এমপি পাপুলের আটকাদেশ আরও এক মাস বাড়ল

মানব ও মুদ্রাপাচারের অভিযোগে কুয়েতে আটক বাংলাদেশের সাংসদ কাজী শহীদ ইসলাম পাপুলের আটকাদেশ আরও এক মাস বাড়ানো হয়েছে। আটকের ৭৭ দিনের মাথায় এ নিয়ে পাঁচবার পাপুলের আটকাদেশ বাড়াল কুয়েতের সুপ্রিম কোর্ট।
গতকাল রবিবার কুয়েতি আরবি দৈনিক আল কাবাসের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। আল কাবাসের খবরে বলা হয়, গতকাল রবিবার কুয়েতের সুপ্রিম কোর্টে আটকাদেশ পুনর্বিবেচনা বিষয়ক বিচারকের চেম্বারে হাজির করা হলে বিচারক বাংলাদেশি সাংসদ পাপুলকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কারাগারে রাখার নির্দেশ দেয়।
খবরে আরও বলা হয়, পাপুল ছাড়াও কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশিক্ষণবিষয়ক সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি মেজর জেনারেল শেখ মাজন আল-জারাহ এবং অন্য দুই কুয়েতি নাগরিক হাসান আবদুল্লাহ আল খাদের ও নওয়াফ আলী আল শালাহিকেও আটকাদেশ পুনর্বিচেনাবিষয়ক বিচারের চেম্বারে হাজির করা হয়। এ সময় বিচারক অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মুক্তি দিতে অপারগতা জানিয়ে উল্টো আটকাদেশের মেয়াদ বাড়ান।
এর আগে চারবার পাপুলের জামিন নাকচ করে আদালত তাকে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়েছে। এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে মামলার চার্জগঠন করা হয়েছে।
মানব ও মুদ্রা পাচারের অভিযোগে কুয়েতের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) কর্মকর্তারা গত ৬ জুন পাপুলকে তার বাসা থেকে আটক করে। এরপর গোয়েন্দাদের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে পাপুল কুয়েতের রাজনীতিবিদ, সরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের প্রভাবশালী লোকজনকে ঘুষ দিয়ে অনৈতিকভাবে ব্যবসা পরিচালনার কথা স্বীকার করেছেন। তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে মেজর জেনারেল মাজেনসহ বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় কুয়েত সরকার।
সাধারণ শ্রমিক হিসাবে কুয়েত গিয়ে বিশাল সাম্রাজ্য গড়া পাপুল ২০১৮ সালে লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পাপুলের মালিকানাধীন মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি কাজ করেন বলে কুয়েতে বাংলাদেশ কমিউনিটির ধারণা।
কোম্পানির ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, সেবা খাত, নিরাপত্তা, নির্মাণ, আবাসন, পরিবহন, তেল শোধন প্রভৃতি খাতে কার্যক্রম রয়েছে মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপের। কুয়েতের বাইরে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে ব্যবসায় রয়েছে তাদের।
পাপুলের বিরুদ্ধে ওঠা মানবপাচারের অভিযোগ তদন্ত হওয়ার বিষয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছিল। সে সময় কুয়েত সিআইডির বরাত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে মানবপাচার নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে কুয়েতি পত্রিকা আল কাবাস ও আরব টাইমস।
(ঢাকাটাইমস/২৪আগস্ট/এনআই/এমআর)

মন্তব্য করুন