এজেন্সিগুলো বেআইনি গুমের ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রেখেছে: রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০২৩, ২১:৩৫ | প্রকাশিত : ১৯ আগস্ট ২০২৩, ২১:২৭

পৈশাচিক আক্রমনের পাশাপাশি সরকারি এজেন্সিগুলো বেআইনি গুমের ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। শনিবার রাতে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত জরুরী সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব বলেন।

রিজভী বলেন, গত দেড়দশক ধরে বিএনপিসহ বিরোধী দল ও সরকারের সাথে ভিন্নমত পোষণকারীদের গুম করা হয়েছে নির্বিচারে। আসন্ন নির্বাচনের প্রাক্কালে আবারও জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়া বা তুলে নিয়ে যাওয়ার পর অস্বীকার করা এবং শেখানো বুলি বলার জন্য বর্বরোচিত শারীরিক উৎপীড়ণ করা অব্যাহত আছে। এবং এই ক্ষেত্রে সরকার টার্গেট করেছে বিরোধী রাজনীতি শক্তির তরুণ যুবকদেরকে।

রিজভী অভিযোগ করে বলেন, গতকাল শুক্রবার জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম জিসানকে তার আজিমপুরস্থ বাসভবন থেকে তুলে নিয়ে যায়, এ খবর শুনে তার বাসার সামনে তার সহকর্মীরা উপস্থিত হলে ছাত্রদলের ৭ জন কেন্দ্রীয় নেতাকে আটক করে সাদা পোশাকধারীরা। সরকার বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়েই আবারো নতুন করে গুমের মতো মনুষ্যত্বহীন খেলা শুরু করেছে। তাদেরকে পুলিশের গোয়েন্দা কার্যালয়ে রাখা হলেও বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য গোয়েন্দা বিভাগ সেটি স্বীকার করছে না। তাদেরকে একটি ভয়ানক চক্রান্তের ফাঁদে ফেলার জন্যই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে না। তাদেরকে উৎপীড়ণ করে তাদের মুখ দিয়ে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়ের অপচেষ্টা চলছে বলে সকলে মনে করছে।

অবিলম্বে মমিনুল হক জিসানসহ উল্লেখিত ছাত্র নেতৃবৃন্দকে তাদের পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়ার জোর আহ্বান জানান। অন্যথায় দায়ী ব্যক্তিদের চরম পরিনতি ভোগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন রিজভী।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, সরকার ক্ষমতা ধরে রাখতে উন্মাদ হয়ে পরেছে। বিরোধী দল শূণ্য, নির্বাচনের মাঠ শূণ্য, ভোটার শূণ্য, নিস্তব্ধ পরিবেশে আওয়ামী ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে আরেকটি অভিনব নিশিরাতের নির্বাচনের ছক আঁটতেই বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর কর্মসূচিতে বর্বরোচিত আক্রমণ করছে। তাদের পাশবিক আক্রমণে গণতন্ত্রকামী নেতাকর্মীরা ক্ষতবিক্ষত। এক রক্তপিপাসু হায়নার মতো আচরণ করছে ভোটার বিহীন আওয়ামী সরকারের আইনৃঙ্খলা বাহিনী।

রিজভী বলেন, আগের মতোই গুলি, বন্দুক, দা, ছুরি, রামদা, লাঠি ও হকস্টিকসহ সকল প্রকার মারনাস্ত্র দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে আক্রান্ত করা হচ্ছে। গত বছরের আগষ্ট মাস থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে তারা হত্যা করেছে। পুলিশের ছোড়া গুলিতে প্রায় ৩০/৪০ জন নেতাকর্মী চোখ হারিয়েছে। হাত-পা বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে বিএনপি ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মীদের।

তিনি বলেন, আজ হবিগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ জেলা যেন রক্তাক্ত প্রান্তরে পরিনত হয়েছে। কেন্দ্র ঘোষিত দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার দাবীতে দেশব্যাপী পদযাত্রার কর্মসূচি চলাকালে আজকে হবিগঞ্জ যেন সরকারি বাহিনীর গুলিতে বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে। বৃষ্টির মতো গুলি করা হয়েছে বিএনপি’র পদযাত্রায়, অসংখ্য নেতা হবিগঞ্জ জেলার পদযাত্রা কর্মসূচিতে পুলিশের বর্বরোচিত হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়।

বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করে বলেন, বিশিষ্ট ডেন্টিস্ট জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ডা. জাহিদুল কবির জাহিদসহ ৫ জনকে কিছুক্ষণ আগে বিনা কারণে নয়াপল্টনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ডা. জাহিদ একজন সৎজন চিকিৎসক। শুধুমাত্র বিএনপি’র ভিন্ন কর্মসূচিতে তার সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য তাকে টার্গেট করে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা গনতন্ত্রকে হরণ করে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য একটা এতিম জাতি তৈরি করতে চান। আর এই কারণেই রাষ্ট্রযন্ত্রকে তিনি হাতের মুঠোয় নিয়ে সর্বশক্তি দিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলন কারীদের দমন করতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। তিনি দেশের জনগণকে পদদলিত করে অন্য দেশের হাত-পা ধরছেন ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। জনস্বার্থ বিরোধী এই সরকার এখন ভিন্ন দেশের আর্শিবাদ নিয়ে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। আওয়ামী নব্য নাৎসিরা দাঁত বের করেছে হিং¯্রভাবে। তারা কোনভাবেই জনগণের মালিকানা জনগণকে ফিরিয়ে দেবে না বলেই দেশের রাজধানীসহ জেলা, উপজেলায় রক্ত ঝরাচ্ছে। বিরোধী দলের মানবাধিকার এখন প্রচন্ড ঝুঁকির মধ্যে। স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার অধিকার হরণ করা হয়েছে দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের। বিরোধী দলকে প্রান্তিক পর্যায়ে ফেলে দিতে তারা পুলিশকে ছাত্রলীগ দিয়ে ঢেলে সাজিয়ে লেলিয়ে দেওয়া হায়েছে গণতান্ত্রিক কর্মসূচির বিরুদ্ধে।

তিনি বলেন, এদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পরেছে বলেই ধারালো অস্ত্র নামিয়ে এনেছে জনগণের গলার উপরে। আওয়ামী নাৎসীবাদের দোসররা কখনই গনতান্ত্রিক শক্তির মিত্র হতে পারে না। গত ১৫ বছর ধরে চক্রান্ত আর নিপীড়নের যাঁতাকলের ভিতরেও বিএনপি এখনো দেশের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি। শেখ হাসিনা আপনি বর্তমান একদলীয় নাৎসী শাসন টিকিয়ে রাখার ‘গেমপ্ল্যান’ আর বাস্তবায়ন করতে পারবেন না। আপনাকে টিকিয়ে রাখার কুশিলবরা অনেক দূর্বল হয়ে গেছে এখন নিরাপদ প্রস্থানের সুযোগ খুঁজছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ,সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম,নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, তারিকুল ইসলাম তেনজিং প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/১৯আগস্ট/জেবি/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

রাজপথে তারুণ্যের বিপ্লবে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটাতে হবে: নুর

বিএনপি-জামায়াত দেশের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করছে: নাছিম

১৪ দলের বৈঠকে নেতাদের ক্ষোভ, শেখ হাসিনা বললেন ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে

আজিজ-বেনজীরের দুর্নীতির দায় সরকার এড়াতে পারে না: দুদু

সাবেক সংসদ সদস্য মানু মজুমদারের মরদেহে আ.লীগের শ্রদ্ধা

ব্যক্তি যতই প্রভাবশালী হোক অপরাধ করলে শাস্তি পেতে হবে: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী বেসামাল হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল

ইরান দূতাবাসে সংরক্ষিত শোক বইতে জামায়াতের স্বাক্ষর

সরকারের সামগ্রিক আয়-ব্যয় ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে: খেলাফত মজলিস

গণতন্ত্র হত্যার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষ সামাজিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে: ১২ দলীয় জোট

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :