লঞ্চ থেকে ঝাঁপিয়ে পড়া সেই যুবকের লাশ উদ্ধার
বরিশাল থেকে ঢাকা যাওয়ার লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ নগরীর কালিবাড়ি রোডের বাসিন্দা যুবকের লাশ উদ্ধার হয়েছে।
সোমবার সকালে মেঘনা নদীতে জেলেদের জালে যুবকের লাশ উদ্ধার হয় বলে পুলিশ ও যুবকের স্বজনরা জানিয়েছেন।
শুক্রবার রাতে বরিশাল-ঢাকা রুটের এমভি শুভরাজ- ৯ লঞ্চে ঢাকা যাওয়ার পথে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হন শেখ রেফাত মাহমুদ সাদ (২৭)।
সাদ নগরীর কালিবাড়ি রোডের ফ্লোরা ভিউর বাসিন্দা ঠিকাদার শেখ আসলাম মাহমুদের ছেলে।
লঞ্চের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে দেখা গেছে, রাত দেড়টার দিকে লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে সাদ।
বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমানুল্লাহ আল বারী জানান, সকালে মেঘনা নদীতে লাশ পেয়েছে।
সাদের মামা সাগরউদ্দিন মন্টি জানান, মেঘনা নদীতে জেলেদের জালে লাশ উঠে। পকেটে পাওয়া মোবাইল ফোন থেকে সিম বের করে জেলেরা তার বাবার ফোনে কল করে বিষয়টি জানিয়েছেন। সকাল আটটার দিকে তারা গিয়ে লাশ উদ্ধার করেছেন।
মন্টি আরো জানান, নদীতে ঝাঁপ দেয়ার আধা ঘণ্টা পূর্বে প্রেমিকার সাথে ঝগড়া হয়েছে। চাকরি নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিল সে। তাই অভিমানে লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে বলে ধারণা করছেন যুবকের মামা মন্টি।
তার বাবা শেখ আসলাম মাহমুদ বলেন, বিএম কলেজ থেকে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্স করেছে। আবুল খায়ের গ্রুপ অব কোম্পানিতে তার নিয়োগ হয়েছে। শনিবার সেখানে যোগদানের কথা ছিল। চাকরিতে যোগদান করতে শুক্রবার বরিশাল থেকে শুভরাজ-৯ লঞ্চে ঢাকা রওনা হয়।
শেখ আসলাম মাহমুদ বলেন, আমার ছেলে বলে বলছি না সাদ খুব ভাল ছেলে ছিল। নম্র, ভদ্র ও ধার্মিক ছিল। সে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ত ও রোজা রাখত। তার মধ্যে কখনো অস্বাভাবিকতা দেখিনি। যাওয়ার সময় আমার ও তার মায়ের কাছ থেকে দোয়া নিয়েছে। তার হাতে ও মায়ের কপালে চুমু দিয়েছে। যাওয়ার সময় আরো বলেছে, ঢাকা গিয়ে যদি টাকার প্রয়োজন হলে পাঠিয়ে দিও। আমিও তাকে বলেছি, তুমি জানালে পাঠিয়ে দেব। কেন, কি হলো আমি বুঝতে পারছি না।
প্রতিবেদককের কাছে আসা লঞ্চের সিসি টিভি ফুটেজ থেকে দেখা গেছে, শুক্রবার রাত ১টা ১৬ মিনিটে লঞ্চের দ্বিতীয় তলার কেবিনে পাশে রেলিং ধরে নদীর দিকে তাকিয়ে রয়েছে। লঞ্চ থেকে নিচে তাকিয়ে দেখেছে। রাত ১ টা ৩৩ মিনিটে রেলিংয়ের উপর উঠে ঝাঁপ দিতে গিয়ে থেমে যায়। এক পা রেলিংয়ের বাইরে দিয়ে কিছু সময় দাঁড়িয়ে ছিল। পাশে আরো দুজন যাত্রী থাকলেও তারা বিষয়টি খেয়াল করেনি। মিনিটখানেক সময় দাঁড়িয়ে থাকার পর নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে সাদ।
(ঢাকাটাইমস/১০এপ্রিল/এলএ)