টঙ্গীতে শ্রমিক অসন্তোষ, ছয় কারখানায় ছুটি ঘোষণা
গাজীপুরের টঙ্গীতে দুটি পোশাক কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পর শ্রমিক আন্দোলন এড়াতে পার্শ্ববর্তী ছয়টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
সোমবার সকালে পোশাক শ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামোতে পাওনা পরিশোধের দাবিতে টঙ্গীর বিসিক এলাকার সুমি অ্যাপারেলস লিমিটেড ও দিশারী ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেড নামক কারখানা দুটিতে শ্রমিক অসন্তোষের এ ঘটনা ঘটে।
শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনায় আন্দোলন ঠেকাতে বেলা বারোটার দিকে পার্শ্ববর্তী ত্রিভলী অ্যাপারেলস লিমিটেড, জিন্স এ্যান্ড পোলো, রেডিসন গার্মেন্টস লিমিটেড, আর বি এস ফ্যাশন অ্যাপারেলস লিমিটেড, বেলিসীমা অ্যাপারেলস লিমিটেড ও পেট্রিয়ট ইকো গার্মেন্টস লিমিটেড নামক ছয়টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
গত বছরের ৯ এপ্রিল গঠিত ন্যূনতম মজুরি বোর্ডে শ্রমিক ও মালিক পক্ষের প্রতিনিধিদের দাবি অনুযায়ী গেজেটে পোশাক শ্রমিকদের গ্রেড সংখ্যা সাত থেকে কমিয়ে পাঁচ করা হয়।
গত ১ ডিসেম্বর থেকে নতুন মজুরি কার্যকর এবং জানুয়ারিতে নতুন কাঠামোয় পোশাক শ্রমিকরা বেতন পাবার কথা থাকলেও চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে কারখানা দুটির মালিক শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করে নি।
শ্রমিক সূত্রে জানা যায়, কারখানা দুটির কয়েক হাজার শ্রমিক গত শনিবার কাজে যোগ দিয়ে ডিসেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করার দাবি জানান। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ নতুন মজুরি কাঠামোতে বেতন পরিশোধ করতে পারবে না বলে জানান।
রবিবার (৭ জানুয়ারি) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সারা দেশে সাধারণ ছুটি শেষে আজ সোমবার সকালে কারখানা দুটির শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে গিয়ে কারখানার প্রধান ফটকে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখতে পেয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।
করখানার কয়েকজন শ্রমিক বলেন, কারখানা দুটি একই মালিকের। গত শনিবার নতুন মজুরি কাঠামোতে বেতন পরিশোধের দাবি জানালে কারখানা মালিক তাতে রাজি হন নি। আজ সকালে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধের নোটিশ টাঙিয়ে দিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
পরে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা পার্শ্ববর্তী ছয়টি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের তাদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দিতে অনুরোধ করে। এদিকে দুপুরে ওই ছয়টি কারখানার কর্তৃপক্ষ তাদের কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেন।
জিন্স এন্ড পোলো লিমিটেডের মানব সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন মিলন বলেন, শ্রমিক বিক্ষোভ এড়াতে আমাদের কারখানাসহ (জিন্স এন্ড পোলো) পার্শ্ববর্তী আরও পাঁচটি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। আগামীকাল থেকে কারখানায় শ্রমিকরা কাজে যোগ দেবেন।
এ বিষয়ে জানতে কারখানা দুটির জেনারেল ম্যানেজারের দায়িত্বে থাকা মো.স্বপনের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক (টঙ্গী জোন) মো. ওসমান আলী বলেন, সকালে শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিসিক এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বেলা একটার দিকে ঢাকার বিজিএমইএ ভবনে চলে গেছে বলেও জানান তিনি।
(ঢাকাটাইমস/০৮জানুয়ারি/প্রতিনিধি/পিএস)