ছাত্রীদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগে শিক্ষককে বরখাস্ত

খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৮:০৪

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার মধ্য আঙ্গারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম মাহমুদ (৫৩)-এর বিরুদ্ধে ওই স্কুলের ছাত্রীদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় সেই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে জেলা শিক্ষা অফিস। বৃহস্পতিবার সকালে দিনাজপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হোসেন আলী স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তদন্ত রিপোর্টে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

অভিযোগ ও শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার আঙ্গারপাড়া ইউনিয়নের মধ্য আঙ্গারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম মাহমুদ দীর্ঘদিন ধরে অসৎ চরিতার্থের নিমিত্তে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে আসছেন। শ্রেণি কক্ষে পাঠদানের অজুহাতে বিভিন্ন ভঙ্গিমায় ছাত্রীদেরকে অশ্লীল ভিডিও দেখিয়ে শ্লীলতাহানি করে থাকেন। এসব অপকর্মের কথা অভিভাবকদের জানাতে চাইলে বেত্রাঘাত ও পরীক্ষায় ফেল করার হুমকি দিয়ে ছাত্রীদের জিম্মি করে রাখেন ওই সহকারী শিক্ষক। শ্লীলতাহানির ঘটনা ছাত্রীদের মাধ্যমে অভিভাবকরা জানতে পারলে ২৩ জানুয়ারি প্রধান শিক্ষককে মৌখিকভাবে অবহিত করে বিচার দাবি করেন। কিন্তু এতেও কোন সুরাহা না হওয়ায় তারা ২৫ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর অভিযোগ দেয়। এছাড়াও এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণে ভূমিহীন সমিতির বাল্যবিবাহ ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির নেতৃবৃন্দ এলাকাবাসীর গণস্বাক্ষর নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে স্মারকলিপি প্রদান এবং সংবাদ সম্মেলন করে। এরই প্রেক্ষিতে ২৯ জানুয়ারি উপজেলা শিক্ষা অফিস তদন্ত করে এবং ১ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শুনানি করে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় তা জেলা শিক্ষা অফিসে পাঠায়। তদন্ত রিপোর্টে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩ বিধি অনুচ্ছেদ (খ) আওতাভুক্ত অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেন।

এই শিক্ষককে শুধু বরখাস্ত নয়, তার কঠিনতম শাস্তি দাবি করেন অভিভাবকরা।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোপী চাঁদ রায় বলেন, শ্লীলতাহানির বিষয়ে ছাত্রী ও অভিভাবকদের লিখিত অভিযোগ কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর তা তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সহকারী শিক্ষক সিরাজুলকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এরকম শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তা নাহলে পরবর্তীতে ছাত্রীরা নিরাপদে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসতে ভয় পাবে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এরশাদুল হক চৌধুরী জানান, এমন ঘটনা সত্যিই ন্যাক্কারজনক ও দুঃখজনক। অভিযোগ পাওয়ার পরপরই তা তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় জেলা শিক্ষা অফিসে পাঠানো হয়েছিল। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তা যাচাই-বাছাই করে অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাশিদা আক্তার বলেন, কোমলমতি বাচ্চাদের যৌন নির্যাতনের মত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। অভিভাবকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ ও গণশুনানি নেওয়া হয়েছিল। তদন্তে ও গণশুনানিতে ঘটনার প্রমাণ পাওয়ায় তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর সেই অভিযুক্ত শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/০২ফেব্রুয়ারি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :