রাজধানীতে ২৬ বছর আগের হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার

অনলাইন ডেস্ক
 | প্রকাশিত : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৩:০০

রাজধানীর আরকে মিশন রোডের আলোচিত কলেজ ছাত্র রুবেল হত্যাকাণ্ডে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-২। গ্রেপ্তারকৃতের নাম আরশাদ ওরফে আসাদ। দীর্ঘ ২৬ বছর পর রাজধানীর কোতয়ালি থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

মঙ্গলবার সকালে র‌্যাব-২ এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) শিহাব করিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

র‌্যাব জানায়, ১৯৯৬ সালের জানুয়ারি মাসে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ডেমরা থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়। ওই সময়ে রাজধানীর গোলাপবাগ ও গোপীবাগ এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রুপ ‘তিন ভাই গ্রুপ’ নামে পরিচিত ছিল। এই গ্রুপের প্রধান মামুন ও তার সহযোগীরা অবাধে গোপীবাগ ও গোলাপবাগ এলাকায় মদ, গাঁজা, হেরোইন ও ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন নেশাজাতীয় দ্রব্য বিক্রি করত। এলাকার কিশোররা তাদের কাছ থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ে সেবন করে বিভিন্ন অসামাজিক কাজে লিপ্ত হতো। মামলার ভুক্তভোগী এনামুল ইসলাম রুবেল গোলাপবাগ ও গোপীবাগ এলাকায় সন্ত্রাস ও মাদক নির্মূল করে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য বন্ধুরা মিলে ‘সন্ত্রাস নির্মূল প্রতিরোধ কমিটি’ নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর এনামুল ইসলাম রুবেল ও তার বন্ধুরা গোপীবাগ ও গোলাপবাগ এলাকায় ‘তিন ভাই গ্রুপের’ সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদেরকে তাদের অবৈধ কাজ থেকে বিরত থাকতে চাপ সৃষ্টি করে। ভুক্তভোগী এনামুল ইসলাম রুবেলের প্রতিষ্ঠিত ‘সন্ত্রাস নির্মূল প্রতিরোধ কমিটির’ চাপে মাদক ব্যবসায়ীরা এলাকায় টিকতে না পেরে আশপাশের এলাকায় চলে যায়। তারা সেখানে একইভাবে মাদক বিক্রি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে শুরু করে। পাশের এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদক বিক্রির কথা শুনে রুবেল ও তার বন্ধুরা সেখানে গিয়ে মাদক ব্যবসা বন্ধের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। ফলে সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ হয়ে রুবেলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৯৯৬ সালের ৫ জানুয়ারি ডেমরা থানার হোটেল সী-কুইনের সামনে রুবেলকে ছুরি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে রাস্তায় ফেলে যায়। তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে তার বন্ধুরা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তিনি মারা যান।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ ঘটনায় রুবেলের মা বাদী হয়ে ‘তিন ভাই গ্রুপের’ লিডার মামুনসহ আরও কয়েক জনের ডেমরা থানায় একটি মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দীর্ঘ তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। মামলার অন্যতম গ্রেপ্তারকৃত আসামি আরশাদ ওরফে আসাদ ১৮ মাস কারাভোগ করার পর নিয়মিত হাজিরা দেওয়ার শর্তে মুচলেকা দিয়ে আদালত থেকে জামিন নেন। কিন্তু পরবর্তীতে ওই আসামি আদালতে হাজিরা না দিয়ে পলাতক থাকেন। আসাদ পলাতক থাকা অবস্থায় আদালত চলতি বছরের ৭ সেপ্টেম্বর তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

র‌্যাবের ভাষ্যমতে, রায়ের পর থেকে আরশাদ ওরফে আসাদ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করেন। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য র‌্যাব-২ এর একটি আভিযানিক দল গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। সোমবার বিকালে র‌্যাব-২ এর একটি দল ঢাকার কোতোয়ালী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসাদকে গ্রেপ্তার করে। র‌্যাব জানায়, আত্মগোপনে থাকার সময়ে আসাদ পরিচয় লুকিয়ে বাস কাউন্টারের টিকেট বিক্রয়ের কাজ করতেন।

গ্রেপ্তারকৃত আরশাদ ওরফে আসাদ রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার মো. শহিদ উল্লাহর ছেলে।

(ঢাকাটাইমস/২৬সেপ্টেম্বর/এএ/এফএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অপরাধ ও দুর্নীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :