দুই দিনের টানা বৃষ্টি, খেটে খাওয়া মানুষের মলিন মুখ

পুলক রাজ, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ০৬ অক্টোবর ২০২৩, ২৩:৫৩

শরতের নীলকাশ, সাদা মেঘের ভেলায় প্রকৃতি ভেসে যায় টানা বৃষ্টির ছোঁয়ায়। কারও জন্য রোমাঞ্চকর মন মাতানো পরিবেশ। আবার অনেক ভুখা লোকদের দুর্ভোগের শেষ নেই। শুক্রবার সরকারি ছুটির দিনের সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন জেলার ধারাবাহিকতায় রাজধানীতে নেমেছে প্রবল বৃষ্টি। প্রকৃতির এমন বর্ষণমুখরতায় মলিন হয়ে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষের মুখ।

গত দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে রাজধানীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা, যান ও মানুষের চলাচলে ব্যাঘাত। এছাড়া অনেক সড়কে জমেছে পায়ের গোড়ালি থেকে হাঁটু পানি। গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছাড়া বাড়ি থেকে তেমন বের হচ্ছেন না মানুষ।

দিন আনে দিন খায় এমন মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিনদিন ধরে ঝরঝর বৃষ্টি ঝরছে তো ঝরছেই। অতিবৃষ্টির কারণে কাজে যেতে মহা দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে তাদের।

বৃষ্টিতে ভিজে সুবুডুবু সড়কে রিকশাচালক জাকারিয়া ঢাকা টাইমসকে বলেন, বৃষ্টির কারণে গত তিনদিন ধরে আয়-রোজগার একদম কম। তিনি বলেন, শুক্রবারে মানুষ ঘুরতে বের হয়। কিন্তু এই শুক্রবারে ঘুরতে বের হচ্ছে না।

মাহিন নামে আরও একজন রিকশাচালক ঢাকা টাইমসকে বলেন, দিন আনি দিন খাই। বাজারে গেলেই সবকিছুর দাম সাধ্যের বাইরে। এর মধ্যে এরকম আবহাওয়ায় বর্তমানে চলা বড় দায়।

রমনা পার্কের ফজুল নামে এক চানাচুর বিক্রেতা ঢাকা টাইমসকে বলেন, টানা বৃষ্টির জন্য আমার মতো খেটে খাওয়া মানুষদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারি ছুটির দিনে রমনা পার্কে হাজার হাজার মানুষ ঘুরতে আসে। সারা সপ্তাহের রুজি শুক্রবারে করা যায়। কিন্তু এই শুক্রবারে আমাদের কপালে হাত।

ইস্কাটন গার্ডেনের ফুটপাতে চা বিক্রেতা রহিমা বেগম ঢাকা টাইমসকে বলেন, আজ শুক্রবার ছুটির দিন। মানুষ ঘুরতে বের হয়। কিন্তু বৃষ্টির কারণে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে মানুষ বের হচ্ছে না। তবে যারা বের হয়েছে জীবিকার তাগিদে।

রামপুরা এলাকার চা দোকানি শফিক মিয়া ঢাকা টাইমসকে বলেন, বৃষ্টির কারণে সারাদিন ধরে ক্রেতা একদম কম। প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ কাপ চা বিক্রি করি। আর আজকে ৫০ কাপ চা বিক্রি করতে দম বের হয়ে যাচ্ছে।

সরকারি চাকুরিজীবী বিল্লাল আহমেদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, বৃষ্টির জন্য শুক্রবারের ছুটি ঘরে বসে কাটাতে হচ্ছে। জানালা দিয়ে দেখা যায় ঢাকার পথঘাটে জনশূণ্য।

অন্যদিকে আবহাওয়া অফিস থেকে জানা গেছে, শুক্রবার (০৬ অক্টোবর) সারাদিন দুপুরে থেকে মুষলধারে বৃষ্টি ঝরছে। কারণ সাগরে সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপ এবং এখনো মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকার প্রভাবে। তবে শনিবার (০৭ অক্টোবর) কিছুটা কমে আসতে পারে বৃষ্টি।

পূর্বাভাসে আবহাওয়ার সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে বাংলাদেশের উত্তরপশ্চিমাংশ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমী বায়ুর অক্ষ পূর্ব উত্তর প্রদেশ, বিহার, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

(ঢাকাটাইমস/০৬অক্টোবর/পিআর/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :