৫০ শতাংশের বেশি নারী প্রতিনিধিত্ব চান মঈন খান

জাতীয় সংসদে ৫০ শতাংশের বেশি নারী প্রতিনিধিত্ব কেন নয় এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।
রবিবার বিকালে গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনের গ্র্যান্ড বলরুম এক জাতীয় সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই অভ্যুত্থান এবং নারীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে খান ফাউন্ডেশন।
সেমিনারে সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনা করেন অ্যাডভোকেট রোখসানা খোন্দকার। তিনি নির্বাহী পরিচালক, খান ফাউন্ডেশন এবং অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। উদ্বোধনী বক্তব্য দেন ড. আদি ওয়াকার। এছাড়া ফান্সের রাষ্ট্রদুত ম্যারি মাসদুপুইসহ বিভিন্ন দেশে কূটনৈতিকরা অংশ নেন।
মঈন খান বলেন, দেশে প্রায় ৪০ লাখ নারী শ্রমিক আছে যারা গামেন্টস ফ্যাক্টরিতে কাজ করে অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখছে। বাংলাদেশে নারী অর্থনীতি দিকে নিয়ে যাচ্ছে এটা আমি শুনতে চাই না। আমি শুনতে চাই , বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের চেয়ে বেশি নারী। জাতীয় সংসদ ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫০ জন বা ১৫১জন কেন নারী প্রতিনিধিত্ব থাকবেন না আমি এই প্রশ্ন রেখে গেলাম। অনেকই হয়তো বলবেন এটা অবান্তর, অবাস্তাব.। আমরা যদি মানুষিক অবস্থা, সমাজ ব্যবস্থা যদি পরিবর্তন করতে না পারি তাহলে কিন্তু নারীর মুক্তি, নারীর সমতার আন্দোলন এসব সেমিনার করে লাভ হবে না। আমদের অন্তর থেকে নারীর জন্য পরিবর্তন আনতে হবে।
নমিমেশন দিলে নারীরা পাশ করতে না এসব বলা হয়। কিন্তু নমিনেশন দিলে কেউ পাশ করবে কেউ ফেল করবে এটা তার জনপ্রিয়তার উপর নির্ভর করে। নারীদের নমিনেশন দিতে হবে।
তিনি বলেন, এটা গবেষণা করে সমাধান করতে পারবো বলে মনে হয় না। মূল সমস্যা হচ্ছে নারীদেরকে মেইন ষ্টিম রাজনীতি নিয়ে আসতে না পারা। আমরা যদি নারীদেরকে মেইন ষ্টিমে নিয়ে আসতে পারি তাহলে এই সমস্যা সমাধান হয়েছে যাবে।
সারবিশ্বের নারীদের ভোটের অধিকারের ইতিহাস তুলে ধরে মঈন খান বলেন, আমার তো নারীদের সংসদ সদস্য নিয়ে আলোচনা করেছি। অথচ নারীরা ভোটের অধিকার সেই দিন পেয়েছে। পশ্চিমা বিশ্বের কথা বলি মাত্র ১০০ বছর আগে নারীরা ভোটের অধিকার পেয়েছে। সুইজারল্যান্ডে অত্যান্ত আধুনিক রাষ্ট্র সেই দেশে নারীরা ভোটের অধিকার পেয়েছে ১৯৭১ সালে। যেদিন আমরা স্বাধীন হয়েছিলাম। এই হচ্ছে সারবিশ্বের পরিস্থিতি। তিনি বলেন, ২০২৬ সালে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো সচেতনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারি যত বেশি নারী সদস্যকে সুযোগ দেওয়া যায়। যদিও ৩০ শতাংশ নারীর সুযোগ কোনো রাজনৈতিক দল এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীকে বন্ধি রাখা হয়েছে। বাংলাদেশে নারীর অধিকার সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। আমিএটা বিশ্বাস করি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সোলিমা রহমান বলেন, নারী আসনে এক মাত্র সমাধান সরাসরি ভোটে সুযোগ দেয়া। আমি বলছি না ১০০টা আসন দিতে হবে। কিন্তু এর সমাধান করতেই হবে।
তিনি বলেন, কতটুকু নির্বাচন সুষ্ঠু হবে জানি না, কিন্তু নির্বাচনে আমাদের অংশ গ্রহণ করতেই হবে।
ফান্সের রাষ্ট্রদুত ম্যারি মাসদুপুই বলেন, আমি ঢাকায় যোগদানের পর অনেক অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করেছি। এই অনুষ্ঠানে দেখলাম পুরুষ এবং নারী সমান অংশ গ্রহণ আছে। এই বিষয়টি খুবই ভালো লাগলো।
নারী সংস্কার কমিশনে সুপারিশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নারী সংষ্কার কমিশনে অনেক সুপারিশ আসছে তার কোনেটাই পরবর্তিতে সামনে আনা হলো না এটা খুবই দু:খজনক।
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণ ফোরামের নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নিলুফার চৌধুরী মনি, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক উপদেষ্টা ড. মাহদি আমিন, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জেএসডির তানিয়া রব, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণ অধিকার পরিষদের নূরুল হক নূর, সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, সাংবাদিক মাসুদ কামাল, মুনজুল আলম পান্না, কাজী জেরিন, দিপ্তি চৌধুরী প্রমুখ।
(ঢাকাটাইমস/১৭আগস্ট/জেবি)

মন্তব্য করুন