গাজীপুর বিআরটিএর অফিস সহকারীর ভাই-ভাতিজার দালাল সিন্ডিকেট

অফিস সহকারী কামরুজ্জামান একসময় নিজেই ছিলেন বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটি) চিহ্নিত দালাল। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সম্পর্ক সৃষ্টি করে চাকরি নেন বিআরটিএর অফিস সহকারী পদে। এখন তার কক্ষে ভাই, ভাতিজা ও শ্যালককে দিয়ে করাচ্ছেন দালালি। তাদের হাত ছাড়া কোনো লাইসেন্সের কাগজপত্র গ্রহণ হয় না অফিসে।
শুরুতে ছিলেন টাঙ্গাইল বিআরটিতে। পরবর্তীতে নানা কৌশলে বদলি হন গাজীপুরে। এখানেই আধিপত্যের খুটি স্থাপন করেন কামরুজ্জামান।
বিআরটিএ গাজীপুর সার্কেলে অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত কামরুজ্জামান ২০১৮ সালের ৩১ মে টাঙ্গাইল বিআরটিএতে যোগ দেন। পরে নানা কৌশলে বদলি হয়ে গাজীপুরে এসে তার আগের দালালি ব্যবসায় মনোযোগ দেন। তবে আগের মতো নয়, নতুন আঙ্গিকে দালালি সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন। পরিচিত ব্যক্তি ও নতুন যারা তার কাছে আসেন, তাদের পাঠিয়ে দেন তার ভাই এরশাদ, ভাগিনা কাদের, ভায়রা মনির ও চাচা বাবুলের কাছে, লাইসেন্সের দরদাম করতে।
কামরুজ্জামানের রুমের ভেতরে সার্বক্ষণিক তার শ্যালক মারুফকে দেখা যায়৷ লাইসেন্সের বিভিন্ন জটিলতা দেখিয়ে তাকে দিয়ে সব সমাধান করেন কামরুজ্জামান। দিন শেষে মোটা অঙ্কের টাকা আসে তার টেবিলে।
একটি সরকারি অফিসের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ও কম্পিউটার কীভাবে একজন বহিরাগত লোক ব্যবহার করে, সেই প্রশ্ন উঠেছে। গাজীপুর বিআরটিএর সহকারী পরিচালক হারুন অর রশীদের রুমের সামনেই রয়েছে ড্রাইভিং লাইসেন্স ডেলিভারি কাউন্টার। সেখানেও নিয়মিত বসতে দেখা যায় কামরুজ্জামানের শালা মারুফকে।
এখানে আসা অনেকে বলেন, সাধারণ মানুষ যখন অফিসের ভেতর অফিসারের চেয়ারে বসা মারফকে দেখেন, তখন তারা ভাবেন সে বিআরটিএতে চাকরি করেন। এর ফলে তাকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিতে তারা আস্থা পান। এভাবে কামরুজ্জামানের দাপটে গাজীপুর বিআরটিএ অফিসে গড়ে উঠেছে পারিবারিক দালাল সিন্ডিকেট।
এসব বিষয়ে বিআরটিএ গাজীপুর সার্কেলের অফিস সহকারী কামরুজ্জামানের মুঠোফোন কল করে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। একপর্যায়ে তিনি প্রতিবেদককে তার অফিস কক্ষে চা খাওয়ার দাওয়াত দেন।
তবে, গাজীপুর বিআরটিএর সহকারী পরিচালক হারুন অর রশীদ জানান, এসব বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(ঢাকাটাইমস/১০নভেম্বর/মোআ)

মন্তব্য করুন