সোনালি আঁশের বদলে পাটখড়িতে আশার আলো
একসময় বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান উৎস ছিল বলে পাটের আরেক নাম ছিল ‘সোনালি আঁশ’। সেই দিন ফুরিয়েছে অনেক আগে। মাঝে মাঝে বরং দাম না পেয়ে এই সোনালি আঁশ ফাঁস হয়েছে কৃষকের। ফলে দিন দিন কমেছে এর চাষ। মূল্য হারানো পাট এবার ভিন্নভাবে সম্ভাবনা হয়ে আসছে দেশের সামনে। তবে আঁশ নয়, তার বদলে পাটখড়ি দেখাচ্ছে নতুন আশার আলো।
ঘরের বেড়া বা জ্বালানি ছাড়া আর কোনো কাজে লাগতে পারে পাটখড়ি, বৈদেশিক মুদ্রা আয় হতে পারে তা দিয়ে, এ কথা ভাবেনি কেউ। অথচ এই পাটখড়ি থেকে এখন আসছে বৈদেশিক মুদ্রা। পাটখড়ি পুড়িয়ে কার্বন বা চারকোল তৈরি হচ্ছে পাবনায়। আর তা যাচ্ছে সুদূর চীনে।
পাটখড়ি পুড়িয়ে কার্বন তৈরির জন্য ইতিমধ্যে দেশে গড়ে উঠেছে প্রায় ২৫টি কারখানা। এর মধ্যে দুটি আছে পাবনায়। এরই মধ্যে কারখানা দুটি স্থানীয় বাণিজ্যে সৃষ্টি করেছে নতুন দিক। সৃষ্টি হয়েছে কর্মসংস্থানেরও। ছোট পরিসরে শুরু হলেও আগামী দিনে এর পরিসর বাড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
তারা বলছেন, দেশে মোট উৎপাদিত পাটখড়ির অর্ধেক এই খাতে ব্যবহার করে এ থেকে বছরে প্রায় আড়াই লাখ টন কার্বন তৈরি সম্ভব, যা থেকে রপ্তানি আয় আসবে ৩২ কোটি ডলার বা আড়াই হাজার কোটি টাকা। পাটখড়ির কার্বন উৎপাদক ও রপ্তানিকারকদের দাবি, এখন বছরে তাদের বৈদেশিক মুদ্রা আয় হচ্ছে ১৫০ কোটি টাকার মতো।
পাবনায় কার্বন তৈরির যে দুটি কারখানা রয়েছে, তার একটি এসজেজে জয়েন্ট কোম্পানির। এর ব্যবস্থাপক ওয়াহেদুজ্জামান জানান, চার বছর আগে কার্বন তৈরির এ পথ দেখান চীনা নাগরিক ওয়াং ফেই। তার দেখানো পথে দেশে এখন গড়ে উঠেছে ২৫টি কারখানা। এর মধ্যে পাবনার আটঘরিয়া ও বেড়া উপজেলার দুটি কারখানা গত বছরের মে মাসে উৎপাদনে গেছে। বিশেষ চুল্লিতে পাটখড়ি পুড়িয়ে প্রতিদিন সেখানে তৈরি হয় প্রায় সাড়ে তিন টন কার্বন।
পাটখড়ির চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় পাবনায় পাট চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে বলে জানান শ্রমিকরা।
পাবনা চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহসভাপতি মাহবুব-উল-আলম মুকুল ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘পাটখড়ি থেকে কার্বন তৈরির মাধ্যমে দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন হবে।’
(ঢাকাটাইমস/২৯জানুয়ারি/মোআ)