কালিয়াকৈরে বেড়েছে ভিক্ষুকদের উৎপাত

আশিকুর রহমান, কালিয়াকৈর (গাজীপুর)
 | প্রকাশিত : ২১ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:২৫

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে তীব্রভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে ভিক্ষাবৃত্তি। শুধু অক্ষম, দরিদ্র ব্যক্তিরাই নয় পাশাপাশি সক্ষমরাও নেমেছেন এই পেশায়। বিভিন্ন সমস্যার কথা বলে, চিরকুট দিয়ে, ভ্যানে করে মাইকে সাহায্য চেয়ে পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে বাজার ঘাট, বাস স্টেশন, সরকারি বেসরকারি প্রতিটি দপ্তরে ভিক্ষুকদের উৎপাত দিনদিন বেড়েই চলছে। ভিক্ষাবৃত্তির লাগাম টানতে কালিয়াকৈর উপজেলায় তালিকাভুক্ত ভিক্ষুকদের পুনর্বাসন সৃষ্টি পরিকল্পনা হাতে নিলেও তা নিয়ন্ত্রণ করতে বরাদ্দ ঘাটতিতে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন।

কালিয়াকৈর উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ঢাকাটাইমসকে জানান, উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় দুই বছর আগের তালিকা অনুযায়ী ৫৭৮ জন তালিকাভুক্ত ভিক্ষুক রয়েছে। আমাদের কাছে যে বরাদ্দ ছিল তার মধ্যে উপজেলার ঢালজোড়া ইউনিয়নে যাচাই বাছাই করে ৪০ জন পেশাদার ভিক্ষুকের তালিকা তৈরি করে তাদের পুনর্বাসন সৃষ্টি ও কর্মসংস্থা তৈরির মাধ্যমে ওই ইউনিয়নকে ভিক্ষুকমুক্ত করা হয়েছে। নতুন করে আমাদের কাছে সরকারি বরাদ্দ আসলে আরও পুনর্বাসন সৃষ্টির পাশাপাশি তাদের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করা হবে। এটি বাস্তবায়ন করে কালিয়াকৈর উপজেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত করতে আমরা কাজ করছি।

এদিকে সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার, কালিয়াকৈর বাস টার্মিনাল, বাজার রোড, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদ চত্বর, চন্দ্রা ত্রি-মোড়, পল্লীবিদ্যুৎ, সফিপুরসহ বিভিন্ন স্থানে সরকারি, বেসরকারি দপ্তর, স্কুল-কলেজ ও হাট বাজারে ভিক্ষুকদের লাইন লেগেই থাকে। এসব এলাকায় বেশির ভাগই সক্ষম ব্যক্তিরা এ পেশায় নেমেছেন।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, দুর্যোগ, নদী ভাঙন, পরিবার থেকে বঞ্চিত, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও অক্ষম ব্যক্তিদের পাশাপশি কিছু অসাধু ব্যক্তিরাও ভিক্ষাকে ব্যবসা হিসেবে নিয়েছে। বিভিন্ন লেবাস ধরে ভিক্ষার নানা কৌশল তারা অবলম্বন করছেন। হ্যান্ডবিল, চিরকুট লিখে জনসাধারণের হাতে তোলে দিয়ে ভিক্ষা চাইতে দেখা যায় তাদের। আবার তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মাইক বাজিয়ে সাহায্যের জন্য হাত পাতছেন পথচারীদের কাছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের প্রায় সব কয়টা ব্যস্ত স্থানে লাইন ধরে চলে ভিক্ষুকদের এমন উৎপাত।

কালিয়াকৈর বাজারে মোয়াজ্জেম হোসেন নামে এক দোকানদার জানান, সকালে দোকান খোলার পর থেকে সারাদিনে কমপক্ষে ২০-৩০ জন ভিক্ষুক আসে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই সক্ষম। আবার কিছু আছে শারীরিকভাবে অক্ষম। মানবিক কারণে তাদের ভিক্ষা দিতেই হয়।

কালিয়াকৈর উপজেলা কমপ্লেক্সের পাশে খোকন নামে এক দোকানদার জানান, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত একের পর এক ভিক্ষুক এসে দাঁড়িয়েই থাকে। শারীরিকভাবে অনেকেই সক্ষম। তাদের কাজের কথা বললে রাজি হন না। কিন্তু রোজ ভিক্ষা নিতে চলে আসে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ জানান, সরকারি বরাদ্দ এ উপজেলার ভিক্ষুকদের তালিকা অনুযায়ী পুনর্বাসন কেন্দ্র ও তাদের জন্য কর্মসংস্থান তৈরির মাধ্যমে ভিক্ষাবৃত্তি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আমরা সেটির জন্য কাজ করছি।

(ঢাকাটাইমস/২১জানুয়ারি/এলএ/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :