মির্জাপুরে নয় মাস ধরে বেতন পাচ্ছে না ৫৪ কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মীরা

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে গত ৯ মাস ধরে বেতন বন্ধ ৫৪ কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের (সিএইচসিপি)। দীর্ঘদিন ধরে বেতন না পাওয়ায় পরিবার নিয়ে চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন তারা। ফলে ঈদের আনন্দ নেই তাদের পরিবারে। কবে নাগাদ বেতন পাবেন তাও কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।
সরজমিনে উপজেলার মহেড়া ইউনিয়নের ডুকলাহাটি কমিউনিটি ক্লিনিক গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের দরিদ্র মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মাহফুজুর রহমান তপু। কিন্তু তার চোখে-মুখে রয়েছে চিন্তার ভাজ। কথা হলে তিনি জানান, স্ত্রী ও তিন কন্যা সন্তান নিয়ে তার পরিবার। বেতনের ওপরেই চলে সংসার। কিন্তু গত ৯ মাস ধরে বেতন ভাতা পাচ্ছেন না সিএইচসিপি মাহফুজুর রহমান। পরিবার পরিজন নিয়ে কিভাবে ঈদ উদযাপন করবেন তা নিয়ে তার চোখে মুখে রয়েছে চিন্তার ভাজ।
জানা গেছে, গত ২০১১ সালে একটি প্রকল্পের অধীনে সারাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মরত সিএইচসিপিদের নিয়োগ দেয়া হয়। ২০১৬ সালের ১৪ জুন প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও তিন দফা প্রকল্পের মেয়াাদ বৃদ্ধি করে সরকার। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়েও কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরতদের বেতন ভাতা বৃদ্ধিসহ সুযোগ সুবিধা বাড়ানো হয়নি। এদিকে গত বছরের জুলাই মাস থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের বেতন ভাতা বকেয়া পড়েছে। এ অবস্থায় সারাদেশে কর্মরত সিএইচসিপিরা তাদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থান্তারের দাবিতে ঢাকায় আন্দোলনে নামেন। আন্দোলনের ফলে চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের আশ্বাসও পান তারা। আশ্বাসের পর এখন তাদের বকেয়া বেতন প্রকল্প না রাজস্ব কোন খাত থেকে আসবে তাও জানেন না তারা। এতে ৯ মাস ধরে তারা কোনো বেতন ভাতা পাচ্ছেন না। এমনকি প্রণোদনা ভাতাও পাননি।
উপজেলার আজগানা কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি উপজেলা সিএইচসিপি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সুমন সিকদার বলেন, গত ৯ মাস ধরে তাদের বেতন-ভাতা বন্ধ। এতদিন ধার-দেনা করে ছেলেমেয়ের লেখাপড়া ও সংসারের খরচ জোগাতে হয়েছে। এখন আর কেউ ধারও দিচ্ছে না। ঈদে কেনাকাটা তো এখন চিন্তাও করতে পারছিনা।
বড়দাম কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্বে থাকা উপজেলা সিএইচসিপি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক স্বপন চৌধুরীও বলেন, বর্তমান বাজারে জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির ফলে সামান্য বেতনে চলতে এমনিতেই কষ্ট হয়। এরমধ্যে গত ৯ মাস ধরে বেতন বন্ধ থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টের শেষ নেই বলে জানান।
মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফরিদুল ইসলাম গত ৯ মাস ধরে সিএইচসিপিদের বেতন বন্ধ থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, আজ শেষ কর্মদিবসে তাদের সাড়ে তিন মাসের বেতন বোনাস পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা খালি হাতে ফেরত গেছেন।
(ঢাকা টাইমস/২৭মার্চ/এসএ)
মন্তব্য করুন