ওমরাহ পালনে সর্বনিম্ন বয়স পাঁচ বছর

ইসলাম ধর্মে পাঁচটি স্থম্ভের একটি হচ্ছে হজ। আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টির জন্য সামর্থ্যবান মানুষদের হজ ফরজ করা হয়েছে। যারা শারীরিক বা আর্থিকভাবে হজের আচার-অনুষ্ঠানের সামর্থ্য রাখে না, এমন লাখ লাখ মুসলমান প্রতি বছর ওমরাহ পালন করতে সৌদি আরবে ভিড় করেন। তাদের কথা চিন্তা করে এবার ন্যূনতম বয়স পাঁচে নামিয়ে এনেছে সৌদি আরবের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।

সৌদির ওমরাহ ও হজবিষয়ক মন্ত্রণালয় বলেছে, ওমরাহ’র জন্য অনুমোদিত ন্যূনতম বয়স পাঁচ বছর করা হয়েছে। তবে, বাবা-মা শিশুদের সঙ্গে নিয়ে প্রবেশ করতে পারে।

সৌদি আরবের গণমাধ্যম আজেল মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানিয়েছে, ‘পাঁচ বছরের শিশুদের জন্য ওমরাহ পালনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে, তারা যে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত নয়, তার প্রমাণপত্র দিতে হবে।’ সৌদি আরব সম্প্রতি সম্প্রতি পবিত্র মক্কা ও মদিনা পরিদর্শন ও লোকদের সুবিধার জন্য ইলেক্ট্রনিক মাধ্যম চালু করেছে।

সৌদি আরব সম্প্রতি ওমরাহ পালনকারীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর অংশ হিসেবে ‘ইউনিফায়েড গভর্নমেন্ট প্ল্যাটফর্ম’ নামে অনলাইনে একটি সহায়তা মঞ্চ চালু করেছে । ‘দ্য নুসুকডটএসএ’ নামে ওই সহায়তা মঞ্চ ওমরাহ পালনে ইচ্ছুকদের ভিসা, পারমিট ও প্রয়োজনীয় অন্যান্য সেবা পেতে সাহায্য করবে। এ সহায়তা মঞ্চের মাধ্যমে অনলাইনে ওমরাহ ভিসা পাওয়া সহজ করা হয়েছে।

চলতি মৌসুমে সাত ধরনের ভিসাধারীকে ওমরাহ পালনের অনুমতি দেয়ার ঘোষণা দেয় সৌদি সরকার। বলা হয়, ফ্যামিলি ভিজিট ভিসা, পার্সোনাল ভিজিট ভিসা, ই-টুরিস্ট ভিসা, অন অ্যারাইভাল তথা সৌদি এয়ারপোর্টে আসার পর দেয়া ভিসা, ইউরোপের ‘শেনজেন’ ভিসাধারীদের জন্য টুরিস্ট ভিসা, ইউএস ও ইউকে ভিসা, লাইসেন্সধারী পর্যটন প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া ওমরাহ ভিসা ও ‘মাকাম’ প্ল্যাটফর্ম থেকে পাওয়া ভিসাধারীরা চলতি বছর ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে প্রবেশ করতে পারবেন।

যারা ওমরাহ পালন করতে সৌদি আরবে যাচ্ছেন তারা সৌদি সরকারের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম মাকামের মাধ্যমে ওমরাহ ভিসা এবং এ সংক্রান্ত পরিষেবার প্যাকেজ বেছে নিতে পারবেন। এছাড়া দেশটির সরকারের ‘ইউনিফায়েড ন্যাশনাল ভিসা প্ল্যাটফর্মের’ মাধ্যমেও ওমরাহ ভিসা নেয়া যাবে।

সম্প্রতি পবিত্র ওমরাহর ই-ভিসার জন্য বাংলাদেশিদের আঙুলের ছাপ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ওমরাহর জন্য ই-ভিসা পেতে যাঁরা আঙুলের ছাপ নিবন্ধন করতে চান, তাঁদের অবশ্যই ‘সৌদি ভিসা বায়ো’ অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করতে হবে। তারপর তাঁদের ভিসার ধরন বেছে নিতে হবে। পাসপোর্টের তথ্য দিতে হবে।

পবিত্র ওমরাহ পালনে ইচ্ছুক মুসল্লিদের তাঁদের স্মার্টফোনে ‘সৌদি ভিসা বায়ো’ অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে। এই অ্যাপের মাধ্যমে ই-ভিসার জন্য নাম নিবন্ধন করতে হবে। এখানে আঙুলের ছাপ ও সেলফি দিতে হবে।

মুখমণ্ডলের একটি ছবি তুলতে হবে। পাসপোর্টের সঙ্গে এই ছবি মিলাতে হবে। সবশেষে ক্যামেরার মাধ্যমে ১০ আঙুলের ছাপ স্ক্যান করতে হবে।

মন্ত্রণালয় বলছে, এই সিদ্ধান্তের লক্ষ্য সৌদির বন্দরগুলো দিয়ে মুসল্লিদের সে দেশে প্রবেশের প্রক্রিয়া সহজ করা। ওমরাহ–যাত্রীদের জন্য ডিজিটাল অভিজ্ঞতা উন্নত করা।

উল্লেখ্য, পবিত্র কাবাগৃহের জিয়ারতই মূলত ওমরাহ। পবিত্র হজের সময় ছাড়া অন্য যেকোনো সময় পবিত্র কাবাঘরের তাওয়াফসহ নির্দিষ্ট কিছু কাজ করাকে ওমরাহ বলা হয়। ওমরাহ পালনে প্রধানত চারটি কাজ। দুটি কাজ ফরজ— ইহরাম পরিধান করা। পবিত্র কাবাগৃহ তাওয়াফ করা। আর দুটি কাজ ওয়াজিব—সাফা ও মারওয়ার মধ্যবর্তী (সবুজ বাতি) স্থানে সাতবার সাঈ করা। মাথার চুল মুণ্ডানো বা ছোট করা।

(ঢাকাটাইমস/১৪ ডিসেম্বর/আরজেড)