উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে আ.লীগকে পুনর্বাসনের অভিযোগ বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫৪
অ- অ+

যাদের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটেছে, তাদেরই অন্যতম যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে দলটিকে পুনর্বাসনের অভিযোগ উঠেছে কুমিল্লার মুরাদনগরে। রীতিমতো সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেছে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা।

মঙ্গলবার মুরাদনগর উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন। একই সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয় সেখানে।

সংবাদ সম্মেলনে মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব মোল্লা মজিবুল হক অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়বিষয়ক এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও তার চাচাতো ভাই ওবায়েদ উল্লাহর সহযোগিতায় মুরাদনগরে আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাকর্মীদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। এসব নেতাকর্মী মুরাদনগরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করছে। এসব কর্মকাণ্ডে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বাধা দেওয়ায় তাদের গ্রেপ্তার ও বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।

আরও দাবি করা হয়, মুরাদনগরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কমিটিতে উপদেষ্টা আসিফের চাচাতো ভাই ওবায়েদ উল্লাহকে আহ্বায়ক করে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীকে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনের ঘনিষ্ঠ সহচর গোলাম কিবরিয়াকে জাতীয় নাগরিক পার্টিতে জায়গা করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া রমজানের শুরুর দিকে শ্রীকাইল ইউনিয়নের যুবলীগের সভাপতি আনোয়ারকে এনসিপির ব্যানারে সজ্জিত গাড়ি দিয়ে এলাকায় আনা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির ২০–২৫ জন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। তাদের অভিযোগ, গত ২৪ মার্চ মুরাদনগরের কোম্পানীগঞ্জ সিএনজি স্ট্যান্ডে ওবায়েদ উল্লাহ সিরিয়াল ভেঙে সিএনজি নিতে চাইলে অন্য সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকরা বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওবায়েদ উল্লাহ সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সজীবসহ তরুণদের ডেকে এনে অন্য সিএনজিচালকদের মারধর করেন ও তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এছাড়া সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে কুমিল্লার পুলিশ সুপার পরিবর্তন, নতুন পুলিশ সুপার এসেই মুরাদনগর ও বাঙ্গুরা থানার ওসিকে বদল করে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন করছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। এসব ঘটনায় তারা নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানান।

মুরাদনগরে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা গত ৫ আগস্টের পরও মামলা-হামলার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। তিনি দাবি করেন, মুরাদনগরে এনসিপিতে যারা আছেন, তারা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাকর্মী।

তবে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা এবং বনোয়াট বলে দাবি করেছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনের বিষয়টি তার নজরে এসেছে। আসিফের দাবি, স্থানীয় একজন চাঁদাবাজের সহযোগীদের রক্ষার জন্য তার ওপর এই দোষারোপ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘গত ২৪ মার্চ রাতে মুরাদনগরে একজন চাঁদাবাজকে (ইউনিয়ন পর্যায়ের এক শ্রমিক দল নেতা) ছাড়াতে থানায় হামলা করেছিল বিএনপি। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে থানায় হামলা করা হয়। থানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, পুলিশ আহত হয়, এমনকি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যারা চাঁদাবাজির অভিযোগ করতে থানায় গিয়েছিলেন, তাদেরও আহত করা হয়।’

আসিফ জানান, ‘থানায় হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করে। সেই ঘটনায় জড়িতদের পুলিশ খুঁজছে। ওই অপরাধীদের শেল্টার দেওয়ার জন্যই সংবাদ সম্মেলন করে পাল্টা ব্লেম দেওয়া হচ্ছে। অথচ থানায় হামলার ঘটনাটা সারা দেশের মানুষ দেখেছে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে হামলার ভিডিও–ও প্রকাশ হয়েছে।’

(ঢাকাটাইমস/৯এপ্রিল/এজে)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
দেশপ্রেম ও পেশাদারিত্ব যখন অপরাধ হয়ে ওঠে: রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমানের নীরব কূটনৈতিক যুদ্ধ
বিভেদের রাজনীতি আমাদের ঐতিহ্য নষ্ট করেছে: মির্জা ফখরুল 
ট্রেন মিস করলেন তাবিথ আউয়াল?
গিয়াস কাদের চৌধুরী ও গোলাম আকবর খোন্দকারকে বিএনপির শোকজ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা