ভৈরবে বিবদমান দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে আহত ৩০ 

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ২০:৫৬
অ- অ+

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মৌটুপী গ্রামের দুই বংশের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৩০ জন আহত হয়েছে। তাদের মধ্য আটজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপী গ্রামে সংঘর্ষ হয়।

আহতরা হলেন, মৌটুপী গ্রামের আব্দুল গণির ছেলে ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল পান্ডা (৩৫), হাসমত আলীর ছেলে কৃষকদল নেতা বুলবুল মিয়া (৩২), হারুন মৃধার ছেলে ছাত্রদল নেতা পাভেল মৃধা (৩০), আজিজুল হকের ছেলে মিলন (৬০), দেলু হোসেনের ছেলে তানিম (২০), মুকশেদ আলীর ছেলে আলী আহমদ (৭৫), ইকরাম হোসেনের ছেলে মাসকুল মিয়া (৪৫), রমিজ উদ্দিনের ছেলে আঙ্গুর মিয়া (৬০) প্রমুখ। আহত অন্যরা বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

আহতদের মধ্যে আটজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

জানা গেছে, মৌটুপি গ্রামের সরকারবাড়ির বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান এবং আওয়ামী লীগ নেতা সরকার মো. সাফায়েত উল্লাহ কর্তাবাড়ির সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এবং বিএনপি নেতা মো. তোফাজ্জল হক গ্রুপের মধ্য দীর্ঘ ৫২ বছর ধরে বিরোধ চলে আসছে। তাদের আধিপত্য বিস্তার পূর্বশত্রুতার জেরে প্রায় এক ডজন মানুষ খুন হয়েছে।

তোফাজ্জল হকের পক্ষে নাদিম কর্তা সরকারবাড়ির লোকজনের হাতে খুন হন। এই ঘটনার কয়েক দিন পর কর্তাবাড়ির লোকজনের হাতে সরকারবাড়ির পক্ষের ইকবাল খাইয়ুম নামের দুজন খুন হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের কয়েক শ বাড়িঘর ভাংচুর লুটপাট হয়েছে। দুটি খুনের ঘটনায় উভয় পক্ষের ২০০ জনকে আসামি করে পাল্টাপাল্টি মামলা হয় থানায়।

সরকারবাড়ির পক্ষের লোকজন একটি হত্যা মামলার জামিন নিয়ে বাড়িতে অবস্থান করছেন। কিন্তু কর্তাবাড়ির লোকজন দুটি হত্যা মামলার আসামি হয়ে কয়েক মাস ধরে বাড়ির বাইরে অবস্থান করেন। এরই মধ্য গত শনিবার কর্তাবাড়ির লোকজন জামিন নিয়ে বাড়িতে যান। আজ মঙ্গলবার বিকালে ফের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

কর্তাবাড়ির সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হক বলেন, ‘গত জুন মাসের পর আমাদের এলাকায় তিনটি মার্ডারের ঘটনা ঘটেছে। দুটি হত্যা মামলায় আমরা জামিন নিয়ে বাড়িতে যেতে পারেনি। পুরো রমজান মাস আমাদের লোকজন বাড়িছাড়া ছিল। এলাকার সুশীল সমাজের লোকজন একটি শান্তি কমিটি গঠন করে আমাদেরকে বাড়িতে নিয়ে যায়। সেসময় আমরা উভয় পক্ষ কোনো রকম ঝামেলা হবে না মর্মে অঙ্গীকারবদ্ধ হই। কিন্তু আজ বিকালে আওয়ামী লীগের বিনা ভোটের চেয়ারম্যান সাফায়েত উল্লাহর ছেলে নাহিদ লোকজন নিয়ে হামলা চালিয়ে আমাদের লোকদের গুরুতর আহত করেন।’

সরকারবাড়ির বর্তমান চেয়ারম্যান মো. সাফায়েত উল্লাহ বলেন, ‘কর্তাবাড়ির নাদিম মারা গেলে আমাদের গোষ্ঠীর দুই শ বাড়িঘর ভাংচুর, লুটপাট, আগুন লাগানো হয়। ৫২ বছর যাবত তোফাজ্জল হক তার বংশের লোকজন নিয়ে আমাদের অত্যাচার নির্যাতন করছে, আমার দুই ভাইকে তারা হত্যা করেছে। তারা আমাদের পক্ষের খাইয়ুম হত্যা মামলায় জামিন নিয়ে বাড়িতে এসেই আবার সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা.মেহেদি হাসান জানান, মৌটুপী গ্রামের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বিষয়ে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী জানান, ঘটনার খবর পেয়ে সেনাবাহিনীসহ পুলিশ-র‌্যাব ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।

ওসি বলেন, মৌটুপি গ্রামের দুটি বংশের ঝগড়া-বিবাদ দীর্ঘদিনের। তাদের এসব ঘটনায় একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। বর্তমানে এলাকায় যৌথ বাহিনী অবস্থান করছে বলে জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/১৫এপ্রিল/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ওষুধ ছাড়াই ঘরোয়া উপায়ে দূর করুন হজমের সমস্যা
সব দেশের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করে বাংলাদেশ: প্রেস সচিব
মে দিবস ২০২৫-এ বয়ে আনুক কর্মজীবীদের আশার আলো
৩২ বছর পর ৩১ জুলাই হতে যাচ্ছে জাকসু নির্বাচন
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা