মহামারির ধাক্কা সামলে মার্কেটে আবার হাঁকডাক
মহামারি করোনাভাইরাসের দুই বছরের ধাক্কা সামলে আবার জমে উঠেছে বিপণিবিতান। রোজা ও ঈদুল ফিতর ঘিরে হাঁক পাড়ছেন দোকানিরা। আর মার্কেট থেকে মার্কেটে ঘুরে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সারছেন ক্রেতারা।
মহামারি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসার মধ্যে বিক্রেতারা আশা করছেন ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার মতো ব্যবসা। তবে রোজার দশদিনেও প্রত্যাশা মাফিক বেচাকেনা জমেনি বলে ভাষ্য তাদের।
রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড, সায়েন্সল্যাব, ধানমণ্ডি, শ্যামলী ও মিরপুরের একাধিক মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতা সমাগম বেড়েছে। তবে মহামারিকালের আগের অভিজ্ঞতা বলছে, অন্যবার রোজার মাঝামাঝি সময়ে এসে যে পরিমাণ ক্রেতা সমাগম হতো তা এবার এখনো হয়নি।
শ্যামলী স্কয়ারে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কেনাকাটা করতে আসা আবু তাহের জানান, তিনি দুই ছেলে মেয়ে ও স্ত্রীর জন্য নতুন পোশাক কিনবেন। তবে আগে একাধিক পোশাক কিনে দিলেও এবার তিনি তা পারছেন না।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী আবু তাহের ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘করোনার কারণে দেড় বছর বেতন ছাটাই করেছে অফিস। জমা টাকা দিয়েই কোনোভাবে সংসার চালিয়েছি। এখন আগের অফিসে চাকরি নিয়মিত হয়েছে। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়তি থাকায় ঈদের কেনাকাটায় লাগাম টানতে হচ্ছে এবার।’
ঈদুল ফিতর ঘিরে বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের সারা বছরের পরিকল্পনা থাকে। রোজার আগে থেকেই পুরোদমে ব্যবসার প্রস্তুতি নেন তারা। বিশেষ করে পোশাক ব্যবসায়ীরা ঈদের জন্য অপেক্ষায় থাকেন। চিরচেনা সেই দৃশ্য প্রায় উধাও হয়েছিল করোনার বিধিনিষেধের কারণে।
তবে দেশের বেশিরভাগ মানুষ টিকার আওতায় আসায় আর করোনা সংক্রমণ কমে আসায় উন্নতি হয়েছে মহামারি পরিসস্থিতির। তাই এবার বিপণিবিতাগুলো নতুন নতুন পোশাকের বাহারে সেজেছে আগেকার মতো।
একাধিক মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, সামাজিক দূরত্ব প্রায় নেই বললেই চলে। মাস্কের ব্যবহারও কমে এসেছে। তবে ক্রেতা সমাগম হলেও আশানুরূপ বিক্রি হচ্ছে না বলে ভাষ্য ব্যবসায়ীদের।
শ্যামলী স্কয়ারের হেরিটেজ দোকানের মালিক শিরিনা হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘করোনার আগে ঈদের বিক্রিতে ক্রেতা সামলিয়ে তাদের ফুরসৎ মিলত না। আর এবার এখনো বেঁচাবিক্রি শুরু হয় নাই। কোনো রকম চলছে। গত দুই বছর তো দোকানই খুলতে পারি নাই। সেই হিসেবে এবার অন্তত দোকান খুলে বসতে পেরেছি। আশা করছি ১৫ রমজানের পর থেকে ক্রেতা বাড়তে থাকবে।’
এলিফ্যান্ট রোডের ছেলেদের শার্ট প্যান্টের এক দোকানের মালিক ঢাকা টাইমসকে বলেন, করোনাভাইরাসে ব্যবসা করতে না পারায় গত দুই বছরের ক্ষতি অনেক। এবার হয়তো তা পুষিয়ে ওঠা সম্ভব হবে না, তবে ব্যবসা করে কিছুটা ঋণ অন্তত শোধ করতে পারব।’
(ঢাকাটাইমস/১৪এপ্রিল/ডিএম)