ড. কামালের মুখোশ খুলে দিন, নেতাকর্মীদের মতিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০১৮, ২০:২৭ | প্রকাশিত : ১৪ আগস্ট ২০১৮, ২০:২৫

সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বক্তব্য রাখায় গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের কড়া সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী। আওয়ামী লীগের সাবেক এই নেতার মুখোশ উন্মোচন করে দিতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী।

মঙ্গলবার যুবলীগের এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদাতবার্ষিকী ও ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

মহানগর নাট্যমঞ্চের আলোচনা সভায় মতিয়া বলেন, ‘আগস্ট মাসকে ঘিরেই ষড়যন্ত্র হয়। আজও অনেকেরই লাফালাফি দেখছি।’ ড. কামালের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘যুগে যুগে এরা আছে। যুবলীগের নেতাকর্মীদের প্রতি আমার আহ্বান, এদের মুখোশ খুলে দানবীয় চেহারাটা বাংলার জনগণের সামনে তুলে ধরেন।’

বঙ্গবন্ধুর সময়ের কথা তুলে ধরে বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘তাকে নিয়ে নানা গুঞ্জন থাকলেও সব ভুলে গিয়ে বঙ্গবন্ধু ড. কামাল হোসেনকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বানিয়েছিলেন। কিউবায় পাটের বস্তা রপ্তানি করার জন্য ৭৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার যখন গমের জাহাজ ঘুরিয়ে দিলেন তখন ড. কামাল হোসেনের উচিত ছিল তার বিরুদ্ধে কথা বলার। কাপুরুষ, উনি আর কী বলবেন।’

‘আজকে উনি হামকে বেটা রাব্বানা হয়েছেন। হ্যান কারেঙ্গা ত্যান কারেঙ্গা বলছেন। মনে রাখাবেন আজকের বাংলাদেশ স্যাটেলাইটের বাংলাদেশ। আজকের বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের বাংলাদেশ।’

রোহিঙ্গা ইস্যুকে কোনো কথা না বলায় ড. কামালানের সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে উনার মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হয় না, আজকে উনি গর্ত থেকে মুখ বের করেছেন।’

এসময় মতিয়া সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহারও সমালোচনা করেন। বলেন, ‘উনি নাকি কী রহস্য ফাঁস করবেন! করেন, আপনি যা পারেন করেন। শেখ হাসিনা দীপ্ত ও সাহসী নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে যেভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তাতে এই বিদেশিদের পা চাটারা টিকবে না।’

দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে যুবলীগের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান মতিয়া চৌধুরী।

যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী সম্মানিত অতিথি, প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব অ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর বিশেষ অতিথি, ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন বিশেষ অতিথি, যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন।

যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, ‘নতুন সাজে নতুন আঙ্গিকে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। বিএনপি হচ্ছে শয়তানের দল তারা ভুল করলেও ক্ষমা চায় না। বিএনপিকে দিয়ে আন্দোলন হবে না। তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারবে গুজব ছড়িয়ে।’

নির্বাচন নিয়ে করা বক্তব্যের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদার সমালোচনাও করেন যুবলীগ চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা হত্যাকাণ্ডের যে চক্রান্ত তা এখনও শেষ হয়নি। এই চক্রান্ত চলছে। জনগণের ক্ষমতায়নই পারে এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে। জনগণের সম্মিলিত শক্তি অজেয়।’

‘৭৫ এর ১৫ আগস্টের চক্রান্ত ছিল জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করে, বাংলাদেশের অস্তিত্ব বিলীন করা। বাংলাদেশকে আরেকটা পাকিস্তান বানানো। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা যদি ১৯৮১ সালে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশে না আসতেন, তাহলে আজ হয় তো এদেশই থাকতো না। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা তার বিশ্বশান্তির দর্শন ‘জনগণের ক্ষমতায়ন’ এর মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি আধুনিক সমৃদ্ধ রাষ্ট্রবির্নিমাণ করছেন। বাংলাদেশের বিস্ময়কর সাফল্যে ১৯৭১ এবং ১৯৭৫ এর পরাজিত শক্তি আবার ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নিশ্চয়ই এদেশের মানুষ এই ষড়যন্ত্রও রুখে দেবে।’

যুবলীগ নেতাকর্মীদের অনলাইনে আরও স্বক্রিয় হয়ে গুজবের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী সহকারী একান্ত সচিব অ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর। তিনি বলেন, ‘তারা আজকে অনলাইনের মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে গুজব ছাড়াচ্ছে। এজন্য আমি বলবো প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় সেল গঠন করে অনলাইনে এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। এই যুদ্ধে বিজয়ের কোনো বিকল্প নেই। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের পর আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনরায় শপথ না নেওয়া পর্যন্ত আমাদের সজাগ থাকতে হবে।’

সাঈদ খোকন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন- সাড়ে সাত কোটি বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। সেই সাড়ে সাত কোটি আজ ১৬ কোটি হয়েছে। আজ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছি।’

‘যদি আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ থাকে তবে কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না। সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাফর আহম্মেদ রানার পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন যুবলীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক মহিউদ্দিন আহম্মেদ মহি, সাংগঠনিক সম্পাদক মুহা. বদিউল আলম, ফজলুল হক আতিক, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কাজী আনিসুর রহমান, মিজানুল ইসলাম মিজু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সহসভাপতি মাইনুদ্দিন রানা, সোহরাব হোসেন স্বপন, সরোয়ার হোসেন মনা, হারুন অর রশিদ, মাহবুবুর রহমান পলাশ, মোরসালিন আহম্মেদ, যুগ্ম সম্পাদক ফারুক হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী সারোয়ার হোসেন বাবু, মাকসুদুর রহমান, কাজী ইব্রাহীম খলিল মারুফ, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আরমান হক বাবু, এমদাদুল হক, খন্দকার আরিফুজ্জামান প্রমূখ।

(ঢাকাটাইমস/১৪আগস্ট/টিএ/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :