জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি শিল্পীসমাজের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১০ আগস্ট ২০২৪, ২১:১০

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত নৃশংস রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু নিরপেক্ষ বিচার দাবি করেছেন শিল্পীসমাজ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত নৃশংস রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু নিরপেক্ষ বিচার দাবি করেছেন শিল্পী সমাজ।

একই সঙ্গে ছা্ত্র-জনতার অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সংখ্যালঘু সাংস্কৃতিক ব্যক্তিদের ওপর হামলা, স্থাপনা ভাঙচুর, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর এবং ভাস্কর্য ভাঙচুরের নিন্দা প্রতিবাদ জানান তারা এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের অবিলম্বে কঠোর আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছে।

শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে 'সৃষ্টির স্বাধীনতায় সাহসী বাংলাদেশ' শীর্ষক সমাবেশে এই দাবি জানানো হয়। বিক্ষুব্ধ থিয়েটারকর্মী, আলোকচিত্রী সমাজ, দৃশ্যমাধ্যম শিল্পীসমাজ গেটআপ স্ট্যান্ড আপ (বাংলাদেশ সংগীতশিল্পী সমাজ) যৌথভাবে এই সমাবেশের আয়োজন করে।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, অমিতাভ রেজা চৌধুরী, সাবেরি আলম, জাকিয়া বারী মম, আজমেরি হক বাঁধন, ইরেশ যাকের, কুসুম শিকদার, সুমন আনোয়ার, আজাদ আবুল কালাম, রাফিয়াত রশীদ মিথিলা, সাফা কবির, মারিয়া নূর, টয়া, স্পর্শিয়া, নাজিয়া হক অর্ষা, আরমিন মুসা, তানজির তুহিন, লাবিক কামাল গৌরব, সৈয়দ আহমেদ শাওকী, রেজাউল করিম লিমন, নিশাত প্রিয়ম, জয় শাহরিয়ার, আইরিন সুলতানা, সাবরিনা সাবা প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন ঘাসফড়িং কয়ার। 'মুক্তির মন্দির সোপান তলে', 'পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে' এবং সবশেষে সমবেত জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শেষ হয় সমাবেশ।

সমাবেশের পর গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের ছাত্রজনতার রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারী সরকার পতনের এই নব বিজয়ে আপনাদের বিপ্লবী অভিনন্দন। এই বিশেষ সময়ে আমরা স্মরণ করছি, এই গণঅভ্যুত্থানের সকল শহীদকে, যাদের নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করেছে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার। পৃথিবীর ইতিহাসে এটি একটি নজিরবিহীন হত্যাকাণ্ড।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জুলাই-আগস্ট মাসজুড়ে তাদের পেটোয়া বাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্বিচারে গণগ্রেপ্তার, গুম নৃশংস অত্যাচারে গুরুতর আহত হয়েছেন হাজারো ছাত্র-জনতা। নির্মম দুর্ভাগ্য এই যে, জাতি হিসেবে তাদের মৃত্যুর সঠিক পরিসংখ্যান নাম এখন পর্যন্ত আমরা জানতে পারিনি। অভ্যুত্থান-পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের মূল দাবি, "রক্তাক্ত জুলাই"য়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ে রাষ্ট্রীয় খুন সন্ত্রাসের কারণে যারা শহীদ গুরুতর আহত হয়েছেন তাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিতে হবে এবং আহতদের পুনর্বাসন করতে হবে। শহীদদের স্মরণে স্থাপন করতে হবে শহীদ মিনার। সর্বোপরি এই নৃশংস রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে সকল অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে হবে।

গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়েও অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে দেশব্যাপী নানা ধর্মীয় সম্প্রদায়, ভিন্নমতের নাগরিক নানান শ্রেণি-পেশার মানুষ হত্যা-নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। হামলা লুটপাট হয়েছে নানা ধর্মীয় উপাসনালয়, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসভিত্তিক স্থাপনা, ঐতিহ্যবাহী ভাস্কর্য, সংগ্রহশালা জাদুঘর, স্মৃতি স্মারকসহ শিল্পী, গণমাধ্যম সংস্কৃতিকর্মীদের বাড়িতে। আমরা মনে করি, অগ্নিসংযোগ, হামলা, ধ্বংস লুটপাটের সঙ্গে জড়িত একটি বিশেষ স্বার্থান্বেষী মহল, যারা আমাদের এই বিজয়ের সকল অর্জন ম্লান করে দিতে চায়।

বিপ্লবী ছাত্রজনতা আমাদের উপহার দিয়েছে এক নতুন মুক্তি। তারাই জানবাজি রেখে রক্ষা করে যাচ্ছে দেশের সম্পদ। অভ্যুত্থান পরবর্তী সংকটময় সময়ে তারাই দায়িত্ব নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার। পাহারা দিয়ে যাচ্ছে মন্দির, মাজারসহ বিভিন্ন উপাসনালয় ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার। দুষ্কৃতিকারীদের ঠেকাতে সংঘবদ্ধভাবে টহল নিয়ে যাচ্ছে পাড়ায়, মহল্লায়। আন্তরিকতার সঙ্গে ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে যাচ্ছে দিনরাত। সরকার পরিবর্তনের এই বিশেষ সময়ে প্রশাসনিক অনুপস্থিতিতে ছাত্র-জনতাই ধরে রাখছে দেশের হাল।

এই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার দাবির সাথে সংহতি জানিয়া আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একাধিক সমাবেশ, পদযাত্রা লংমার্চে সামিল হয়েছি। আন্দোলনের শুরু থেকেই আমরা নিজ নিজ শিল্পমাধ্যমের হাজারো সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে বৃহত্তর শিল্পী সংস্কৃতিকর্মী সমাবেশের ডাক দিয়েছি।

(ঢাকাটাইমস/১০আগস্ট/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :