শেখ রেহানার শুভ জন্মদিন

অধ্যাপক ডা. মো. শারফুিদ্দন আহমেদ
  প্রকাশিত : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৫:৩৫
অ- অ+

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা ১৯৫৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহন করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকরা বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করে। সে সময় জার্মানিতে বড় বোন শেখ হাসিনার সংগে থাকায় বেঁচে যান শেখ রেহানা।

দুঃসহ যন্ত্রণার সেই দিনগুলোতে বসবাস করতেন জার্মানিতে, পরবর্তীতে সেখান থেকে ভারতে চলে যান দুই বোন। পরে শেখ রেহানা পরিবার নিয়ে যুক্তরাজ্যে যান। যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার পর থেকে সেখানেই থাকেন তিনি।

বড় বোন শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। চার দফায় দেশের প্রধানমন্ত্রীও হয়েছেন তিনি। তবে দেশের সবচেয় ঐতিহ্যবাহী ও শীর্ষ রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হয়েও কখনও সক্রিয় রাজনীতির সমনের সারিতে আসেননি শেখ রেহানা। একজন সাধারনের মতই জীবনযাপন করেন শেখ রেহানা। যেন একদম সাদাসিধে একজন নারী। বাড়িতে কখনও আদিখ্যেতা কিংবা অহংকার মনোবৃত্তি পোষন করেননি। দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন নীরবে নিভৃতে। সংগ্রাম করে যাচ্ছেন জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে। সুযোগ্য মায়ের যোগ্য উত্তরসূরি তিনি। মা বেগম মুজিব পর্দার অন্তরাালে থেকে বঙ্গবন্ধকে দিয়েছিলেন সাহস ও অনুপ্রেরণা। আর এখন পর্দার অন্তরালে বড় বোন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাশে থেকে অনুপ্রেরনা দিয়ে যাচ্ছেন শেখ রেহানা।

শেখ রেহানার ইতিবাচক ভূমিকার কারনেই শান্তির আলোকবর্তিতা হাতে বিশ্বময় শেখ হাসিনা। শেখ রেহানা বেগম মুজিবের পরিপূরক হয়ে উঠেছেন তার কর্মে এবং যোগ্যতার মাপকাঠিতে।

শেখ হাসিনা বিভিন্ন আলোচনায় বলেছেন যে, শেখ রেহানা ছাড়া তিনি অচল, শেখ রেহানা ছাড়া তিনি পরিপূর্ণ নন। বিশেষ করে ২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেনের কথা মনে হলে শেখ রেহানার নাম সামনে চলে আসে। সে সময় আওয়ামী লীগকে বিভক্তির হাত থেকে বাঁচাতে, শেখ হাসিনার মুক্তির প্রক্রিয়াকে ত্বরানিত করতে এবং আন্তর্জাতিক মহলে আওয়ামী লীগ সম্পর্কে সঠিক ধারনা দিতে শেখ রেহানাই মূখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন।

শেখ রেহানা আওয়ামী লীগের বড় কোনো পদে জড়িত না থাকলেও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জটিল সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা তার সঙ্গে পরামর্শ করেন। শেখ হাসিনা তার বোনের মধ্যে বঙ্গমাতার ছায়া দেখতে পান। বঙ্গবন্ধু যখন বাংলাদেশের মুক্তির আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, ছয় দফা থেকে শুরু করে আগাড়তলা ষড়যন্ত্র মামলা, ৬৯ এর গণআন্দোলনে জীবন বাজি রেখেছিলেন বাঙালির মুক্তির জন্য সে সময় বিভিন্ন ভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছিলেন বঙ্গমাতা। কিন্তু তিনি কোন পদে ছিলেন না, ঠিক একই ভাবে শেখ হাসিনাকে ছায়াার মতো আগলে রেখেছেন শেখ রেহানা।

শেখ রেহানা একজন ‘রত্নগর্ভা মা’ও বটে। তিনি তার তিন সন্তানকে সঠিক উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। তাদের মধ্যে টিউলিপ সিদ্দিক ইতোমধ্যে ব্রিটিল পার্লামেন্টে একজন গুরুত্বপূর্ণ এমপি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ছেলে রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি একজন গবেষক এবং চিন্তাশীল ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ছোট মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রুপন্তী মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে এর মধ্যেই পাশ্চাত্যে সাড়া ফেলেছেন।

১৯৭৭ সালের জুলাই মাসের শেষ দিকে ড. সাদিক আহমেদ সিদ্দিকের সঙ্গে শেখ রেহানার বিয়ে হয় লন্ডনের কিলবার্নে। শফিক আহমেদ সিদ্দিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ও ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর ছেলেমেয়েদের মানুষ করার ব্যাপারেও শেখ রেহানা জোরালো ভূমিকা রেখেছিলেন। আজকে শেখ হাসিনার ছেলেমেয়েরা বিশ্বে সুপ্রতিষ্ঠিত। ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন এবং তার ফলাফল আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশ। মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল অটিজম ধারনাটিকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন এবং জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে সম্মাননা পেয়েছেন। এসব কৃতিত্বের ভাগিদার শেখ রেহানাও।

তিনি দেখিয়েছেন কিভাবে জীবন সংগ্রামে জয়ী হওয়া যায়। অসীম সাহস এবং সক্ষমতার পরিচয় দিয়ে তিনি অনেক জায়গায়ই সফলতার পরিচয় দিয়েছেন। শেখ হাসিনার সব থেকে আপনজন এবং গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা শেখ রেহানা। জাতির দুর্যোগ ও ক্লান্তিকালে সব সময় তিনি সুপরামর্শ দিয়ে থাকেন। অভিভাবক হিসেবেও তিনি অনন্য। তার জন্মদিনে জানাই সশ্রদ্ধ শুভেচ্ছা। শুভ হোক জন্মদিন। সুস্থ ও সুন্দর হোক আগামীর দিনগুলো।

লেখক: উপাচার্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, ঢাকা।

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
টয়োটার ব্যবসা হারাচ্ছে নাভানা?
সারজিস বনাম নওশাদ: ভোটে কার পাল্লা ভারি?
মনোহরদীতে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ছাত্রদল নেতা গণধোলাইয়ের শিকার
গণভবন জয় করেছি, এবার জাতীয় সংসদও জয় করব: নাহিদ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা