একটি সড়ক দেড় শ বছরের কষ্ট লাঘব

আমীর চারু বাবলু, বোয়ালমারী (ফরিদপুর)
  প্রকাশিত : ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১৮:৩৭
অ- অ+

ফরিদপুরের বোয়ালমারীর শেষ প্রান্তে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন একটি জনপদ বিষ্ণুপুর। একটি পরিবার নিয়ে একটি গ্রাম। স্থানীয়ভাবে বেষ্টপুর নামে পরিচিত গ্রামটি দেশের দ্বিতীয় ক্ষুদ্র গ্রাম হিসেবে স্বীকৃত।

উপজেলার রুপাপাত ইউনিয়নের এই গ্রামে বংশপরম্পরায় প্রায় দেড় শ বছর ধরে বসবাস করে আসছে ছলে মোল্যার পরিবার। আশপাশে দেড়-দুই কিলোমিটারের মধ্যে আর কোনো জনবসতি নেই। চারপাশে শুধু ফসলি খেত। মাঝে মাঝে একটি-দুটি পতিত ভিটা দেখে অনুমিত হয় একসময় গ্রামটিতে আরও বসতি ছিল। যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় তারা অন্যত্র পড়ি জমিয়েছে।

দেড় বছর ধরে সড়ক যোগাযোগবিহীন গ্রামটিতে যারা বাস করছেন, তাদের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ছিল একটি সড়কের, সেটি কাঁচা হোক কিংবা পাকা। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে তাদের সেই দাবি পূরণ হলো। স্বপ্নের সড়ক পেয়ে এলাকাবাসী আনন্দিত, উল্লসিত।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে রাস্তাটি উদ্বোধন করেন বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হাসান চৌধুরী। প্রায় পৌনে দুই কিলোমিটার দীর্ঘ এই কাঁচা রাস্তার নির্মাণকাজ শেষ হয় চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ত্রাণ-মন্ত্রণালয়ের গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের (কাবিখা) অর্থায়নে রাস্তাটি বাস্তবায়ন করা হয়।

উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধান অতিথি তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, ‘এটি মাটি দিয়ে নির্মাণ করা শুধু একটি রাস্তা নয়, এটি একটি ইতিহাসের অংশ। দেড় শত বছর ধরে যোগাযোগের জন্য যে কষ্ট মানুষ করেছে, আজ সেই কষ্টের অবসান ঘটল। রাস্তা গ্রামের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।‘

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রুপাপাত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সোনা মিয়া, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং গ্রামবাসী।

নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পেলে আনন্দিত স্থানীয় চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সোনা মিয়া। তিনি বলেন, ‘বিষ্ণুপুর মৌজায় বিষ্ণুপুর গ্রামে একটি পরিবারই বসবাস করছে। এই রাস্তাটি ছিল ওই পরিবারসহ আশপাশের গ্রামের মানুষের স্বপ্ন। আমার নির্বাচনের সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম রাস্তাটি করব। আজ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হাসান চৌধুরীর সহযোগিতায় রাস্তাটি করতে পারলাম। প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পেরে আমি আনন্দিত।

অনুষ্ঠান শেষে আশপাশের গ্রামবাসী আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠে। অনেকে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। কেউ কেউ বলছিলেন, ‘আমরা কখনো ভাবিনি জীবদ্দশায় এই রাস্তা দেখতে পাব। আজকে তা বাস্তব। এই রাস্তা আমাদের স্বপ্নের রাস্তা।

বিষ্ণুপুর গ্রামের মো. ফারুক মোল্যা জানান, আগে বর্ষাকালে গ্রামের মানুষ নৌকা দিয়ে চলাচল করতেন। জরুরি সময়েও রোগী বহনে কিংবা স্কুলে যেতে শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হতো। নতুন রাস্তা এই গ্রাম আশপাশের গ্রামবাসীর জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

(ঢাকাটাইমস/২৪এপ্রিল/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
বিভেদের রাজনীতি আমাদের ঐতিহ্য নষ্ট করেছে: মির্জা ফখরুল 
ট্রেন মিস করলেন তাবিথ আউয়াল?
গিয়াস কাদের চৌধুরী ও গোলাম আকবর খোন্দকারকে বিএনপির শোকজ
আগারগাঁওয়ে অপহৃত চার কিশোরকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে পৌঁছে দিল সেনাবাহিনী
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা