দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই: ডিএমপি কমিশনার

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০১৮, ১৮:৪৯ | প্রকাশিত : ১৪ অক্টোবর ২০১৮, ১৮:০০

শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে কোনো ধরনের শঙ্কা কিংবা নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। বলেছেন, তবে সার্বজনীন নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় এনে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। রোববার বেলা ১১টায় শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। তবে এবার শুক্রবার বিসর্জনের দিন হওয়ায় কিছু ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে বলেও জানান ঢাকার পুলিশ প্রধান।

ডিএমপি কমিশনার জানান, দুর্গোৎসব জাতীয় বড় উৎসবের একটি। এই উৎসবকে ঘিরে সমন্বিত ও সুদৃঢ় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকা মহানগরীতে এবার ২৩৪টি সার্বজনীন দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে বড় মন্দির নয়টি। সেগুলো হচ্ছে- ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রামকৃষ্ণ মন্দির, কলাবাগান মন্দির, বনানী মন্দির, সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির, রমনা কালী মন্দির, উত্তরা সার্বজনীন পূজামণ্ডপ, কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট সমাজকল্যাণ সংঘ ও বসুন্ধরা সার্বজনীন পূজামণ্ডপ। এর বাইরেও সব মন্দিরেই কয়েক স্তরের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হবে।’

আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, প্রত্যেকটি মন্দিরে সিসিটিভি দিয়ে মনিটরিং করা হবে, প্রবেশকালে আর্চওয়ের ভেতর দিয়ে ভক্ত ও দর্শকদের প্রবেশ করতে হবে। পোশাকে পুলিশ, নারী পুলিশ ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন। স্বেচ্ছাসেবকরা আর্মডব্যাজ পরিহিত আলাদা পোশাকে নিয়োজিত থাকবেন। প্রত্যেক দর্শনার্থী ও ভক্তকে নিরাপত্তা বলয়, তল্লাশি ও মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে চেক করার পর প্রবেশ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ঢাকেশ্বরীর বাইরের প্রত্যেকটি মন্দিরেই সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে। ফায়ার টেন্ডার থাকবে। অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা থাকবে। পুরো পূজা উৎসব ঘিরে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোলরুম বসানো হয়েছে। যেখান থেকে সার্বক্ষণিক ডিউটিতে থেকে পূজা কমিটির নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করে নিরাপত্তা বিধান করা হবে।’

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ঢাকার প্রত্যেকটি বড় বড় মন্দির স্পেশাল ব্রাঞ্চ ও ডগস্কোয়াড দিয়ে সুইপিং করা হবে। র‌্যাব সদস্যরাও কাজ করবেন। কোনো ধরনের ছিনতাই ও ইভটিজিংয়ের ঘটনা যেন না ঘটে, সে জন্য সব গোয়েন্দা পুলিশ ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন। হকার বসতে ও ঢুকতে দেয়া হবে না।’

আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘বিজয়া দশমীর দিনে শোভাযাত্রা ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে বের হয়ে পলাশীর মোড়, জগন্নাথ হল, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর, সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, গোলাপ শাহ মাজার, বঙ্গবন্ধু স্কয়ার, সার্জেন্ট আহাদ পুলিশ বক্সের সামনে, নবাবপুর সড়ক, রায় সাহেব বাজার মোড়, বাহাদুর শাহ পার্ক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও পাটুয়াটুলি হয়ে সদরঘাটের ওয়াইজঘাটে গিয়ে শেষ হবে। সেখানে বুড়িগঙ্গা নদীতে প্রতিমা বিসর্জন হবে। শোভাযাত্রা ও বিসর্জন ঘিরেও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শোভাযাত্রার সামনে-পেছনে-মাঝে পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘আমরা পূজা উদযাপন পরিষদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছি। পূজা উৎসবে সব ধরনের পটকা, আতশবাজি, মাদকের ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে। নিরাপত্তা সুবিধায় বিজয় শোভাযাত্রায় উচ্চস্বরে বাজনা বন্ধ থাকবে। বিসর্জনের সময় নদীতে নৌ পুলিশ ও ডুবুরিরা মোতায়েন থাকবেন। সার্চলাইটের মাধ্যমে পর্যাপ্ত লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে।’

এবার বিসর্জনের দিন পড়েছে শুক্রবার। তাই আজান ও নামাজের সময় বাদ্য-বাজনা বন্ধ থাকবে। ওইদিন বেলা ১২টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত সকল ধরনের বাদ্য-বাজনা ও পূজার কার্যক্রম স্থগিত থাকবে বলেও জানান ডিএমপি কমিশনার। পুরো ঢাকা শহরে নিরাপত্তা চেকপোস্ট থাকবে। এজন্য পূজামণ্ডপে ছুরি, কাঁচি, পোটলা ও ব্যাকপ্যাক না নিয়ে আসার জন্য ভক্ত-দর্শনার্থীদের প্রতি তিনি অনুরোধ জানান।

তিনি বলেন, ‘কাউকে এসব নিয়ে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। শোভাযাত্রার রুটে অবাঞ্ছিত লোক, হকারদের বসতে দেয়া হবে না। চলাচলের ক্ষেত্রে সড়কে ডাইভারশন (নিয়ন্ত্রণ) করা হবে।’

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার শাহাবউদ্দিন কোরাইশী, মনিরুল ইসলাম ও কৃষ্ণপদ রায়।

(ঢাকাটাইমস/১৪অক্টোবর/এএ/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :