রাষ্ট্রপতির অনুমতি পেলে ২৯ ডিসেম্বর থেকে মাঠে নামবে সেনাবাহিনী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৩:৪২ | প্রকাশিত : ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ২১:১১

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগামী ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ১৩ দিনের জন্য সারাদেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন চেয়েছে নির্বাচন কমিশন। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে মোতায়েন হবে সেনাবাহিনী। কাজ করবে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী।

সোমবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে তথ্য জানান সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

তিনি বলেন, নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন হোক সেটা নির্বাচন কমিশন চায়। এটা একটা প্রারম্ভিক আলোচনা। কীভাবে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন হবে, কোথায় কোথায় তারা কীভাবে কাজ করবে সেই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। মূলত, সেনা মোতায়েনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রপতির কাছে অনুরোধ করবেন, তার ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি সিদ্ধান্ত দিলে অবশ্যই নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে। আমি নির্বাচন কমিশনকে আশ্বস্ত করেছি, তারা যেভাবে সশস্ত্র বাহিনীর সহায়তা চাইবেন, সেইভাবে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন চায় সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন হোক। ব্যাপারে আমার সামান্যতম সন্দেহ নেই। একটি সুন্দর গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশন খুবই সিরিয়াস। রাষ্ট্রপতি নির্দেশে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন হলে নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব যেন সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে পারে।

অতীতের নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হয়েছে এবারও রাষ্ট্রপতি অনুমতি দিলে ইনশাল্লাহ সেনা মোতায়েন হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এবারও ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারের আওতায় সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন হবে।

সেনা সদস্যরা কীভাবে মোতায়েন হবেএমন প্রশ্নের জবাবে পিএসও বলেন, বিষয়ে আজকের সভায় আলোচনা হয়নি। আমরা প্রারম্ভিক আলোচনা করেছি। রাষ্ট্রপতি সেনা মোতায়েনে সম্মতি দিলে আমরা কর্মপরিকল্পনা তৈরি করব। সেনা মোতায়েনে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব পাঠানোর বিষয়ে নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

কতদিনের জন্য সেনা মোতায়েনের বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে লে. জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৩ দিনের জন্য মোতায়েনের জন্য মোটামুটি আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে আলোচনা শুনে মনে হয়েছে, উনারা (ইসি) চাচ্ছেন সুষ্ঠু, স্বচ্ছ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে চান। আমরা আশ্বস্ত করেছি, সশস্ত্র বাহিনী থেকে যেভাবে সহায়তা চান, সেভাবেই দেওয়া হবে।

সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নামছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এত বিস্তারিত আলোচনা হয়নি।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীর ৩৫ হাজারের বেশি সদস্য মোতায়েন ছিল। এবারের নির্বাচনে যদি বেশি প্রয়োজন হয়, তাহলে বেশি সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করব।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে সেনাসদস্য মোতায়েনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কী না-জানতে চাইলে প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার বলেন, অতীতে যেভাবে মোতায়েন হয়েছে, সেভাবেই বিদ্যমান আইন অনুযায়ী হবে।

ব্রিফিংয়ে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তথা সশস্ত্র বাহিনী সদস্যরা কীভাবে সহায়তা করতে পারবে সে বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। সেই প্রাথমিক আলোচনায় সশস্ত্র বাহিনী বিভাগকে সার্বিক সহায়তা একটি পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য নির্বাচন কমিশন অনুরোধ জানিয়েছে।

এর আগে সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে সভাকক্ষে সভা শুরু হয়। প্রায় সোয়া দুই ঘণ্টা বৈঠক চলে।

বৈঠকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লেফট্যানেন্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের (সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, পিএসও) নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল এবং নির্বাচন কমিশনের পক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম।

ইসি সূত্রে জানা যায়, এবারের নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাড়ে সাত লাখ সদস্য ভোটের মাঠে কাজ করবে। তাদের মধ্যে আনসার সদস্য লাখ ১৬ হাজার জন, পুলিশ ্যাব এক লাখ ৮২ হাজার ৯১ জন, কোস্টগার্ড দুই হাজার ৩৫০ জন এবং বিজিবি সদস্য থাকবেন ৪৬ হাজার ৮৭৬ জন। এর পাশাপাশি সেনা সদস্যদের রাখতে চায় ইসি।

ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনি প্রচারণা চলবে জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। ভোটগ্রহণ হবে জানুয়ারি।

(ঢাকাটাইমস/১১ডিসেম্বর/এলএম/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :