নো রিস্ক, নো গেইন
সার্চ কমিটির কাছে নাম না দেয়ার জন্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির কাছে বিনীত নিবেদন। আজকের পত্রপত্রিকার খবরে জানা যাচ্ছে সন্ধ্যায় স্থায়ী কমিটি সভা করে পাঁচ জনের একটি নামের তালিকা নাকি বিএনপি সার্চ কমিটির কাছে দেবে। এ খবরে জনমনে আবার হতাশা দেখা দিয়েছে। এই মুহূর্তে ইসির কোনো নাম প্রস্তাব দেয়া বিএনপির জন্য বুমেরাং হবে বলে রাজনৈতিক সচেতন মহল মনে করে।
ইসি গঠন করা সরকারের দায়িত্ব। সরকার চিন্তা করবে কাদেরকে দিলে নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে। এটা বিরোধীদলের দায়িত্ব নয়। আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য হওয়া ছাড়া সরকারের সামনে আর কোনো বিকল্প নাই। সরকারকে ক্ষমতায় থাকতে হলেও সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করাতে হবে এবং ক্ষমতা থেকে সন্মানজনক ভাবে সরে যেতে হলেও সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সরকারকেই করাতে হবে। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সরকারের সমস্যা এবং তা সরকারকেই সমাধান করতে হবে। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে সব বিরোধী দল এবং বিশেষ করে শুধুমাত্র বিএনপির সহযোগিতা সরকারকে নিতেই হবে। দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য বিএনপিকেও তাদের নিজের স্বার্থে সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে। তাই বিএনপিকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কীভাবে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সরকারকে সহযোগিতা করা যায় এবং কীভাবে নিজেদের সন্মান, সুবিধা নিশ্চিত করে দেশে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপির অবস্থান শক্তিশালী করা যায়।
আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন এখন বিএনপি ও আওয়ামী লীগের উভয়েরই টিকে ধাকার একমাত্র ওষুধ। তাই বিএনপির কাছে বিনীত অনুরোধ অযথা নড়াচড়া করার কোনো প্রয়োজন নাই এবং আগ বাড়িয়ে এখন কিছু বলারও দরকার নাই। কারণ সবাই জানে বিএনপির সহযোগিতা ছাড়া কখনই সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে না। সরকার যতই বাগাড়ম্বর করুক না কেনো সরকার সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য বিএনপির কাছে ধরা এবং সরকারের পক্ষে এখন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের বাইরে যাওযাও সম্ভব নয় এবং গেলে সরকার নিজেই ফাঁদে পড়বে। সরকার এত বোকা নয় যে নিজেকে সে ফাদে জড়াবে। সরকার তার চেয়ে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ঝুঁকি নেবে। কারণ এই সরকার জানে ‘নো রিস্ক, নো গেইন’। অতএব যার যা বোঝার তা নিজে নিজে বুঝে নিতে হবে।
লেখক- মেজর (অব.) আখতার, সাবেক সংসদ সদস্য।