নতুন কাপড় কিনে কি করব!

ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলার আবাইপুর ইউনিয়নের একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রাম 'মীনগ্রাম'। এই গ্রামে আমাদের আদি নিবাস। আমরা তিন ভাইবোন,আমি আর আমার দুই বোন। আমি আমার বাবা মায়ের প্রথম সন্তান। আমার বাবা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন, এখন অবসরপ্রাপ্ত।
সারা জীবন আমার জন্য অনেক কষ্ট করেছেন কিন্তু আমি সেই কষ্টের প্রতিদান দিতে পারি নি। ৩৭ বছরের জীবন আমার, জীবনে কোন ঈদ বাড়ির বাইরে থাকি নি। ২০০৮ সাল থেকে নিয়মিত ঢাকায় বসবাস করছি। প্রতি ঈদে বাড়িতে যায়, বাবা সবকিছু ঠিক রাখেন একেবারে বাসের টিকিট পর্যন্ত।
আমি যে বাসে বাড়ি যায়, বাসটি আমাদের বাড়ির পাশ দিয়ে আমাদের উপজেলা শহরে যায়। ঈদের সময় বাবার জন্য আমি পাঞ্জাবি কিনি কিন্তু এবার আমি বাড়ি যাচ্ছি না বলে বাবা কোনো নতুন পাঞ্জাবি কেনে নি। আমি অনেকবার ফোন করে বললাম আপনার যা প্রয়োজন কিনে ফেলুন,বাবা মন খারাপ করে বললেন, 'আমার কিছু দরকার নেই'।
তুমি, তোমার ছেলে মেয়ে বাড়ি আসতে পারছো না আমি নতুন কাপড় কি করব।তুমিই আমার কাছে সবচেয়ে বড়।গ্রামে আমার অনেক বন্ধু, যাদের সাথে ছোট বেলা থেকেই বেড়ে ওঠা,বন্ধুরা বিভিন্ন ধরনের পেশায় যুক্ত থাকার কারণে ঈদের সময় সবার সাথে দেখা হয়, যে কয়দিন থাকি সবাই একসাথে থাকি,সারাদিন বাড়ির পাশের বাজারে আড্ডা, ঘোরাঘুরি কত কি।
বন্ধুরা মিলে একটা সংগঠন বানিয়েছি সবাই মিলে নাম ঠিক করেছি 'সম্প্রীতি'। এবার আর কারো সাথে দেখা হচ্ছে না এতেই মনটা ভারি হয়ে ওঠছে। কষ্ট পাচ্ছি বাবামায়ের জন্য, কষ্ট পাচ্ছি বন্ধুদের জন্য। করোনা কাল দ্রুত কেটে যাক,সবাই সুস্থ থাকি, ভালো থাকি।
লেখক: আবৃত্তি শিল্পী
ঢাকাটাইমস/২২মে/এসকেএস

মন্তব্য করুন