রাজউক কর্মচারীর ভয়ঙ্কর প্রতারণা, কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ

বিভিন্ন নারীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে কোটি কোটি টাকা ও সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিএমপি ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম দক্ষিণ বিভাগ। গ্রেপ্তারকৃতের নাম শ্রী দেবাশীষ কুমার সাহা।
মঙ্গলবার রাতে ডিএমপি ডিবির সাইবার বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ডিবি জানায়, দেবাশীষ রাজউকের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হওয়ায় তার পরিচিতি ব্যবহার করে প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন নারীদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলতেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি নারীদের সরলতার সুযোগ নিয়ে তাদের রাউজেকের বিভিন্ন প্লট কিনে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তাদের সম্পত্তি বিক্রির মাধ্যমে নগদ টাকা আত্মসাৎ করতেন। পরে প্রতারিত ব্যক্তিরা টাকা ফেরৎ চাইলে তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তি, আইনজীবী সাংবাদিক, ছাত্রলীগ নেতাদের নাম ব্যবহার করে হুমকি দিতেন।
ডিএমপি ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম দক্ষিণ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন ও অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. সাইফুর রহমান আজাদের নেতৃত্বে থানায় করা এক ভুক্তভোগীর মামলার তদন্ত করতে গিয়ে তার প্রতারণার চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। পরে ডিবির সাইবার টিম তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে দেবাশীষ কুমার সাহাকে গ্রেপ্তার করে।
দেবাশীষের প্রতারক হয়ে উঠার গল্প
গ্রেপ্তাকৃত আসামি শ্রী দেবাশীষ কুমার সাহা ঢাকার রাজউকে কর্মরত থাকার সুবাদে নিয়মিত নানা লোকের সঙ্গে তার পরিচয় হতে থাকে। তিনি এর সুযোগ নিয়ে ক্রমাগত তাদের সঙ্গে পরিকল্পনা মোতাবেক সখ্য গড়ে তুলতে থাকেন। এক পর্যায়ে ওই সরলতার সুযোগে দেবাশীষ ওই পরিচিত লোকের বাসা বাড়িতে যাতায়ত করার সুযোগ নিতেন। আর বাড়িতে যাতায়াতের সুবাদে বিশেষ করে নারীদের টার্গেট করে সম্পর্ক গভীর করতেন। বিত্তশালী এবং অভিবাবকহীনদের সরলতার অসহায়ত্বের সুযোগে তাদের সম্পত্তির নানান তথ্য হাতিয়ে নিতেন। এই তথ্য সংগ্রহ করে তাদের রাজউকের নানান জায়গায় প্লট বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলে কৌশলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করে নিয়েছেন।
কত টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন?
সাইবার টিম জানায়, দেবাশীষ কুমার সাহা রাজউকে কর্মরত থাকায় ভুক্তভোগী সম্পত্তি সংক্রান্ত সমস্যা তার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করেন। ওই ভুক্তভোগীর সমস্যা এবং সরলতার সুযোগে দেবাশীষ তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ওই ভুক্তভোগীর বাবা মারা যাওয়ার পর তাদের জমি-জমা ও প্লট সংক্রান্ত কাজে দেবাশীষের সঙ্গে ভুক্তভোগীর ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে উঠে। ভুক্তভোগীর আগের ঢাকার রামপুরা থানার মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার বাসায় থাকার সময়ে দেবাশীষ ২০১৯ সাল থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর মাসের বিভিন্ন সময় ও তারিখে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে রাজউকের ঝিলমিল এবং পূর্বাচলে প্লট দেয়ার আশ্বাস দেন। তখন ভুক্তভোগীকে দিয়ে দুইটি ফ্লাট বিক্রি বাবদ দুই কোটি ৬০ লাখ টাকা ও ১৫০ ভরি স্বর্ণ বিক্রি বাবদ এক কোটি ২০ লাখ টাকা, একটি প্লট বিক্রি বাবদ দুই কোটি ১০ লাখ টাকা, সঞ্চয়পত্র বিক্রি বাবদ ৫০ লাখ টাকা, এলিয়ন প্রাইভেটকার গাড়ি বিক্রি বাবদ ১০ লাখ টাকা, মন্দিরের প্লট পূর্বাঞ্চলে বরাদ্দ করে দেবে বলে ৫০ লাখ টাকা, দেবাশীষের অজ্ঞাতনামা পরিচিত বন্ধুর প্লট দেয়ার আশ্বাস বাবদ এক কোটি ৫০ লাখ টাকা, তার পরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে ঝিলমিল প্রজেক্ট থেকে তার নামের প্লট ভুক্তভোগীর কাছে বিক্রি করবেন বলে মিউচুয়্যাল ট্রাস্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ৩০ লাখ টাকা- এভাবে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে মোট আট কোটি ৮০ লাখ টাকা দেবাশীষসহ অজ্ঞাতনামা দুই থেকে তিনজন প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন।
ঢাকাটাইমস/৩০মে/এএ/ইএস
সংবাদটি শেয়ার করুন
অপরাধ ও দুর্নীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
অপরাধ ও দুর্নীতি এর সর্বশেষ

বার ভাঙচুর-মদ লুট: তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের ৩ নেতা গ্রেপ্তার

অন্যের স্বত্ব নিয়ে দুর্নীতি: কপিরাইট অফিসের দুই কর্মচারী এখন অঢেল বিত্ত ভৈববের মালিক

পুলিশ সার্জেন্টকে মারধরের অভিযোগে কারাগারে জনতা ব্যাংকের ডিএমডির স্ত্রী-মেয়ে

উত্তরায় ছিনতাইকারী ধরতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল যুবকের

রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার ৫০

আরসার গান কমান্ডার মুছা গ্রেপ্তার, বিপুল বিস্ফোরক-গোলাবারুদ উদ্ধার

মোহাম্মদপুরের সন্ত্রাসী ‘রক্তচোষা জনি’ গ্রেপ্তার, বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার

উত্তরায় মানি এক্সচেঞ্জে অভিযান, ৪০টি দেশের মুদ্রাসহ গ্রেপ্তার ৫

‘তেজগাঁওয়ে এলোপাতাড়ি গুলির ঘটনার ফুটেজ প্রচার হওয়ায় অপরাধীরা আত্মগোপনে’
