ইতালি যাওয়ার পথে সাগরে ট্রলারডুবি, ফরিদপুরের চার যুবক নিখোঁজ

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৫ মার্চ ২০২৩, ১৮:০০

লিবিয়া থেকে অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্য সাগরে ট্রলারডুবির ঘটনায় ফরিদপুরের দুই যুবককে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও এখনো চার যুবকের খোঁজ পায়নি পরিবার৷ তাদের পরিবারের সদস্যরা চরম উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় সময় পার করছেন। এসব যুবক থেকে ১০ লাখ টাকা খরচ করে দালালচক্রের মাধ্যমে অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়েন।

নিখোঁজ চারজন হলেন- ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ডাঙ্গী ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের মোস্তফা মাতুব্বরের ছেলে আল আমিন মাতুব্বর (২০), সোবাহান মোল্লার ছেলে মাহফুজ মোল্লা (২২), এসকেন মোল্লার ছেলে নাজমুল মোল্লা (২৩) সেকেন ব্যাপারীর ছেলে আকরামুল ব্যাপারী (২৭)

গত রবিবার বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে পড়ে লিবিয়া থেকে ৩০ ব্যক্তিকে নিয়ে ইতালি অভিমুখে যাত্রা করা নৌকাটি উল্টে যায়। এদের মধ্যে ১৭ জনকে সোমবার পর্যন্ত উদ্ধার করা হয় যাদের সকলেই অভিবাসনপ্রত্যাশী বাংলাদেশি নাগরিক। তাদের সিসিলির শহর পোজালোতে রাখা হয়েছে। এদের মধ্যে নগরকান্দার ডাঙ্গী ইউনিয়নের বিলগোবিন্দপুর গ্রামের নান্নু সররদারের ছেলে হৃদয় সরদার (২৫) আহমেদ ফরাজীর ছেলে রাসেল ফরাজী (২০) নামে দুজন রয়েছেন। নিখোঁজ আল আমীনের মা চামেলি বেগম (৩৮) বলেন, দুই মাস আগে তার ছেলে বিদেশ রওনা হয়। এরপর বিভিন্ন দেশ হয়ে গত বৃহস্পতিবার তাদের সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি নেয়ার জন্য ট্রলারে ওঠানো হয়।

তিনি জানান, দালালচক্রের এক সদস্য কৃষ্ণনগর গ্রামের বাসিন্দা মুরাদ ফকির (৩৬) গত সোমবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে সাগরে ট্রলারডুবির পর আল আমীনের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানান।

চামেলী বেগম বলেন, মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তার ছেলের সাথে সবশেষ কথা হয়। ওই দিন ভোর সাড়ে চারটার দিকে মুরাদ চামেলী বেগমকে ইমোতে জানান, তাদের ইতালির যাওয়ার জন্য স্পিডবোটে উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিখোঁজ যুবকদের পরিবারের সদস্যরা জানান, গত জানুয়ারি ইতালির যাওয়ার জন্য ঢাকা যান তারা। এরপর জানুয়ারি দুবাই যান। দুবাইয়ে চার দিন থাকার পর মিসর হয়ে ১২ জানুয়ারি নাগাদ তারা লিবিয়া পৌঁছান। এরপর বৃহস্পতিবার তাদের ট্রলারে উঠিয়ে দেয়া হয়।

স্থানীয়রা জানায়, দালালচক্রে মুরাদ ফকিরের সাথে ডাঙ্গী ইউনিয়নের মশাউজান গ্রামের ফরহাদ ফকির, বিলগোবিন্দপুর গ্রামের লিটন সরদার আবুল হোসেন এবং বাসাগাড়ি এলাকার কাদের মাতুব্বর নামে আরো চারজন রয়েছেন। মুরাদ ফকির লিবিয়া থাকেন। কিছুদিন আগে তিনি দেশে এসেছিলেন। ১৫ দিন আগে আবার লিবিয়া চলে যান। ডাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কাজী আবুল কালাম জানান, মুরাদ একজন মানব পাচারকারী। তিনি পর্যন্ত অন্তত ২০০ তরুণকে পাঠিয়েছেন। তিনি লোক পাঠিয়ে কয়েক কোটি টাকা আয় করেছেন। তার অবস্থা রাতারাতি ফুলেফেঁপে উঠেছে। এলাকায়বিদেশে পাঠাইনা মুরাদনামে তিনি পরিচিত। নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিরাজ হোসেন বলেন, এসব বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ভূমধ্য সাগরে ট্রলারডুবির ঘটনায় ১৭ বাংলাদেশিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। লিবিয়া থেকে অবৈধ পথে ভূমধ্য সাগর পাড়ি দিয়ে তারা ইতালি যাচ্ছিলেন। সোমবার ইতালি কর্তৃপক্ষ তাদের উদ্ধার করে উপকূলে নিয়েছে। ইতালির স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এএনএসএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উদ্ধার হওয়া ১৭ অভিবাসনপ্রত্যাশীর সবাই বাংলাদেশি নাগরিক। তাদের ইতালির সিসিলির শহর পোজালোতে রাখা হয়েছে। ইতালির কোস্টগার্ড জানিয়েছে, লিবিয়া থেকে ৩০ ব্যক্তিকে নিয়ে ইতালি অভিমুখে যাত্রা করা নৌকাটি গত রবিবার বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে পড়ে এবং উল্টে যায়।

(ঢাকাটাইমস/১৫মার্চ/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :