৮৭ বছরের পুরনো স্বাদের কাচ্চি মোহাম্মদপুরে

কাজী রফিক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:৩৪ | প্রকাশিত : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:৩৩

ভোজন রসিকদের অনেকের কাছে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে কাচ্চি। আর সেই কাচ্চির স্বাদে যদি জড়িয়ে থাকে তুর্কি বা মুঘল আমলের স্বাদ, তাহলে তো কথাই নেই!

২০২১ সালে এসে শত বছর আগের খাবারের স্বাদ পাওয়া অনেকটাই কঠিন। কেননা সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে অনেকেই স্রোতে গা ভাসিয়েছেন। তবে কালেভাদ্রে এমনও অনেকের দেখা মেলে, যারা ঐহিত্যকে টিকে রেখেছেন যুগের পর যুগ।

তাদেরই একজন ফজলুর রহমান। ৬৬ বছর বয়সী ফজলুর রহমান বাবার কাছ থেকে কাচ্চি রান্না শিখেছেন। তার বাবা ইসমাইল মিয়া সে সময়ের জনপ্রিয় কাচ্চি রাঁধুনি হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তৎকালীন নবাব বাড়ির শেফ ছিলেন ইসমাইল মিয়া। সেখান থেকে হোটেল পূর্বানীতে কাজ করেন তিনি।

ফজলুর রহমান জানান, বাবার কাছ থেকে বেশ সুপ্তভাবেই সব কিছু রপ্ত করেছেন তিনি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে তার রান্না করা কাচ্চির স্বাদ। বাবার কাছ থেকে শেখা কাচ্চির রেসিপি এখনো ধরে রেখেছেন ফজলুর রহমান। তিনি জানান, ৮৭ বছর ধরে তার পরিবার ঐতিহ্যবাহী এই কাচ্চি পরিবেশ করে আসছে।

বাবার থেকে কাচ্চি রান্না শেখার পর সেই রেসিপি তিনিও শিখিয়েছেন তার দুই সন্তানকে। তার প্রত্যাশা, আধুনিকতার তোড়ে যেন ঐতিহ্যের মৃত্যু না হয়।

গত চার দশকে ফজলুর রহমানের রান্না কাচ্চিতে লাখো মানুষের পেট ভরেছে। অর্জনটাও কম নন বলে জানিয়েছেন তিনি। শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক স্মৃতি সম্মাননা, মহাত্মা গান্ধী পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

ফজলুর রহমানের ভাষায়, কাচ্চি রান্না শুধু একটা রান্না নয়। এটি একটি শিল্প। যা বংশীয়ভাবে তিনি ধারণ করে আসছেন। শিখিয়েছেন তার পরবর্তী প্রজন্মকেও।

তিনি বলেন, কাচ্চি বিরিয়ানি পূর্বে যেভাবে তৈরি হতো এখন বর্তমানে সেভাবে মান বজায় রেখে করা হয় না বলে মনে করি। কাচ্চি বিরিয়ানি দম কুকিং হচ্ছে একটা আর্ট। আমি মনে করি, আমি এখনো প্রতিনিয়ত শিখছি। আমার দুই ছেলেকে রন্ধন প্রণালী রপ্ত করিয়েছি। তারা বেশ আগে থেকেই আমার ক্যাটারিং ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত।

সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকায় একটি ক্যাটারিং গড়েছেন মাস্টার শেফ হিসেবে খ্যাতি পাওয়া ফজলুর রহমান। নাম দিয়েছেন, ‘মাস্টার শেফ হাজি মোহাম্মদ ফজলুর রহমান ক্যাটারিং’।

ফজলুর রহমান ক্যাটারিংটির ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর করেছেন তার ছেলে মোহাম্মদ আশিকুর রহমানকে। বাবার হাত ধরে ঐতিহ্যের কাচ্চির পরিধি আরও বাড়াতে চান তিনি।

ঢাকা টাইমসের সঙ্গে আলাপকালে আশিকুর রহমান বলেন, অনেকে প্রতিদিন কল দিয়ে আমাদের ৫/৬ জনের খাবারের জন্য বলেন। যা আমরা এখন করতে পারছি না। আমরা আশাবাদী, খুব শিগগিরই আমরা একটা রেস্টুরেন্ট চেইন চালু করতে পারব। যাতে অনায়াসে আমাদের খাবার সবাই উপভোগ করতে পারেন। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ঐতিহ্যের স্বাদের কাচ্চি সবার কাছে পৌঁছে দেওয়াটা আমার লক্ষ্য।

করোনা মহামারিতে অনেকটা বেগ পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সব ধরনের অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় ক্যাটারিং ব্যবসা থমকে ছিল। লকডাউনের সময় কর্মীসংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনতে হয়েছিল। তবে এখন আবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন।

আশিকুর রহমান জানান, শুরুতে বড় বড় অনুষ্ঠানের অর্ডার নিতেন তারা। ছোট অর্ডারের দিকে খুব একটা নজর দেওয়ার সুযোগ ছিল না। তবে এখন ধরন পাল্টেছেন তিনি। ছোট আয়োজনেও ঐতিহ্যের কাচ্চি সরবরাহ করতে চান তিনি। এক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ১৬ জনের খাবারের অর্ডারও নিচ্ছেন তারা।

(ঢাকাটাইমস/১৪সেপ্টেম্বর/কারই/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

ফিচার এর সর্বশেষ

সস্তার পেয়ারার গুণে বশে থাকে ডায়াবেটিস-উচ্চ রক্তচাপসহ নানা জটিল রোগ

যে পাঁচ সমস্যায় আক্রান্তরা গুড় খাওয়ার আগে একবার ভাবুন, নইলে...

সাজেদুর রহমান শাফায়েতের স্বপ্ন পৃথিবী ঘুরে দেখা

খাওয়ার পরপরই চা পান উপকার না ক্ষতি? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা

জ্বরের মধ্যে যে পাঁচ খাবার খেলেই বিপদ! জানুন, সাবধান হোন

গরমে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে ডায়াবেটিস রোগীদের! সুস্থ থাকবেন যেভাবে

মুখে দুর্গন্ধের কারণে হা করতেও অস্বস্তি লাগে? সমাধান কী জানুন

লিভার ভালো রাখে লাউ! ওজন এবং উচ্চ রক্তচাপও থাকে নিয়ন্ত্রণে

কিডনি ভালো রাখে আমের পাতা! উচ্চ রক্তচাপও থাকে নিয়ন্ত্রণে

ইফতার ও সাহরিতে বাহারি আয়োজন ধানমন্ডির দ্য ফরেস্ট লাউঞ্জে

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :