হাওয়াই মিঠাই বেচে সংসার চলে না, দুই ছেলের পড়াশোনা বন্ধ

শেখ সিরাজুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
 | প্রকাশিত : ২৬ এপ্রিল ২০২৩, ১৭:০০

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে আর গ্রামে ঘুরে ঘুরে হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করেন মিনার হোসেন। শিশুরা আনন্দ নিয়ে তার তৈরি হাওয়াই মিঠাই কিনলেও তার নিজের ঘরে আনন্দের রেশ নাই। সামান্য আয়ে সংসার চলে না। তাই নিজের শিশুপুত্রের পড়াশোনা বন্ধ রেখে পাঠিয়েছেন ফার্নিচারের দোকানে কাজ শিখতে। ছোট ছেলেও যাচ্ছে না স্কুলে।

৬০ বছর বয়সী মিনার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুর গ্রামের খোয়ালের পাড় কুতুবশাহর বাড়ির মৃত ইমাম হোসেনের ছেলে। তার মা ইরা বানু বার্ধক্যে উপনীত। অভাবের সংসারে কঠোর কঠিন সংগ্রামে টিকে আছেন মিনার।

তিনি জানান, পৈত্রিক জমিজমা বিক্রি হয়ে যাওয়ার পর ১০ বছর রাজমিস্ত্রির সহযোগী, একযুগেরও অধিক সময় ঢাকা ও সিলেটে লন্ড্রির দোকানে কাজ করেছেন। সবশেষে ৩ বছর ধরে হাওয়াই মিঠাই মেশিনই তার জীবিকার অবলম্বন।

জীবন সংগ্রামী মিনার হোসেন জানিয়েছেন, চিনি, সেন্টারফ্রুট, পাওডার দুধ, তালমিচরি ইত্যাদি উপাদান দিয়ে মেশিনটির মাধ্যমে তৈরি করেন হাওয়াই মিঠাই। গ্রামীণ মেলা জমলে সেখোনে হাজারখানেক টাকা বিক্রি করতে পারেন। অন্যসময় দৈনিক পাঁচ থেকে ছয়শত টাকা বিক্রি হয়। শিশু ও অভিভাবকরা আকার অনুযায়ী ৫, ১০ ও ২০ টাকা দরে কিনে নেয় তার হাওয়াই মিঠাই। নগদ টাকা ছাড়াও চুল, চাউলের বিনিময়ে বিক্রি করেন তিনি। প্রতিদিন নিজ গ্রামের মন্নর পাড়া, খোয়ালের পাড়, ফুল কলি কিন্ডারগার্টেনের সামনে বসে বিক্রি করেন। অন্য গ্রামে মেলা থাকলে সেখানে গিয়েও বিক্রি করেন তিনি।

মিনার জানান, তার দুই ছেলে দুই মেয়ের মধ্যে বড় ছেলে তাওহিদ হোসেন (১২) ঢাকায় সোফা তৈরির কাজ শিখছে। ছোট ছেলে তানজিন হোসেন (১০) পড়াশোনা করেনি। বাবার সঙ্গে কাজে সহযোগিতা করে সে। বড় মেয়ে তাইবা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণি ও ছোট মেয়ে রাইবা শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী।

মিনার হোসেন জানিয়েছেন, ৩ বছর আগে সিলেট হকার্স মার্কেট থেকে ১০ হাজার টাকায় কিনেছিলেন এই হাওয়াই মিঠাই মেশিনটি। সেই থেকে এই হাওয়াই মিঠাই মেশিনটি ঘিরেই তার সংসার-সংগ্রাম। দুই শতক বসতভিটা ছাড়া কোনো জমি নেই তার।

(ঢাকাটাইমস/২৬এপ্রিল/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :