করোনা: স্বল্প দূরত্বে গণপরিবহন এড়িয়ে চলছে যাত্রীরা

নজরুল ইসলাম, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৯ মার্চ ২০২০, ২০:০২

বৃহস্পতিবার বিকাল চারটা। কারওয়ার বাজার সার্ক ফোয়ারা মোড়ের পুলিশ বক্স থেকে একটু সামনে কয়েকটি বাস দাঁড়িয়ে আছে যাত্রীর অপেক্ষায়। কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বাসের সামনে দিয়ে জনাচারেক মানুষ এগিয়ে যেতেই চালকের সহকারীরা নিজের বাসে ভেড়াতে উঠে-পড়ে লাগে। কিন্তু মানুষগুলোর কেউই সাড়া দেননি। তারা গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যান।

আধ ঘণ্টার বেশি সময় এই সড়কে দাঁড়িয়ে দেখা যায়, অনেক যাত্রী অফিস শেষ করে হেঁটে গন্তব্যে রওনা হচ্ছেন। অফিসফেরত এসব মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মহাখালী, ফার্মগেট, খামারবাড়ি, শাহবাগ, পুরান ঢাকাসহ আশপাশ এলাকায় বসবাসকারীরা যার যার গন্তব্যে হেঁটেই রওনা হয়েছেন।

কেবল দূরের গন্তব্যের যাত্রীরা যাদের পক্ষে হেঁটে কিংবা বেশি টাকা খরচ করে বিকল্প পরিবহনে যাওয়া সম্ভব নয়, তারাই গণপরিবহনে চড়ছেন।

সার্ক ফোয়ারার সামনে কথা হয় মহাখালী এলাকার বাসিন্দা নিজাম উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি জানান, বাংলামোটরে তার অফিস। করোনাভাইরাস সতর্কতা হিসেবে গত কয়েক দিন ধরে গণপরিবহন এড়িয়ে চলছেন তিনি।

নিজামের সঙ্গে আলাপ সেরে কথা হয় বেসরকারি চাকুরে জাকির হোসেনের সঙ্গে। তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘শাহবাগে আমার ব্যবসা। আমার বাসা রাজাবাজারে। আগে বাসে ফার্মগেট নেমে হেঁটে বাসায় যেতাম। এখন শাহবাগ থেকে হেঁটেই বাসায় যাচ্ছি।’

রাজধানীর কারওয়ান বাজার ছাড়াও ফার্মগেট, কলাবাগান, বাংলামোটর ও শাহবাগসহ কয়েকটি সড়ক ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

এসব সড়কে বেশ কয়েকজন বাসচালক ও তাদের সহকারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়া, গতকাল থেকে বাসে যাত্রীর সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। গতকালের মতো আজও যাত্রীর পরিমাণ কমেছে অনেকখানি।

ট্রাস্ট পরিবহনের এক চালকের তথ্যমতে, গত কয়দিন থেকে তার বাসে লোকজন কম উঠছে। তিনি বলেন, ‘দিন যত যাচ্ছে, বাসে তত লোকজন ওঠা কমেেছ। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের পরিবার নিয়া ঢাকা শহর থাকাই কষ্ট হয়া যাবে।’

হিমাচল পরিবহনের চালকের এক সহকারী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘মামা, আমগো তো টিকিট করা গাড়ি। লোকজন খুব উঠতেছে না বাসে। দেখেন, বাসের বেশির ভাগ সিট খালি।’

গত বছরের ডিসেম্বরের শেষের দিকে চীনের উহান শহরে প্রথম নোভেল করোনাভাইরাস দেখা যায়। শুরু হওয়ার পর ভাইরাসটি চীনে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাসটি। ইতিমধ্যে বিশে^ আট হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে এই ভাইরাসে। আক্রান্ত প্রায় দ্ইু হাজার।

দেশে গত ৮ মার্চ প্রথম তিনজনের করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংবাদ আসে। আজ পর্যন্ত দেশে মোট ১৭ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর)। আর মারা গেছেন একজন।

করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংবাদে এখন সারা দেশে সব শ্রেণির মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে আইইডিসিআর করোনাভাইরাস ইস্যুতে উদ্বিগ্ন না হয়ে এর সংক্রমণ ঠেকাতে জনসমাগম ও গণপরিবহন এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে আইইডিসিআর।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকও এক সংবাদ সম্মেলনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গণপরিবহন এড়িয়ে চলার অনুরোধ করেছেন।

(ঢাকাটাইমস/১৯মার্চ/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :