বিপিএল ফাইনাল: চিটাগংয়ের প্রথম নাকি বরিশালের দ্বিতীয়

এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই–স্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে গত ৩০ ডিসেম্বর পর্দা উঠেছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ-বিপিএলের ১১তম আসরের। ৭ দলের প্রতিযোগিতায় শিরোপার লড়াইয়ে টিকে আছে দুই দল। ফরচুন বরিশাল এবং চিটাগং কিংসের মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচ দিয়ে পর্দা নামবে এবারের আসরের।
আসর জুড়ে দাপট দেখানো বরিশাল সমর্থকদের জন্যই জিততে চায় ট্রফি। লঞ্চে করেই শিরোপা নিতে চান কীর্তনখোলা পাড়ে। অন্যদিকে, ম্যাচের আগে অনুশীলন না করা চিটাগাং ভরসা রাখছে নিজ সামর্থ্যে। শের-ই-বাংলায় হাইভোল্টেজ ফাইনাল শুরু শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬ টায়। দেখার অপেক্ষা, তারুণ্যের উৎসবের বিপিএল নতুন চ্যাম্পিয়নকে বরণ করে নেয়, নাকি বর্তমান চ্যাম্পিয়নের মুকুটে জুড়ে দেয় শ্রেষ্ঠত্বের আরেকটি পালক।
দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের স্বপ্ন ফরচুন বরিশালের। গতবার কুমিল্লাকে ৩ রানে হারিয়ে নিজের প্রথম শিরোপা ঘরে তুলে ছিল বরিশাল। এবারেও শক্তিশালী দল তৈরি করেছে বরিশাল। ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের ফাইনালের টিকিটও নিশ্চিত করেছে তামিম ইকবালের দল। এবার তাদের সামনে শিরোপা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ।
বিপিএলের ফাইনালে কখনোই না হারা খান সাহেব ফাইনালের আগে দীর্ঘসময় ব্যাটে শানও দিয়েছেন। মালান, মায়ার্স, নিশাম, নবী, ফুলার, মোহাম্মদ আলী। এখান থেকে চার বিদেশি নির্বাচনেও কঠিন চ্যালেঞ্জ। তবে বরিশালের শক্তি মাঠের সমর্থন।
বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল বলেন, ‘আমরা খুবই ভাগ্যবান যে আমরা এই ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলি। চিটাগাং, সিলেট, ঢাকা যখন যেখানে যে ম্যাচই আমরা খেলি গ্রুপপর্ব হোক বা কোয়ালিফাই, সবসময় দর্শক ছিল বরিশালের। আমরা অনেক ভাগ্যবান। এটাই আমরা বিপিএল নিয়ে স্বপ্ন দেখেছি। একেকটা দলের আলাদা ফ্যানবেজ থাকবে। যা বরিশাল সফলভাবে করতে পেরেছে গত ২ বছরে। অবশ্যই চেষ্টা থাকবে যদি চ্যাম্পিয়ন হতে পারি ইচ্ছা আছে (লঞ্চে করে)। আমার মনে হয় (গতবার) কোনো কারণে যেতে পারিনি। এবার যদি আল্লাহ আমাদের ওপর রহমত করে তাহলে অবশ্যই (যাব)।’
তারকার ভারে ভেঙে পড়ার নজির হরহামেশাই দেখা যায় ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে। তাই দলের সবাইকে দায়িত্ব নিতে বললেন বরিশাল অধিনায়ক। ফাইনালে ঘিরে ভিন্ন কোনো পরিকল্পনাও নেই তামিমের।
তামিম ইকবাল বলেন, ‘আমরা সবাই বলি ফাইনাল আসরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। তবে এমন অবস্থায় আপনাকে অবশ্যই অনেক বেশি শান্ত থাকতে হবে। আপনার যদি নার্ভাসনেস কাজ করে, আর আপনি যদি চাপ সরাতে না পারেন তাহলে আপনি ভুল করবেন। এটাই আমার চাবিকাঠি। যে দল বেশি শান্ত থাকবে, তাদের সুযোগ বেশি থাকবে।’
অন্যদিকে চলমান বিপিএল দিয়ে প্রায় ১০ বছর পর টুর্নামেন্টে ফিরেছে চিটাগং। এর আগে, বিপিএলের প্রথম দুই আসরে খেলেছিল ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। ২০১৩ সালে দ্বিতীয় আসরের ফাইনালে উঠেছিল চিটাগং কিংস। কিন্তু শিরোপা ছুয়ে দেখা হয়নি তাদের। ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের কাছে ৫২ রানে হেরেছিল তারা।
এবার বিপিএলে ফিরেই ফাইনালে উঠেছে বন্দরনগরীর দলটি। নিজেদের প্রথম শিরোপা ঘরে তুলতে মরিয়া ইমন-শামীমরা। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে খুলনাকে হতাশ করে ফাইনালের টিকিট পেয়েছে তারা। এবার শিরোপাই চোখ তাদের।
টানা ম্যাচ থাকায় বিশ্রামের সময় পায়নি চিটাগং কিংস। আসরে জুড়ে নানা ঘটনায় বিতর্ক এড়াতে পারেনি ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। এক যুগ পর বিপিএলে ফিরে নিজেদের দ্বিতীয় ফাইনালে নামবে কিংস। কোয়ালিফায়ারের মোমেন্টাম ধরে রেখে শিরোপা জিততে চায় বন্দরনগরীর দলটা।
চিটাগাং কিংসের কোচ শন টেইট বলেন, 'আমি আত্মবিশ্বাসী। লড়াইটা ফিফটি ফিফটি হবে। বরিশাল শক্তিশালী দল আমরা তাদের সমীহ করছি। তবে এতো কাছে এসে হতাশা নিয়ে ফিরতে চাই না।'
ফাইনালের আগে দু'দলের তিন দেখায় চিটাগাং হেরেছে দু'বার। কিন্তু এসব পরিসংখ্যান কে মনে রাখে। তাইতো শুধু শেষটা রাঙানোর স্বপ্ন।
(ঢাকাটাইমস/০৭ ফেব্রুয়ারি/এনবিডব্লিউ)

মন্তব্য করুন