পর্যটকদের পদচারণায় মুখর কুয়াকাটা সৈকত

এস কে রঞ্জন, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)
 | প্রকাশিত : ০৫ মে ২০২২, ১৭:০২

আকাশ মেঘাছন্ন। বইছে দখিনের বাতাস। মাঝে মাঝে হচ্ছে বৃষ্টি। একের পর এক সমুদ্রের ঢেউ তীরে এসে আছরে পড়ছে। ঈদের তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় প্রিয়জনদের সঙ্গে নিয়ে নেচে গেয়ে আনন্দে মেতেছেন হাজারো পর্যটক। কেউ আবার সৈকতের বেঞ্চে বসেই সমুদ্র ও প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। আবার কেউ কেউ মোটরসাইকেল নিয়ে সৈকতের এ প্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সৈকতের যেদিকে চোখ যায়, সেদিকে শুধু মানুষ আর মানুষ। মোট কথা, পর্যটকদের পদচারণায় মুখর সমুদ্র সৈকত।

স্থানীয়রা জানান, পর্যটকরা এখানে এসে সাগরের জলরাশি দেখা ছাড়াও একই স্থানে দাঁড়িয়ে উপভোগ করছেন সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য। বরিশাল-কুয়াকাটা সড়কের লেবুখালী পয়েন্টে সড়ক সেতু চালু হওয়ায় কুয়াকাটায় বেড়েছে পর্যটক। কুয়াকাটার কুয়া, লেম্বুরবন, নদীর মোহনা, গঙ্গামতির লেক, লাল কাঁকড়ার চর, মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধ বিহার, শ্রী মঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, রাখাইন পল্লীসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্পটগুলোতে ঘুরছেন পর্যটকরা। এসব দৃশ্য অনেকেই স্মার্ট ফোনে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোডও করছেন। এছাড়া নানা ধরনের সামুদ্রিক মাছের ফ্রাই ও বার-বি-কিউ দোকানসহ রাখাইন মহিলা মার্কেট, ঝিনুক মার্কেট,দর্শনীয় স্থানসহ দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার সৈকতে তিল যেন ঠাঁই নেই। এ সব পর্যটকের সার্বিক নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে।

তবে ঈদের প্রথম দিন থেকেই পর্যটকদের ঢল নেমেছে। এসব পর্যটক বেশির ভাগই ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসা। তবে আবাসিক হোটেল ও রিসোর্টগুলোর ৮০ ভাগ কক্ষই বুকিং হয়েছে। ঈদের পরবর্তী ৫-৬ দিন এমন অবস্থা থাকবে বলে জানিয়েছেন ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা টোয়াক’র সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম।

ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় আসা ট্যুরিস্ট গাইড বিডির সিইও মাকসুদ মাসুম বলেন, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত, যা পর্যটকদের কাছে ‘সাগরকন্যা’ হিসেবে পরিচিত। পদ্মা সেতু খুলে দেয়া হলে পর্যটক কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।

পর্যটক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এর আগেও বেশ কয়েবার কুয়াকাটায় এসেছি। তখন সৈকত অনেক বড় ছিল। ঝাউবাগানের পরিধি অনেকটা ছোট হয়ে গেছে। অনেক গাছ ভেঙে সৈকতে পরে আছে। অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো খুবই খারাপ। এতে করে পর্যটকদের চলাফেরায় অসুবিধা হচ্ছে। এছাড়া এখানকার বিনোদন কেন্দ্রগুলো আরও উন্নত করা দরকার।

তবে অপর এক পর্যটক রেজাউল করিম বলেন, সবসময় ছুটি পাওয়া যায় না। ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসলাম। তাই পরিবারের সবাইকে নিয়ে কুয়াকাটায় এসেছি। এতো মানুষ এক সঙ্গে কখনো দেখিনি। যে যার মতো আনন্দ করছে, এটা বেশ ভালো লেগেছে।

হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ জানান, এবারের ঈদের ছুটিতে কুয়াকাটায় অসংখ্য পর্যটকের আগমন ঘটেছে। ইতোমধ্যে প্রথম শ্রেণির হোটেল, মোটেল ও রিসোর্টগুলোর প্রায় রুমই আগাম বুকিং হয়ে গেছে।

মহিপুর থানার ওসি আবুল খায়ের বলেন, প্রতিদিনই থানা পুলিশের একটি টিম পর্যটকদের নিরাপত্তায় কাজ করছে। যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে থানা পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল খালেক বলেন, পর্যটকদের জন্য কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সাদা পোশাকেও নজরদারি করা হচ্ছে। ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি থানা পুলিশ ও র‌্যাব মহাসড়কে পর্যটকদের নির্বিঘ্নে যাতায়াত নিশ্চিত করতে কাজ করছে। এছাড়া সৈকতে ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম অবস্থান রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

(ঢাকাটাইমস/৫মে/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :