প্রয়াত চিত্রনায়ক শাহীন আলমকে মনে পড়ে?

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ০৮ মার্চ ২০২৩, ১১:৪২

নব্বইয়ের দশকের একজন জনপ্রিয় নায়ক ছিলেন শাহীন আলম। তার পুরো নাম শাহীনূর আলম শাহীন। এই অভিনেতা কাজ করেছেন প্রায় ১৫০টির মতো ছবিতে। এছাড়া তিনি মার্শাল আর্টে ব্ল্যাক বেল্ট বিজয়ী ছিলেন। আজ (৮ মার্চ) সেই জনপ্রিয় চিত্রনায়কের চলে যাওয়ার দিন। পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে এদিন তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি দেন।

২০২১ সালের ৮ মার্চ পুরান ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শাহীন আলম। তার কিছুদিন আগে তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। পাশাপাশি শাহীন আলমের দুটি কিডনিই বিকল ছিল। এছাড়া তিনি ডায়াবেটিসেও ভুগছিলেন। শারীরিক নানাবিধ এই সমস্যাগুলোই ৫৮ বছর বয়সে তার জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দেয়।

মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় ২০২১ সালের মার্চের শুরুতে আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন শাহীন আলম। শারীরিক অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় সে বছরের ৬ মার্চ তাকে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয়। সে সময় অভিনেতার শরীরে মারাত্মক জ্বর ছিল। দুদিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর ৮ মার্চ রাত ১০টার দিকে তিনি মারা যান।

আশির দশকে শাহীন আলমের অভিনয় জীবন শুরু হয়েছিল মঞ্চ নাটক দিয়ে। এরপর ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন তথা এফডিসি কর্তৃক আয়োজিত ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়ে চলচ্চিত্রে পথচলা শুরু করেন তিনি। তার অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘মায়ের কান্না’ ১৯৯১ সালে মুক্তি পায়।

প্রায় দেড়শ ছবিতে অভিনয় করা শাহীন আলম মান্না, ওমর সানী, সালমান শাহ, ইলিয়াস কাঞ্চন, আলেকজান্ডার বো এবং বর্তমান সুপারস্টার শাকিব খানসহ অনেকের সঙ্গে কাজ করেছেন। নায়কদের মধ্যে তার সবচেয়ে ভালো জোড়ি ছিলেন প্রয়াত সুপারস্টার নায়ক মান্না। একসঙ্গে বেশ কয়েকটি ব্যবসাসফল ছবি রয়েছে মান্না ও শাহী আলমের।

তবে মারা যাওয়ার কয়েক বছর আগে অভিনয় একেবারেই ছেড়ে দিয়েছিলেন প্রয়াত এই অভিনেতা। শুরু করেছিলেন ব্যবসা। পাশাপাশি নামাজ-রোজা শুরু করেছিলেন পুরোদমে। ২০২০ সালের একটি ইউটিউবকে দেওয়া সাক্ষাৎকার থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

ওই সাক্ষাৎকার থেকে আরও জানা গিয়েছিল, রাজধানীর গাউছিয়া মার্কেটে শাহীন আলমের একটি কাপড়ের দোকান আছে। করোনার মধ্যে সেই দোকানে বেচাকেনা একেবারেই কমে গিয়েছিল। বেশ দুর্দাশার মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। কারণ, ওই দোকানের আয় দিয়েই তার সংসার চলছিল। পাশাপাশি দুটি কিডনি বিকল ও ডায়াবেটিস থাকায় চিকিৎসার খরচ যোগাড়েও হিমশিম খাচ্ছিলেন।

সে সময় অভিনয় ছাড়া প্রসঙ্গে শাহীন আলম বলেছিলেন, ‘আমি তো মুসলমান। পরকালে বিশ্বাসী। আমাকে একদিন না একদিন ওই সর্বশক্তিমানের কাছে ফিরতেই হবে। তখন কী জবাব দেব? একটা মানুষ কত দিন বাঁচে? ধরুন খুব বেশি হলে ১০০ বছর বাঁচব। এরপর তো আল্লাহর কাছে গিয়ে জবাবদিহি করতে হবে। তাই আগে পরকালের হিসাবের খাতাটা ঠিক রাখতে হবে। সে জন্যই সিনেমা থেকে সরে এসেছি।’

যদিও শাহীন আলমের অভিনয় ছাড়ার পেছনে আরও একটি বড় কারণ আছে বলে শোনা যায়। এসএসসিতে ভালো ফল করতে না পারায় হতাশায় আত্মহত্যা করেছিলেন অভিনেতার একমাত্র মেয়ে। বাবা হিসেবে সেই ঘটনা মন থেকে মুছতে পারেননি তিনি। মেয়েকে হারানোর পর পরই বদলে যেতে থাকেন। ছেড়ে দেন অভিনয়। মন দেন ধর্মকর্ম আর ব্যবসায়ে।

(ঢাকাটাইমস/০৮মার্চ/এজে)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :