নানা আয়োজনে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী আঞ্জুরাকে বিয়ে দিল ’আলোর পথে ফরিদপুর’ 

নুরুল ইসলাম, সালথা-নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
  প্রকাশিত : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২০:৫৩
অ- অ+

বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী আঞ্জুরা আক্তার (১৮) ঠিকমতো কথা বলতে পারে না, মানুষ দেখলে শুধু হাসে। মাত্র বছর বয়সে দিনমজুর বাবাকে হারায়। তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড় আঞ্জুরা। সম্পত্তি বলতে অন্যের জমির ওপর একটি ছাপড়া ঘর। আঞ্জুরার মাও ঠিকমতো কথা বলতে পারেন না।

স্বামী হারানোর পর তার মা তিন সন্তান নিয়ে চরম অসহায় হয়ে পড়েন। ছেলে-মেয়েদের ভরণ-পোষণ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়ে যান তিনি। পরিবারটির অসহায়ত্বের খবর পেয়ে প্রতিবন্ধী আঞ্জুরার দায়িত্ব নেনআলোর পথে ফরিদপুর’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ মহুয়া ইসলাম। তিনিই আঞ্জুরাকে লালন-পালন করে বড় করেন।

আজ শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সেই অসহায় বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী আঞ্জুরা বিয়ের পিঁড়িতে বসে। এ উপলক্ষে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের উজিরপুর গ্রামে আঞ্জুরার বাড়িতে নানা আয়োজন করেন মহুয়া ইসলাম।

বর আব্দুস সালাম সুমন (২৫) তার মা-বাবা ভাই-বোন কেউ নেই। তিনিও ঠিকমতো পরিষ্কার করে কথা বলতে পারেন না। তার বাড়ি কুষ্টিয়া হলেও থাকেন স্থানীয় ময়েনদিয়া বাজারের পাশে।

আঞ্জুরার পরিবারের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আঞ্জুরার মায়ের মুখ মেয়ের বিয়ের রং দিয়ে মাখানো। মেয়ের বিয়ে নিয়ে তিনি মহা ব্যস্ত। আর তাদের ছাপড়া ঘরের সামনে ছোট ওঠানে মাটি খুঁড়ে বানানো চুলায় বরযাত্রী প্রতিবেশীদের খাওয়া-দাওয়ার জন্য রান্নাবাড়ির কাজ চলছে। পাশেই সাউন্ড বক্সে চলছে বিয়ের গান।

এদিকে আঞ্জুরা নতুন শাড়ি-গহনা পরে বধূবেশে আর বর সুমন নতুন পাঞ্জাবি-পায়জামা পরে বসে আছেন। বর-কনে দুজনই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হলেও বিয়ের আয়োজনে কোনো কিছুর কমতি না থাকায় তাদের আনন্দের জোয়ারে ভাসতে দেখা যায়। কিছুক্ষণ পরপর মুচকি মুচকি হাঁসতে দেখা যায় তাদের। সব মিলিয়ে বিয়ের জাঁকজমক আয়োজনটা।

ময়েনদিয়া বাজারে কাঁচা তরকারির ছোট একটা দোকান আছে বর আব্দুস সালাম সুমনের। তিনি বলেন, ‘আঞ্জুরাকে আমার পছন্দ হয়েছে। তাই বিয়ে করছি। আপনারা সকলে আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আর আমাদের মতো গরিব-অসহায়দের জন্য এত সুন্দর বিয়ের আয়োজন যারা করেছেন, তাদের অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।’

বিয়ের আয়োজনকারী মহুয়া ইসলাম বলেন, ‘আট বছর বয়সে আঞ্জুরাকে খুঁজে পাই। পরে ওর আরেক ভাইকেও আমি নিয়ে যাই। ওদের তিন ভাই-বোনের মধ্যে দুই ভাই-বোনকে আমি লালন-পালন করি। এখন আঞ্জুরার বিয়ের বয়স হয়েছে। তাকে বিয়ে দেওয়ার মতো সামর্থ নেই তার পরিবারের। তাই আলোর পথে ফরিদপুর এর পক্ষ থেকে আমি এই বিয়ের আয়োজন করেছি। বিয়ের আয়োজনে অনেকে আমাকে সহযোগিতা করেছেন।’

(ঢাকাটাইমস/২১ফেব্রুয়ারি/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
নিরাপদ স্থান ছাড়াই চার লাখ ২৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি আবারও বাস্তুচ্যুত: জাতিসংঘ
শোবিজ তারকারা ব্যাট-বল নিয়ে আবারও মাঠে নামছেন  
এপ্রিলে রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিএনপিকে জড়িয়ে সবচেয়ে বেশি অপতথ্য প্রচার
গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় ৩১ জন নিহত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা