লাগসই প্রযুক্তি ও শিক্ষায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থান ও স্বাবলম্বী করার পরামর্শ

বেসরকারি প্রতিবন্ধী সেবা সংস্থাগুলোকে কাজে লাগিয়ে লাগসই প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থনের সুযোগ সৃষ্টি করা যেতে পারে। প্রযুক্তিগত শিক্ষা দিয়েও তাদের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করে তোলার প্রস্তাব উঠে এসেছে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়ে আয়োজিত এক কৌশলগত আলোচনা সভায়।
প্রতিবন্ধী সেবা কেন্দ্রগুলোতে সেবার মান নিশ্চিত করতে সেখানে একজন করে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়ার পরামর্শ দেন আলোচকরা।
আজ বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুরে নগরীর কামাল কাছনায় ইএসডিও ট্রেনিং সেন্টারে রংপুরের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়ে কৌশলগত আলোচনাটি আয়োজন করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ডিজঅ্যাবল্ড ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট (বিডিডিটি)।
বিডিডিটির প্রোগ্রাম অফিসার সাবরিনা তাসনিমের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় অংশ নেন রংপুর অঞ্চলের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা। তাদের মধ্যে কেউ চাকরি খুঁজছেন, কেউ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কেউ কলেজ পড়ুয়া। অনুষ্ঠানে দেশের ৩২টি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের অবস্থা তুলে ধরেন বিডিডিটির প্রজেক্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট মবিনুর রহমান।
কৌশলগত আলোচনায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা অভিযোগ করেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়ন শুধু কাগজে কলমে, বাস্তবতা অনেক কঠিন। ফরম কেনা থেকে শুরু করে প্রতিটি পদে হয়রানির শিকার হতে হয় তাদের। সেবা পেতে উৎকোচ দিতে হয় কেন্দ্রগুলোর কর্মচারীদের।
আলোচকরা বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পাশাপাশি তাদের অভিভাবকদেরও হয়রানির মুখে পড়তে হয়। বিশেষ করে উপজেলাগুলোতে হয়রানির পরিমাণ অনেক বেশি। কেন্দ্রগুলোতে সেবা নিতে এসে অবমূল্যায়নের শিকার হন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মায়েরা।
অফিস শেষ হওয়ার অনেক আগেই কর্মস্থল ত্যাগ করেন চিকিৎসক ও প্রশিক্ষকরা- এমন অভিযোগ উঠে আসে আলোচকদের বক্তব্যে। তারা বলেন, বেশির ভাগ কেন্দ্রের চিকিৎসক ও থেরাপিস্টরা ব্যক্তিগত চেম্বারের প্রাক্টিস নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। কেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসা দেয়ার পরিবর্তে রোগীদের নিজেদের চেম্বারে যেতে পরামর্শ দেন তারা।
গ্রামাঞ্চল থেকে আসা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা অভিযোগ করেন, গ্রামাঞ্চলের মানুষজন জানেন না প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের কথা। ফলে সেবা ও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তৃণমূলের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা।
উপস্থিত প্রতিবন্ধী সংগঠকরা বলেন, গ্রাম পর্যায়ে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সেবা বাড়ানোর জন্য ভ্রাম্যমাণ সেবার বিস্তৃতি ও মান বাড়াতে হবে৷ কারণ শহরের কেন্দ্রগুলোতে প্রকৃত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এ থেকে উত্তরণে তাদের পরামর্শ হলো, প্রতিবন্ধী সেবা কেন্দ্রগুলোতে সেবার মান নিশ্চিত করতে সেখানে একজন করে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে নিয়োগ দিতে হবে। সরাসরি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা ফোকাল পারসন হিসেবে কাজ করলে সেবার মান পরিবর্তিত হবে বলে মনে করেন তারা।
কৌশলগত আলোচনায় অংশ নেন ইএসডিওর আফসানা জান্নাত, এসএসকের সুরাইয়া সারা, পিপিইউএস-এর আতাউর রহমান, এনসিডিডব্লিউর নাসিমা আক্তার, শিক্ষক নূর জাহান আক্তার শিল্পী, শিক্ষার্থী সুরাইয়া সারা প্রমুখ।
(ঢাকাটাইমস/২১আগস্ট/মোআ)

মন্তব্য করুন