সুনামগঞ্জের হাওরে উৎসবমুখর পরিবেশে বোরো ধান কাটার ধুম

সুনামগঞ্জে এবার বোরো ধানের ভাম্পার ফলন হওয়ায় খুশি হাওরাঞ্চলের কৃষক। তবে শিলা বৃষ্টি ও খরায় কিছু ক্ষতি হলেও তা কাটিয়ে উঠতে জমির সম্পূর্ণ ধান কেটে গোলায় তুলতে প্রখর রোদের মধ্যেই কৃষক নিজে, শ্রমিক দিয়ে আবার মেশিন দিয়ে ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
এখন আবহাওয়া ভালো থাকলেই ধান কেটে মাড়াই করে ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে গোলায় তুলতে পারলেই সকল কষ্ট স্বার্থক হবে বলে জানিয়েছেন জেলার দেখার হাওর পাড়ের কৃষক রফিক মিয়া।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় ২ লাখ ২৩ হাজার ৫০২ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে, যা থেকে ৯ লাখ ১৮ হাজার মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড ধান ৬৭ হাজার ৫৫০ হেক্টর, উচ্চ ফলনশীল এক লাখ ৫৪ হাজার ৯৭৩ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের ৯৭৯ হেক্টর। যার মূল্য চার হাজার কোটি টাকার বেশি।
জেলার মাটিয়ান হাওরে কৃষক জামিল মিয়া জানান, হাইব্রিড ধানের আবাদ বেশি আর লাভ হয় বেশি। আর স্থানীয় জাতের ধানের চাষাবাদ কমে গেছে লাভ কম হওয়ায়। হাইব্রিড ধানের কারণে দেশীয় জাতের ধান হারিয়ে যাচ্ছে। এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার তাহিরপুর উপজেলায় এবার বোরো ধানের ভাম্পার ফলন হয়েছে। শনি ও মাটিয়ান হাওরসহ উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের ছোট বড় ২৩টি হাওরে ও নন হাওরে ১৭ হাজার ৫০৯ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে।
এদিকে হাওরে হাইব্রিড ধানের উৎপাদন বেশি হওয়ায় কৃষকরা সেদিকে ঝুঁকে পড়ায় দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় জাতের ধান।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি অফিসার শরীফুল ইসলাম জানান, আবাদ ও পরিবেশে ভালো থাকায় ৬৮ হাজার ৬১৮ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হবে যার বাজার মুল্য তিন কোটি ৩৬ লাখ টাকার বেশি। হাওরের কৃষকরা এখন উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্যে দিয়ে ধান কাটছেন। বাজারে ধানকাটার জন্য শ্রমিকদের ব্যবহার করা কাছি বা কাস্তে বিক্রি বেড়েছে।
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোস্তফা ইকবাল আজাদ জানিয়েছেন, জেলার বিভিন্ন হাওরে উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে ধান কাটা শুরু হয়েছে। উৎপাদন ও বেশ ভালো ভালো। হাওরের ধান ৫ মে এবং নন হাওরের ধান ২৫ মে এর মধ্যে কেটে শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এবার দশমিক চার শতাংশ জমিতে স্থানীয় জাতের ধানের চাষাবাদ হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/১৪এপ্রিল/এফএ)

মন্তব্য করুন