ধর্ষণ মামলায় খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি শহীদুর কারাগারে

খুলনা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৮ মে ২০২৩, ১৮:০১ | প্রকাশিত : ০৮ মে ২০২৩, ১৭:২৫

খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুকৃবি) এক নারী কর্মীর করা ধর্ষণের মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক উপাচার্য (ভিসি) ড. শহীদুর রহমান খানকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে-৩-এর বিচারক আব্দুস ছালাম সোমবার বিকালে এ আদেশ দেন বলে নিশ্চিত করেছেন স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদ আহম্মেদ।

তিনি বলেন, ‘ধর্ষণ মামলায় সাবেক ভিসি শহীদুর রহমান খান আজ জামিনের আবেদন করেছিলেন। বিচারক তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।’

একই মামলায় আরেক আসামি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান রেজিস্ট্রার খন্দকার মাজহারুল আনোয়ার আগের দিন রবিবার স্থায়ী জামিন পেয়েছেন।

গত ১৩ মার্চ খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. শহীদুর রহমান খান ও বর্তমান রেজিস্ট্রার খন্দকার মাজহারুল আনোয়ারের নামে আদালতে ধর্ষণ মামলার আবেদন করেন এক নারী।

আদালতের নির্দেশে পরদিন ধর্ষণ মামলার এজাহার গ্রহণ করে খুলনার সোনাডাঙ্গা মডেল থানা। মামলায় দুই আসামি এতদিন উচ্চ আদালতের জামিনে ছিলেন। রবিবার তাদের জামিনের মেয়াদ শেষ হয়।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, শহীদুর রহমান খান উপাচার্য থাকাকালীন খুকৃবির অস্থায়ী অফিসের পঞ্চম তলায় থাকতেন। তিনি ভুক্তভোগী নারীকে খাবারের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব দেন। ওই নারী প্রতিদিন তাকে খাবার পৌঁছে দিতেন। সেই সুবাদে ভুক্তভোগী নারীকে বিভিন্ন সময়ে ‘কুপ্রস্তাব’ দিতে থাকেন উপাচার্য।

একপর্যায়ে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে খাবার দিতে গেলে পরিকল্পিতভাবে রেজিস্ট্রারের সহযোগিতায় উপাচার্য তাকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ এনেছেন ওই নারী।

আদালত সূত্রে জানা যায়, চাকরি ও সামাজিক অবস্থানের কথা ভেবে কাউকে কিছু না জানিয়ে ভুক্তভোগী নারী তার স্বামীকে তালাক দেন। এরপর থেকে ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে শহীদুর রহমান খান ওই নারীর সঙ্গে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে মেলামেশা করতে থাকেন।

একপর্যায়ে মেয়াদ শেষে বদলি হয়ে যান উপাচার্য শহীদুর। তিনি ওই নারীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি সাবেক ভিসি খুলনায় এলে তার সঙ্গে দেখা করেন ওই নারী। তিনি সাবেক ভিসিকে বিয়ে করার আকুতি জানান। তবে ভিসি তাতে রাজি হননি।

প্রসঙ্গত, ড. শহীদুর রহমান খান ছিলেন খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান।

শহীদুর রহমান খান উপাচার্য থাকাকালীন ৪২৬ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। মাত্র ৩৫০ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে ৪২৬ জন শিক্ষক ও কর্মচারী খুকৃবিতে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল এবং মাত্র তিন বছরে ৪৩টি বিভাগ খোলা হয়েছিল।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) তদন্ত করে এসব নিয়োগে অসঙ্গতি খুঁজে পাওয়ার কথা জানায়। ইউজিসির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত বছরের ৩ আগস্ট উপাচার্যের স্বজনসহ ৭৩ জন শিক্ষক-কর্মচারীর নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

আর গত বছরের নভেম্বরে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দুদক খুকৃবির নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটির উপ-পরিচালক এরশাদ মিয়াকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। গত ২৪ জানুয়ারি শহীদুর রহমান খানের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত শুরুর কথা জানায় দুদক।

(ঢাকাটাইমস/০৮মে/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :