দুই দিনের কবিতা উৎসব শুরু
‘কবিতা মানে না বর্বরতা’ এই স্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি চত্বরে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী কবিদের মিলনমেলা।
বুধবার সকাল ১০টায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, শিল্পী কামরুল হাসানের সমাধি ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুলের শ্রদ্ধা জানিয়ে শুরু হয় এই উৎসব। ৩১তম এই কবিতা উৎসবের উদ্বোধন করেন কবি বেলাল চৌধুরী।
মূল অনুষ্ঠানে জাতীয় কবিতা পরিষদ আয়োজিত উৎসবের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন কবি আসাদ চৌধুরী। বক্তব্য দেন উৎসবের আহ্বায়ক কবি রবিউল হুসাইন, পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কবি তারিক সুজাত।
জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মুহাম্মদ সামাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শিল্প সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক অঙ্গনে অবদান রেখে যাঁরা প্রয়াত হয়েছেন, তাঁদের স্মরণ করে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন কবি আমিনুর রহমান সুলতান।
উদ্বোধনী ভাষণে কবি বেলাল চৌধুরী বলেন, ‘কবিতা স্বপ্ন, চেতনা ও প্রত্যয়ের কথা বলে। যখন সেটা আঘাতপ্রাপ্ত হয়, বর্বতার শিকার হয় তখন কবিরাই হয়ে ওঠে প্রতিবাদী। হয়তো ভাববেন, কবিতার সঙ্গে সংগ্রামের কী সম্পর্ক? আমি বলব, কবিতা মানবতার কথা বলে। মানবতাকে জাগিয়ে তুলতে ভূমিকা রাখেন কবিরা।’
আহ্বায়ক কবি রবিউল হুসাইন বলেন, ‘কবিকে সামাজিক দায়িত্ব পালন করতে হয়। সেই উদ্দেশ্য নিয়ে জাতীয় কবিতা পরিষদ কবিতার মাধ্যমে তাদের সামাজিক দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।’
সাধারণ সম্পাদক কবি তারিক সুজাত বলেন, ‘মৈত্রী ও শান্তির বাণী বাংলা ভাষাসহ আরও বেশ কয়েকটি ভাষায় কবিদের লেখা ও উচ্চারণের মধ্য দিয়ে পৃথিবীময় ছড়িয়ে পড়বে। অশান্ত পৃথিবীর শান্তিপ্রিয় মানুষের পাশে আমাদের কবিতা মোমের শিখা হয়ে জ্বলবে—ত্রিশতম উৎসবে এই প্রত্যাশা।’
সভাপতির বক্তব্যে কবি মুহাম্মদ সামাদ বলেন, ‘বাংলা এবং অন্য ভাষার কবিতাকে আরও সুন্দর, শিল্পিত ও সুষমামণ্ডিত করতে নবীন-প্রবীণ শুভবাদী কবিদের প্রতি ত্রিশতম জাতীয় কবিতা উৎসবমঞ্চ থেকে আমন্ত্রণ জানাই।’
উদ্বোধনী পর্ব শেষে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত বোরহান উদ্দিন খান জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে মূল আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ, ভারত, সুইডেন, রাশিয়া, জার্মান, পুয়ের্তোরিকা, অস্ট্রিয়া থেকে আমন্ত্রিত কবি-লেখক-প্রতিনিধিরা।
বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত বোরহান উদ্দিন খান জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে কবিতা পাঠে অংশ নেন বিভিন্ন দেশ থেকে আগত কবি প্রতিনিধিরা। দুপুর দেড়টা থেকে ৩টা পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্বে দিলারা হাফিজের সভাপতিত্বে অংশ নেবেন নিবন্ধিত কবিরা। তৃতীয় পর্বে বিকাল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত আনোয়ারা সৈয়দ হকের সভাপতিত্বে কবিতা পাঠে অংশ নেবেন অন্য ভাষার কবিরা। এভাবে পর্যায়ক্রমে কবিতা পাঠ চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত।
প্রথম পর্বের কবিতা উৎসব শেষ হবে নাট্যব্যক্তিত্ব কবি রামেন্দ্র মুজুমদারের সভাপতিত্বে পরিষদে আমন্ত্রিত শিল্পীদের অংশগ্রহণে। দুই দিনব্যাপী উৎসবের সমাপনী হবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার।
(ঢাকাটাইমস/০১ফেব্রুয়ারি/দোহা/জেবি)