শুভ জন্মদিন রোনালদো-নেইমার-তেভেজ

বয়সকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজের পায়ের জাদুতে পুরো ফুটবল বিশ্বকে মাতিয়ে রেখেছেন পর্তুগিজ মহাতারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। অপরদিকে তরুণ প্রজন্মের ফুটবল আইডল ব্রাজিলীয়ান সেনসেশন নেইমার জুনিয়র। দুজনেই দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন ফুটবল রাজত্বে। বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় তারা।
আজ ৫ ফেব্রুয়ারি। বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা এই দুই ফুটবলারের জন্মদিন আজ। রোনালদো আজ পা দিলেন ৪০ বছরে আর নেইমার ৩৩ বছরে। তবে শুধু রোনালদো, নেইমার নন তাদের দলে আছেন কার্লোস তেভেজের মতো তারকাও। কার্লোস তেভেজেরও জন্মদিন আজ।
এই তিন মহা তারকার পাশাপাশি এই দিনে জন্ম নেয়া ফুটবলারদের তালিকায় রয়েছেন সিজার মালদিনি। যিনি আবার পাওলো মালদিনির বাবা। এসি মিলান আর মালদিনি পরিবারের সংযোগের সূত্রটা তারই হাত ধরে। এই তালিকায় আরও আছেন গিওর্গি হাজি। রোমানিয়ার ইতিহাসের সেরা ফুটবলার হিসেবে যাকে আজও মনে রাখে ফুটবলের দুনিয়া।
১৯৮৫ সালের এই দিনে মাদেইরাতে জন্ম হয় ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর। ইতিহাসের সেরা গোলস্কোরার নিজ সময়ের তো বটেই, তর্কসাপেক্ষে সর্বকালের সেরাদেরও একজন। তরুণ রোনালদো স্পোর্টিং সিপি থেকে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন। এরপর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে এসে নিজেকে মেলে ধরেন বিশ্বের দরবারে।
স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের অধীনে খেলে নিজেকে করে তুলেছিলেন সময়ের সেরা তারকা। ২০০৮ সালে জেতেন মর্যাদাপূর্ণ ব্যালন ডি’অর। ২০০৯ সালে রেকর্ড ট্রান্সফারে চলে যান রিয়াল মাদ্রিদে। সেখানেই সিআরসেভেন নিজের সেরা সময় পার করেছেন। চারটি করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ব্যালন ডি অর, লা লিগাসহ ফুটবলের সম্ভাব্য সব ট্রফিই জয় করেছেন লস ব্লাঙ্কোসদের হয়ে। ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির সর্বকালের সর্বোচ্চ স্কোরার তিনি।
২০১৮ সালে তিনি পাড়ি জমান ইতালিয়ান জায়ান্ট জুভেন্তাসে। সেখানে তিন মৌসুম কাটিয়ে ফেরেন ম্যান ইউনাইটেডে। যদিও তিক্ত সম্পর্ক নিয়ে ২০২২ সালে ইউনাইটেড ছাড়েন তিনি। বর্তমানে আছেন সৌদি ক্লাব আল-নাসরে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইরানের কিংবদন্তি আলী দাইয়িকে ছাড়িয়ে হয়েছেন সর্বোচ্চ গোলদাতা। জিতেছেন মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্ব ইউরোর শিরোপা। বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে, রোনালদো বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় এবং তিনি সর্বকালের সেরা ফুটবলারদেরও একজন।
অন্যদিকে ব্রাজিলের পোস্টারবয় নেইমারের জন্ম ফুটবলের উর্বরভূমি ব্রাজিলে। যেখানে অলিতে-গলিতে জন্ম নেয় ফুটবলার। ১৯৯২ সালে সেখানেই জন্ম নেন নেইমার জুনিয়র। ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি দামে দলবদলের রেকর্ড আছে তার নামের পাশে। খেলেছেন কিংবদন্তি পেলের স্মৃতিবিজড়িত ক্লাব সান্তোসে। সেখান থেকে আসেন বার্সেলোনায়। লিওনেল মেসি এবং লুইস সুয়ারেজকে নিয়ে গড়েন বিখ্যাত ‘এমএসএন’ ত্রয়ী। ২০১৫ সালে জেতেন ট্রেবলও।
২০১৭ সালেই অবশ্য রেকর্ড ট্রান্সফার ফিতে চলে যান পিএসজিতে। সেখান থেকে নিজের ঠিকানা করেছেন সৌদি ক্লাব আল-হিলালে। নিজের প্রজন্মের অন্যতম সেরা এই খেলোয়াড় অবশ্য ইনজুরির কারণেই হারিয়েছেন ক্যারিয়ারের অনেক সেরা সময়।
সৌদি ক্লাব আল-হিলাল ছেড়ে দীর্ঘ ১২ বছর পর সান্তোসে ফিরেছেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার জুনিয়র। ২০১৩ সালে অমিত সম্ভাবনা নিয়ে ব্রাজিলের ক্লাব সান্তোস ছেড়েছিলেন নেইমার জুনিয়র। সেখান থেকে বার্সেলোনা, পিএসজি ও আল-হিলাল হয়ে যেন তিনি চক্র পূরণ করলেন। এক যুগ পর আবারও শৈশবের ঠিকানা সান্তোসে ফিরলেন নেইমার।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ম্যানচেস্টার সিটি ও জুভেন্টাস মাতানো তেভেজের আজ ৪১তম জন্মদিন। ইউনাইটেডের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগজয়ী সাবেক এ ফরোয়ার্ড ২০২২ সালে পেশাদার ফুটবলকে বিদায় জানান। সে বছরই কোচিংয়ে নেমে পড়েন তেভেজ। দায়িত্ব নেন আর্জেন্টিনার প্রিমেরা ডিভিশনের ক্লাব রোজারিও সেন্ট্রালের। ক্লাবটি ছেড়ে ২০২৩ সালে ইন্দিপেনদিয়েন্তের কোচের দায়িত্ব নেন তেভেজ।
বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা এই তিন তারকার রয়েছে অসংখ্য ভক্ত ও অনুরাগী। তিনজনই পরিচিত তাদের নৈপুণ্য ও পায়ের ক্ষমতার জন্য। তাদের খেলার ধরণ তাদের এনে দিয়েছে সমালোচকদের প্রশংসা, সঙ্গে প্রচুর ভক্ত এবং সাবেক খেলোয়াড়দের স্নেহ। জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা তাদের।
(ঢাকাটাইমস/০৫ ফেব্রুয়ারি/এনবিডব্লিউ)

মন্তব্য করুন