বোয়ালমারীতে ধর্ষণচেষ্টা মামলা করায় বাদীকে জীবননাশের হুমকি

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার প্রত্যন্ত এক গ্রামের তিন সন্তানের জননী এবং ধর্ষণচেষ্টার মামলার বাদীকে জীবননাশের হুমকি দেয়ায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী নারী। শুক্রবার সকালে স্থানীয় একটি সাপ্তাহিক পত্রিকার কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ বলেন, ‘আমার স্বামী জীবিকানির্বাহে রাজধানীতে একটি ফার্ণিচারের দোকানে কাজ করে। আমি সন্তান ও শ্বশুর শাশুড়িকে নিয়ে বাড়িতে থাকি। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রতিবেশী মো. মোশারফ মোল্যার মাদ্রাসা পড়ুয়া ছেলে মো. আকাশ মোল্যা (২৬) দীর্ঘদিন ধরে আমাকে উত্যক্ত ও কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। এ বিষয় ইতোপূর্বে আকাশ মোল্যার বাবা-মাকে জানানো হলেও তারা কোন পদক্ষেপ নেয়নি। গত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ১১টার দিকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে আমি আমার ঘর থেকে বের হলে সেখানে আগে থেকে ওঁত পেতে থাকা আকাশ মোল্যা আমাকে জাপটে ধরে শ্লীলতাহানি ঘটায় ও ধর্ষণের চেষ্টা করে। আমি এ সময় শোরচিৎকার করলে আমার পরিবারের লোকজন এগিয়ে আসে আকাশের হাত থেকে আমাকে উদ্ধার করে।
পরদিন এ ঘটনা কাউকে না জানাতে আকাশের পরিবার আমাদের চাপ দিতে থাকে ও ভয়ভীতি দেখায় এবং জানালে আমি, আমার স্বামীসহ তিন সন্তানকে খুন করে ফেলা হবে বলে হুমকি দেয়। তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আমার শ্বশুরবাড়িতে দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায় তারা। তাদের হামলায় আমিসহ আহত হয় আমার শাশুড়ি ও দেবর। আহতাবস্থায় আমি ও আমার শাশুড়িকে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে আসে পরিবারের লোকজন। সেখানে আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিই।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় গত ১৫ এপ্রিল আমি বাদী হয়ে বোয়ালমারী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯(৪)(খ)/১০ তৎসহ ৫০৬(২) পেনাল কোড ১৮৬০ ধারায় একটি মামলা করেছি ও হামলা মারধর করার ঘটনায় গত ১৯ এপ্রিল আমার স্বামী অভিযুক্ত আকাশ মোল্যা, তার বাবা মোশারেফ মোল্যা, মা চম্পা বেগম এবং জনৈক আল আমিন মোল্যার নামোল্লেখ করে বোয়ালমারী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। মামলা ও ডায়েরি করার পর থেকে আসামিরা আমাদের জীবননাশের হুমকি দিয়ে আসছে। মামলাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে গত ২৪ এপ্রিল ভাড়াটিয়া লোকজন দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে লোকদেখানো একটি মানববন্ধন করে তারা। মানববন্ধন শেষে ভাড়াটিয়া লোকজন আমাদের বাড়ির সামনে এসে মামলাটি প্রত্যাহার করে নিতে বলে। না হলে প্রাণনাশের হুমকিও দেয় তারা। এ ঘটনায় আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি আমার স্বামী-সন্তানসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
(ঢাকা টাইমস/২৫এপ্রিল/এসএ)
মন্তব্য করুন