির হাতে। ম্যানচেস্টার সিটির মিডফিল্ডার রদ্রি জিতেছেন এবারের ব্যালন ডি'অর পুরস্কার।
২০২২ সালে করিম বেনজেমার পর ফের রিয়াল মাদ্রিদের কোচ খেলোয়াড়ের হাতেই ব্যালন ডি'অর দেখছিল বিশ্ব। ভিনিসিউস জুনিয়র গত মৌসুমে রিয়ালের হয়ে যা করেছেন তাতে তাকে পেছনে ফেলার মতো যে কেউ নেই, তা প্রায় সকলেই বিশ্বাস করেন। তবে ব্রাজিলের জার্সিতে কোপা আমেরিকায় ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। তার দলও বিদায় নেয় কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে।
অন্যদিকে ভিনিকে হারিয়ে ব্যালন জেতা রদ্রি গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়ালের কাছে শেষ ষোলোয় হেরে বিদায় নিলেও জিতেছেন প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা। তবে বড় দান মেরেছেন স্পেনের জার্সিতে ইউরো জিতে। সেই টুর্নামেন্টে আবার সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও তার হাতেই উঠেছে। তারপরও রিয়ালের তারকা ভিনিসিউসই ব্যালন ডি'অরের মঞ্চে পরিষ্কার ফেবারিটই ছিলেন।
ভিনিসিউসের ব্যালন ডি'অর না জেতাটা মানতে পারছেন না তার রিয়াল মাদ্রিদ সতীর্থরা। বর্তমান সতীর্থদের মধ্যে দানি কার্ভাহাল, ফেদে ভালভার্দে, আর্দা গুলাররা যেমন তার পাশে দাঁড়িয়েছেন, তেমনই করিম বেনজেমা,-টোনি ক্রুসের মতো সাবেক সতীর্থরাও ভিনির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। রিয়ালের কোচ কার্লো আনচলত্তি সেরা কোচের পুরস্কার জিতে স্মরণ করেছেন তার দুই শিষ্য ভিনিসিউস ও দানি কার্ভাহালকে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামের স্টোরিতে ভিনিসিউসের সঙ্গে ছবি শেয়ার করে ঔরেলিয়ে চৌয়ামেনি লিখেছেন, 'তারা এখনও প্রস্তুত নয় আমার ভাই। ভালোবাসা তোমার জন্য।' সেরা গোলরক্ষকের লড়াইয়ে পঞ্চম হওয়া রিয়ালের ইউক্রেনিয়ান গোলরক্ষক আন্দ্রে লুনিনও স্টোরিতে ব্রাজিলিয়ান তারকার সঙ্গে ছবি শেয়ার করে তাকে সেরার স্বীকৃতি দিয়েছেন।
রিয়াল ও ব্রাজিল জাতীয় দলে ভিনিসিউসের সতীর্থ এদার মিলিতাও ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে লিখেছেন, 'তুমিই সেরা এবং এটা তোমার থেকে কেউই কেড়ে নিতে পারবে না। দ্য বেস্ট!' রিয়ালের তরুণ তুর্কি আর্দা গুলারও দাঁড়িয়েছেন ভিনিসিউসের পাশে।
এদিকে ফেদে ভালভার্দে লিখেছেন, 'এমন কোনো পুরস্কারই নেই যা স্বীকৃতি দিতে পারে যে, তুমি কতটা ভালো। এবং আমি শুধু তোমার খেলোয়াড়ি মান নিয়েই বলছি না, মাঠের বাইরের মানুষ হিসেবেও। তোমাকে ভালোবসি আমার ভাই।'
তবে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা। এই ফরাসি মিডফিল্ডারের মতে রাজনীতির শিকার হয়েছেন ভিনিসিউস। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে মাদ্রিদের এই মিডফিল্ডার ‘ভাই আমার, তুমি বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় এবং কোনো পুরস্কারই অন্য কিছু বলতে পারে না। ভাই, তোমাকে ভালোবাসি।’ এই লেখার ওপরে কামাভিঙ্গা ‘ফুটবল রাজনীতি’ লিখে তার পাশে ক্রস চিহ্ন দিয়েছেন।
ভিনির পাশে দাঁড়িয়েছেন গত মৌসুম শেষে ফুটবলকে বিদায় বলা টনি ক্রুসও। এই জার্মান ভিনির সঙ্গে ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, 'দ্য বেস্ট।' আর বর্তমানে সৌদি লিগের দল আল ইত্তিহাদে খেলা বেনজেমা ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে ভিনির সঙ্গে ছবি দিয়ে লিখেছেন, 'তড়প ফোর্ট।' যার মানে শক্ত থাকো।
এদিকে ইউরোপের একাধিক সংবাদমাধ্যমের দাবি, ফুটবলীয় রাজনীতির কারণে ব্যালন ডি’ অরের প্রেস্টিজিয়াস শিরোপা পাননি। বিশেষ করে মাদ্রিদ প্রেসিডেন্ট ফ্লেরেন্তিনো পেরেজের ইউরোপিয়ান সুপার লিগ ভাবনার কারণেই উয়েফা ও রিয়াল মাদ্রিদের অলিখিত দূরত্বের শিকার হয়েছেন ভিনি– এমন মন্তব্য ভাসছে ফুটবলের আঙ্গিনায়।
যদিও ভিনিসিয়ুস মনে করেন, তিনি বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কারণেও তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে ফুটবলের ব্যক্তিগত পর্যায়ের সর্বোচ্চ এই পুরস্কার থেকে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সঙ্গে ব্রাজিলিয়ান তারকার ম্যানেজমেন্ট নিশ্চিত করেছে তার মনোভাব।
(ঢাকাটাইমস/২৯ অক্টোবর/এনবিডব্লিউ)

মন্তব্য করুন