রাজপথে আ.লীগকে মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি বিএনপির

জাহিদ বিপ্লব, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৩, ০৮:৩৭ | প্রকাশিত : ২৪ অক্টোবর ২০২৩, ০৮:৩৬

সরকার পতনের এক দফা দাবিতে ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। এই মহাসমাবেশের মাধ্যমে চূড়ান্ত আন্দোলনে শেষধাপে পৌঁছাতে চায় দলটি। আর সরকারও একই দিনে রাজধানীতে বড় ধরনের শোডাউনের ঘোষণা দিয়েছে।

যেহেতু একইদিনে সরকার ও বিরোধীদলের বড় ধরনের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে, তাই সহিংসতা ও সংঘাত এড়িয়ে রাজপথে আওয়ামী লীগকে মোকাবেলা করতে সবধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। এ লক্ষ্যে ধারাবাহিক প্রস্তুতি সভা ও যৌথসভা করছে সহযোগী সংগঠনগুলোও। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা করছেন মতবিনিময় সভা। এছাড়া দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাদের সঙ্গেও ধারাবাহিক বৈঠক করছেন বিএনপির হাইকমান্ড।

বিএনপি নেতারা মনে করছেন, যেহেতু একইদিন রাজধানীতে ক্ষমতাসীনরা সমাবেশ করবে, তাই সরকার সেদিন গণপরিবহন বন্ধ করবে না। তবে, নেতারা আশঙ্কা করছেন রাজধানী অভিমুখে আসা নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করতে পারেন সরকার সমর্থকরা। সেদিকে দৃষ্টি রেখে বিভিন্ন পরিকল্পনা করছে বিএনপির হাইকমান্ড। ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে বাধা-বিঘ্ন এলে কীভাবে তা উপেক্ষা করে সমাবেশে অংশ নেবেন নেতাকর্মীরা সেই কৌশলও ঠিক করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমরা স্মরণকালের সবচেয়ে বড় জনসমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। জনগণও এ সমাবেশে আসার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। যেখানে গণতন্ত্র থাকে সেখানে আওয়ামী লীগ থাকে না। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলা করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘তারা সংঘাতের উদ্দেশ্যেই একইদিনে পাল্টা সমাবেশ ডেকেছে। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় তা গ্রহণযোগ্য নয়।’

এদিকে পূর্বের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এই বৃহৎ সমাবেশ সফল করতে দলের শীর্ষনেতাসহ বিভিন্ন ইউনিট প্রধান ও মহানগর প্রধানদের সঙ্গে স্কাইপিতে নিয়মিত কথা বলছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সরকার কীভাবে সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতে পারে, প্রশাসন কীভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে সেদিক থেকে চিন্তা করেই রোডম্যাপ করা হচ্ছে।’

২৮ অক্টোবর দেশের ৬৪টি জেলার প্রতিটি উপজেলা, ইউনিয়ন থেকেই সর্বোচ্চ সংখ্যক লোক আনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিএনপি। তবে ঢাকা ও আশপাশের জেলাগুলো থেকেই যেন বেশি সংখ্যক লোক মহাসমাবেশে অংশ নেন সেই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ঢাকায় কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে জেলায় জেলায় প্রতিবাদ-প্রতিক্রিয়া দেখানোর প্রস্তুতি নেয়ার কথাও বলা হচ্ছে।

মহাসমাবেশকে ঘিরে সিনিয়র নেতাসহ সরব নেতাদের গ্রেপ্তারের আশঙ্কা মাথায় রেখে মহাসমাবেশের আগে থেকেই সর্তকতা অবলম্বন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে হাইকমান্ড থেকে। তারপরও যদি কেন্দ্রীয় নেতারা গ্রেপ্তার হন সেক্ষেত্রে বিকল্প নেতৃত্বকে প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রথম সারির নেতারা গ্রেপ্তার হলে দ্বিতীয় ও তৃতীয় সারির নেতারা মহাসমাবেশ বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দেবেন।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বিএনপির আর পেছনে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সরকারের পক্ষ থেকে বাধা দিলে সমাবেশে লোকসংখ্যা আরও বেশি হবে। যেখানে বাধা দেয়া হবে সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। মহাসমাবেশে দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ অংশ নেবে। ২৮ অক্টোবর রাজধানী ঢাকা বিএনপির দখলে থাকবে।’

এ বিষয়ে গাজীপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শওকত হোসেন চেয়ারম্যান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘গাজীপুর মহানগরের ৮টি থানা ও সব ওয়ার্ডে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। এটিই এ সরকারের বিরুদ্ধে সর্বশেষ বৃহৎ সমাবেশ। সরকারের সব বাধা মোকাবিলা করার প্রস্তুতি আমরা রেখেছি। আমরা আশা করি ২৮ অক্টোবর সর্বোচ্চ উপস্থিতি নিয়ে মহসমাবেশে উপস্থিত হব।’

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শাখাওয়াত হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমরাতো দেখছি প্রশাসন ইতোমধ্যে বিএনপির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। বাসাবাড়ি, বাজার ও আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি থেকে গণহারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। নিজ চেম্বার থেকে আইনজীবীদের আটক করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ বিভিন্নভাবে উসকানি দিচ্ছে। আমরা তাতে ভয় পাই না। জনগণ এ মহাসমাবেশ সফল করতে মরিয়া। এটি বুঝতে পেরে সরকার মারমুখী হয়েছে। যাই করুক, নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরের জনগণ সব বাধা মোকাবিলা করে ২৮ তারিখের মহাসমাবেশে যোগ দেবে।’

(ঢাকাটাইমস/২৪অক্টোবর/জেবি/এফএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :