সাতক্ষীরায় হবে ১৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে শেখ কামাল আইটি সেন্টার: তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী

তথ্য ও টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুয়েদ আহমেদ পলক বলেছেন, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ১৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাতক্ষীরায় শেখ কামাল আইটি সেন্টার গড়ে তোলা হবে। সেখান থেকে প্রতিবছর দুই হাজার ছেলে-মেয়ে প্রযুক্তির সর্বোত্তম সুবিধা নিয়ে নিজেদের কর্মস্থান তৈরি করতে পারবে।

শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে সাতক্ষীরা শিল্পকলা একাডেমিতে ‘হার পাওয়ার প্রকল্প প্রযুক্তির সহায়তায় নারীর ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের আওতায় নারীদের ল্যাপটপ বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে নারীদের আত্মকর্মস্থানের কোনো বিকল্প নেই। নারীরা স্মার্ট বাংলাদেশ জয়ের সারথী। সরকার নারীদের কর্মস্থান ও প্রযুক্তি নির্ভর করে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত প্রধানমন্ত্রীর নারী-পুরুষ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন সুসংহতকরণে গৃহীত বহুমুখী কার্যক্রম বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত এবং এক্ষেত্রে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল বিশ্বের রোল মডেল।

তিনি বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ে সংগ্রামী ও সম্ভাবনাময় নারীদের সহযোগিতা, দিকনির্দেশনা ও পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন এ প্রকল্পটি হয়ে উঠতে পারে একটি অনবদ্য মাইলফলক।

অনুষ্ঠানে হার পাওয়ার প্রকল্পের সাতক্ষীরায় হার পাওয়ার প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত কলারোয়া, তালা ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলার নারী আইটি সেবাদাতা ক্যাটাগরির মোট ২৪০ জন প্রশিক্ষণার্থীকে ল্যাপটপ প্রদান করা হয়।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘হার পাওয়ার’ প্রকল্প প্রধানমন্ত্রীর আরেকটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশের নারীদের প্রযুক্তি শিক্ষায় দক্ষ করে গড়ে তুলে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

‘আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও, আমি একটি শিক্ষিত জাতি দেব’ নেপোলিয়নের উক্তি উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, নেপোলিয়নের এই উক্তির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় নারীদের ৬০% কোটা নির্ধারণের বঙ্গবন্ধুকন্যার যুগান্তকারী একটা সিদ্ধান্ত আমাদের সমাজে নারীদের সম্মান ও অধিকার প্রতিষ্ঠার চিত্র বদলে দিয়েছে। যে সমাজে নারীদেরকে বোঝা মনে করা হতো, সে সমাজে নারীদের সম্মান প্রতিষ্ঠা হয়েছে, যৌতুক ব্যাধি থেকে নারী সমাজ মুক্ত হয়েছে এবং একইসাথে নারীদের সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও অর্থনৈতিক অধিকারও প্রতিষ্ঠা হয়েছে।

পলক বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের ডিজিটাল সেবা মানুষের হাতের মুঠোয় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারেও একজন পুরুষের পাশাপাশি একজন নারী উদ্যোক্তাকে সুযোগ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। বর্তমানে ৯০০০ ডিজিটাল সার্ভিস ডেলিভারি সেন্টারে ৫০ শতাংশ নারী ডিজিটাল উদ্যোক্তারা সেবা প্রদান করছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যার এই দুইটি সিদ্ধান্ত বাংলাদেশে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা ও কর্মসংস্থানের জন্য ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত হিসেবে ইতিহাসে লেখা থাকবে।

প্রতিমন্ত্রী পলক আরও বলেন, সাতক্ষীরার মানুষ এখন শুধুমাত্র মৎস্য সম্পদ রপ্তানি করেই বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে না। হার পাওয়ার প্রকল্পে প্রশিক্ষণ নিয়ে আমাদের বোনেরা নিজেদের মেধা ব্যবহার করেও এখন বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে। আমরা বিশ্বাস করি, উচ্চগতির ইন্টারনেট, বিশ্বজয়ের হাতিয়ার কম্পিউটার ও মেধাবী তরুণ প্রজন্মকে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার মাধ্যমে এই তারুণ্যের মেধা ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে আমরা ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবো।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি, ফিরোজ আহমেদ স্বপন এমপি, আশারাফুজ্জামান আশু এমপি, সংরক্ষিত সংসদ সদস্য পদে আ.লীগের মনোনয়ন প্রাপ্ত লাইলা পারভীন সেজুঁতি, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম, হার প্রকল্পের উপ-পরিচালক নিলুফার ইয়াসমিন।

অনুষ্ঠানে সম্প্রতি করোনাকালিন সময়ে বাড়িতে বসে তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় জেট ফাইটার বিমান আবিষ্কার করে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোড়ন তোলা সাতক্ষীরার তালা উপজেলার বোরহানউদ্দিকে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয় এর পক্ষ থেকে বোরহানের হাতে একটি ল্যাপটপ তুলে দেন প্রতিমন্ত্রী।

(ঢাকাটাইমস/২৩ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/জেডএম/এসআইএস)